
খাদ্যে ভেজাল রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিন


রেজাউল করিম
স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য পাওয়া এখন দুষ্কর হয়ে পড়েছে। ভেজাল খাবারে ছেয়ে গেছে দেশ। সারা দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের ভেজাল ও মানহীন খাদ্যপণ্য উৎপাদন, মজুত ও বিক্রি করছে। খাদ্যপণ্যের স্বাদ বাড়ানোর লক্ষ্যে কিংবা পচন রোধ করতে অথবা খাদ্যপণ্যটিকে আকর্ষণীয় করার উদ্দেশ্যে মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ। শিশুখাদ্য থেকে শুরু করে সব ধরনের খাদ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিপণনের ক্ষেত্রে ভয়াবহ বিষের ব্যবহার চলছে। খাদ্যে ভেজাল নিয়ে কয়েক বছর ধরে ব্যাপক আলোচনা চলছে। ভেজালবিরোধী অভিযানও পরিচালিত হচ্ছে কিছুদিন পরপর। খাবারের মান নির্ণয় করতে রেস্তোরাঁগুলোর জন্য গ্রেডিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু সবকিছুর পরও দূষিত ও ভেজাল দেয়ার বিষয়টি যেন নির্ভেজালই থেকে গেছে। বর্তমান অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করাটাই এখন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। নিত্যপ্রয়োজনীয় সিংহভাগ পণ্যই ভেজাল বা বিষক্রিয়ার বাইরে নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাদ্যে ভেজাল, নিম্নমানের খাবার, অনিরাপদ পানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যে ভেজালের কারণে মানবস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। বলা বাহুল্য, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য পাওয়া মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। বিশেষত পশ্চিমা দেশগুলোয় স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যের বিষয়টিতে বিশেষ জোর দেয়া হয়। ভেজাল খাদ্যের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে তারা। অথচ আমাদের দেশে ভেজাল খাদ্যের ব্যবসা এক অতি সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে হাতের কাছে পাওয়া অনেক খাদ্যপণ্যেই রয়েছে তাৎক্ষণিক বা দীর্ঘমেয়াদি অসুখ এবং মৃত্যুর হাতছানি। দেশে নিরাপদ খাদ্য আইন রয়েছে, কিন্তু আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি দেখার জন্য নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, বিএসটিআইসহ অনেক সংস্থা রয়েছে, কিন্তু তাদের নজরদারি বা নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। আমরা আশা করি, সরকার এ ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নেবে এবং আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ নিশ্চিত করবে। এ ভেজাল ও মানহীন খাদ্যের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য অস্বাস্থ্যকর ভেজাল খাদ্যের অসাধু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের কোনো বিকল্প নেই। দেশের প্রত্যেকটা মানুষ নিরাপদ খাদ্য খেয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক সেটাই হোক আমাদের প্রত্যাশা।
লোভী মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের অশুভ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখতে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের আইনের আওত্তায় আনতে হবে, ঠিক যেমনটি করেছে সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া।
লেখক : কলামিস্ট
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ