
১৫ আগস্ট শোক দিবস পালন করবে আওয়ামী লীগ
পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা
- আপলোড সময় : ১৫-০৮-২০২৪ ১২:৫৪:০৮ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৫-০৮-২০২৪ ১২:৫৪:০৮ পূর্বাহ্ন


শোডাউনের চেষ্টা করলে প্রাণ নিয়ে ঘরে ফিরতে দেবে না গণ অধিকার পরিষদ
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস পালনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এ দিবসকে কেন্দ্র করে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। এজন্য দলের সভাপতি ও সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন। ধানমন্ডি ৩২-এ লোক সমাগম করতে নির্দেশনাও দিয়েছেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ যেন ১৫ আগস্ট পালন করতে না পারে, সেজন্য মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন দল ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর এমন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণায় আবার দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
১৫ আগস্ট শোক দিবস পালন করবে আ’লীগ : আজ বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯তম শাহাদাতবার্ষিকী পালনে সরকারের অনুমতি না পেলেও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে দিবসটি পালন করবে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। গত মাসের ৩১ জুলাই মাসব্যাপী জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর ৪৯তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কিন্তু গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর পরই দলের কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক মন্ত্রী, এমপি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা গা-ঢাকা দিয়েছেন। ফলে মাসব্যাপী কর্মসূচি থেকে বিরত রয়েছে দলটি। তবে মাসব্যাপী কর্মসূচি পালন না করলেও ১৫ আগস্ট যে কোনো মূল্যে পালন করবে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বরাবর ১৫ আগস্ট কর্মসূচি পালনের অনুমতি সাপেক্ষে চিঠি দিয়েছে দলটি। তবে এখন পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পক্ষ থেকে কোনো অনুমতি দেয়া হয়নি। এমনকি সদ্য পদত্যাগ করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজম শাহাবুদ্দিনকে ফোন করে ১৫ আগস্ট পালনের নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া শেখ হাসিনার সঙ্গে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোটকেট জুবায়ের আদনান অনিকের ফোন থেকে কথা বলেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির। তিনি ১৫ আগস্ট যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে দলের একাধিক শীর্ষ নেতা বলেছেন, আমাদের জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী পালনের অনুমতি না দিলেও আমরা যে কোনো উপায়ে কর্মসূচি পালন করব। এ কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয়সহ তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন। আওয়ামী লীগ ফিনিক্স পাখির মতো। সময় মতো জেগে উঠবে। আওয়ামী লীগকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। তার শাহাদাতবার্ষিকী অবশ্যই পালিত হবে। কেউ রোধ করতে পারবে না। ইতোমধ্যে দলের তৃণমূল পর্যায়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা যার যার অবস্থান থেকে ১৫ আগস্ট সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জড়ো হবেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। পরে ফাতেহা পাঠ, মোনাজাত ও মিলাদ মাহফিল হবে। একই সঙ্গে রাজধানীর বনানীর কবরস্থানে ১৫ আগস্ট শহিদদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানানো হবে। তবে দলীয় নেতাকর্মীদের যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়েও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর ৪৯তম শাহাদাতবার্ষিকী পালন করব। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, তারা যেন বিশৃঙ্খলা না করে যথাযথ মর্যাদায় ১৫ আগস্ট পালন করে। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু এখনও আমরা কোনো উত্তর পাইনি। আওয়ামী লীগ ১৫ আগস্টের কর্মসূচি পালন করবেই। সেটি যে কোনো মূল্যেই হোক না কেন। আওয়ামী লীগ ফিনিক্স পাখির মতো আবারও জেগে উঠবে। আওয়ামী লীগ একটি সংগঠিত দল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কার চায়। আমরা দেখি তারা কতটুকু সংস্কার করবে। আমাদের দল গোছানো আছে। বিভাগ, জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এবং ইউনিটে আমাদের কর্মীরা রয়েছেন। আওয়ামী লীগ হারানোর কোনো দল নয়। আওয়ামী লীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করবে। প্রথমে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। পরে বনানীর কবরস্থানে ১৫ আগস্ট শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানানো হবে। এ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাসহ তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও অংশ নেবেন। ইতোমধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশা করছি অনেক নেতাকর্মী শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করবে। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তবে এখনও অনুমতি দেয়া হয়নি। তবে অনুমতি না দিলেও যে কোনো মূল্যে ১৫ আগস্ট পালন করবে আওয়ামী লীগ।
এদিকে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজম শাহাবুদ্দিন এক ভিডিও বার্তায় বলেন, আমরা যে কোনো মূল্যে ১৫ আগস্ট পালন করবো। ১৫ আগস্ট সকালে সবাই রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবো। এতে সারাদেশের দলীয় নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি। কেউ আওয়ামী লীগকে রুখতে পারবে না। এই সরকারও পারবে না। ভবিষ্যতে এ দেশের হাল আওয়ামী লীগই ধরবে। আর ওই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। গত ৩১ জুলাই ১৫ আগস্ট উপলক্ষে আওয়ামী লীগের দেয়া কর্মসূচির মধ্যে ছিল- ১৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার সূর্য উদয়ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন ও কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে সর্বস্তরের কার্যালয়ে জাতীয় এবং দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ৬টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত ধানমন্ডি বত্রিশস্থ ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন, মাজার জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ, মোনাজাত ও মিলাদ মাহফিল। দুপুর ১২টায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। এ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, গোপালগঞ্জ জেলা ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। তবে গত মঙ্গলবার সারাদেশে ক্রিয়াশীল ৩৪টি ছাত্র সংগঠনের গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রিয়াশীল ৩৪টি ছাত্র সংগঠন। ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে এই সভা হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সভায় অংশ নেন। তবে ছাত্রলীগ ও ছাত্রসমাজের কোনো প্রতিনিধি সভায় ছিলেন না।
অন্যদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও বঙ্গবন্ধু সৈনিকদের প্রতি খোলা চিঠি দিয়েছে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন। সংগঠনটির সভাপতি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট ড. মশিউর মালেক খোলা চিঠিতে বলেন, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন দুর্নীতি, মুনাফাখোরি, করফাঁকি, মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী যে কোনো অভিযানকে স্বাগত জানাবে এবং প্রয়োজনে সহায়তা করবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সবার ঊর্ধ্বে এবং তাকে নিয়ে কোনো বিভাজন আসতে পারে না। দলের স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্য ধরে রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সভা-সমাবেশ করার আহ্বান জানাচ্ছি। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই ১৫ আগস্টের শোক দিবসে সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেন ভাব-গাম্ভীর্যের সঙ্গে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দিনটি পালন করে। এদিন বঙ্গবন্ধু প্রেমিক লাখো জনতা রাজধানীর রাজপথে এবং টুঙ্গিপাড়ায় থাকবে। সরকার যেন তাদের যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। যেন কোনো অশুভ শক্তি জনগণের মধ্যে মিশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের বদনাম করতে না পারে, সেদিকে সরকার যেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়। আমরা বঙ্গবন্ধু সৈনিকদের আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা ১৫ আগস্ট সকাল ৭টা থেকে ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে সুশৃঙ্খলভাবে সারিবদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। সতর্কভাবে সব ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করতে হবে। যারা টুঙ্গিপাড়া যাবেন তারাও যেন বঙ্গবন্ধুর সমাধির পবিত্রতা রক্ষা করেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ গণমাধ্যমকে বলেন, ১৫ আগস্টের কর্মসূচিতে সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মী-সমর্থকদের ঢাকায় আসতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যেকোনো মূল্যে এ কর্মসূচি সফল করতে শেখ হাসিনার নির্দেশনা রয়েছে বলেও জানান তিনি। শেখ হাসিনার ছেলে ও সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এক ভিডিও বার্তায় শোক দিবসের কর্মসূচিতে অংশ নিতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকেও ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে একাধিক ফেসবুকে পোস্ট দেয়া হয়েছে। তবে ১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগকে কোনো ধরনের কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হবে না জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ বলেছেন, গত ১৬ বছর ধরে মানুষের হত্যা, নির্যাতন ও গুম করেছে, যত রক্ত তাদের হাতে লেগে আছে, সেগুলোর বিচার না হওয়া পর্যন্ত এ দেশের ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগকে রাজনীতির মাঠে দেখতে চায় না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কাছে অবৈধ আগ্নেয়ান্ত্র রয়েছে। তারা সুযোগ পেলে আবারও রক্তপাত ঘটাবে, মানুষের জীবন যাবে। এ পরিস্থিতি তৈরি হতে দেবে না ছাত্র-জনতা। আন্দোলন চলাকালে তারা কীভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছুড়েছে, সেটা সবারই জানা। এরপর থানা থেকেও ওরা অস্ত্র লুট করেছে। এ অবস্থায় তাদের আবারও রাজপথে নামার সুযোগ দিলে আবারও এ দেশের মানুষের রক্ত ঝরবে, প্রাণ যাবে। আমরা সেটা হতে দিতে পারি না।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম জানিয়েছেন, নিবন্ধিত এবং বৈধ দল হিসেবে আওয়ামী লীগ অবশ্যই কর্মসূচি পালন করতে পারে। এটা তাদের অধিকার। কিন্তু আওয়ামী লীগের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে মানুষ যেভাবে ফুঁসে উঠেছে, তাতে তারা শেষ পর্যন্ত নিরাপদে কর্মসূচি পালন করতে পারবেন কি না সন্দেহ আছে। তিনি বলেন, কর্মসূচির আড়ালে আওয়ামী লীগ দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইলে তা প্রতিহত করা হবে। আমাদের নেতাকর্মীরা সব জায়গাতেই মাঠে আছেন। দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, তাদের নিরাপত্তায় কাজ করছেন। তবে ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ শোডাউনের চেষ্টা করলে প্রাণ নিয়ে ঘরে ফিরতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। গত বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
৩২ নম্বর বাড়িতে অবস্থান অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচীর: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে সকল হত্যার বিচারের দাবিতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী। গত বুধবার এক ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়ে এ অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘আছি ধানমন্ডি ৩২। হোক সকল হত্যার সকল নৈরাজ্যের বিচার। বিচার হোক বাঙালির ইতিহাস হত্যার, আছি। আমরাও বিচার চাই। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে স্মরণ করব স্বাধীনতা এবং বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস। আছি পুড়ে যাওয়া ৩২-এ। শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর তার দলের অধিকাংশ নেতাকর্মী চুপ হয়ে থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সরব রোকেয়া প্রাচী। এরই ধারাবাহিকতায় ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে মিছিল নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে উপস্থিত হওয়ারও ডাক দিয়েছেন তিনি।
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ