
ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট-এ শেখ হাসিনা
সরকার উৎখাতের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র


সেন্ট মার্টিন আর বঙ্গোপসাগর আমেরিকার হাতে ছেড়ে দিলে আমি ঠিকই ক্ষমতায় থাকতে পারতাম
জনতা ডেস্ক
প্রবল গণ আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা অবশেষে নীরবতা ভেঙেছেন।
তিনি অভিযোগ করেছেন, তাকে উৎখাতের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের মত বিদেশি শক্তির হাত আছে।
সেন্ট মার্টিন আর বঙ্গোপসাগর আমেরিকার হাতে ছেড়ে দিলে আমি ঠিকই ক্ষমতায় থাকতে পারতাম।
ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট লিখেছে, দেশে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের উদ্দেশ্যে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন শেখ হাসিনা। সেখানেই তিনি ওই অভিযোগ করেছেন। ১৫ বছর বাংলাদেশের ক্ষমতায় থাকাকালে একই ধরনের অভিযোগ বহুবার করেছেন শেখ হাসিনা। ২০২৩ সালের মে মাসে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র হয়ত তাকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এক ‘শ্বেতাঙ্গ’ ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি একটি প্রস্তাব পেয়েছেন। তাকে বলা হয়েছিল, বিমানঘাঁটি করতে দিলে তিনি সহজে ক্ষমতায় আসতে পারবেন।
সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন অগাস্টের শুরুতে সরকার পতনের আন্দোলনে পরিণত হয়। জেলায় জেলায় সহিংসতায় মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রায় তিনশ মানুষের প্রাণ যায়।
৫ অগাস্ট আন্দোলনারীদের ঢাকামুখী লংমার্চের মধ্যে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর আসে। সেদিন বিকালে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান সাংবাদিকদের বলেন, পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রথমে হেলিকপ্টর ও পরে সামরিক বিমানে চড়ে আগরতলা হয়ে সেদিন রাতেই দিল্লি পৌঁছান বাংলাদেশের টানা ১৫ বছরের প্রধানমন্ত্রী। এখনও তিনি সেখানেই আছেন।
প্রিন্ট লিখেছে, ভারত সরকারও ইতোমধ্যে বলেছে, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতের পেছনে ‘বিদেশি হাত’ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পাঠানো বার্তায় শেখ হাসিনা এ ধরনের বিদেশি শক্তির দ্বারা ‘ব্যবহৃত’ না হওয়ার জন্য নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সতর্ক করেছেন।
তিনি বলেন, লাশের মিছিল যাতে দেখতে না হয়, সেজন্য আমি পদত্যাগ করেছি। তোমাদের (শিক্ষার্থী) লাশের ওপর দিয়ে তারা ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। আমি তা হতে দিইনি।
আমি দেশে থাকলে হয়ত আরো প্রাণহানি হত, আরও অনেক সম্পদহানি হত।
প্রিন্ট লিখেছে, শেখ হাসিনা আগামী সপ্তাহে ভারতেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সমর্থকদের উদ্দেশে পাঠানো বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, হয়ত তাকে হার মেনে নিতে হয়েছে, কিন্তু তিনি অচিরেই দেশে ফিরবেন।
আমি শিগগিরই ফিরব ইনশাআল্লাহ। পরাজয় আমার হয়েছে, কিন্তু জয়ী হয়েছে বাংলাদেশের মানুষ।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। আপনাদের বিজয়ে আমি (ক্ষমতায়) এসেছিলাম, আপনারা ছিলেন আমার শক্তি। আপনারা যখন আমাকে চাননি, আমি তখন নিজে থেকে সরে গেছি, পদত্যাগ করেছি।
আমার যারা কর্মী দেশে আছেন, তারা কেউ মনোবল হারাবেন না। আওয়ামী লীগ বারবার উঠে দাঁড়িয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে শেখ হাসিনার যে বক্তব্য ক্ষোভ বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল, সেই বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হয়েছে বলে আবারও অভিযোগ করেছেন শেখ হাসিনা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমার তরুণ ছাত্রদের আমি আবারও বলতে চাই, তোমাদের আমি কখনোই রাজাকার বলিনি। আমার কথা বিকৃত করা হয়েছে। তোমাদের বিপদে ফেলে একটি চক্র ফায়দা নিয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ