সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
যন্ত্রপাতি কেনার নামে সরকারি অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকসহ ৮ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে অভিযুক্তদের মধ্যে এক নম্বর আসামি ডা. শেখ শাহজাহান আলী ইতোমধ্যে মারা গেছেন। আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের সময় বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।
দুদক সূত্র জানায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জন্য সফটওয়্যারসহ সংশ্লিষ্ট মেশিনারিজ ক্রয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়। পরে এসব যন্ত্রপাতি কেনার জন্য দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দুটিকে রেসপনসিভ এবং একটি প্রতিষ্ঠানকে নন-রেসপনসিভ হিসেবে বিবেচনায় নেয়। কাগজে-কলমে তিনটি প্রতিষ্ঠান দেখা গেলেও বাস্তবে তিনটি প্রতিষ্ঠানের মালিক একজন। যিনি বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিকেল কোম্পানির স্বত্বাধিকারী জাহের উদ্দিন সরকার। দরপত্রের জন্য বিবেচিত হওয়ার পর জাহের উদ্দিন সরকারসহ অন্যান্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে মেশিনারিজ সরবরাহ না করেই ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে সরবরাহ দেখিয়ে ৬ কোটি ৬ লাখ ৯৯ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। এ অভিযোগে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর হাসপাতালটির সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ শাহজাহান আলীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের উপ-পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ তদন্তে এ দুর্নীতির সঙ্গে হাসপাতালটির আরও তিন চিকিৎসকের সংশ্লিষ্টতা পান দুদকের সহকারী পরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাকিবুল হায়াত। অভিযোগপত্রেও ৬ কোটি ৬ লাখ ৯৯ টাকার দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কমিশনের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করলে গত মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুর্নীতি দমন কমিশন আট জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন দেয়।
অভিযুক্ত আট আসামির মধ্যে প্রধান আসামি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ শাহজাহান আলী তদন্ত চলাকালে সম্প্রতি মারা যান। অন্য সাত আসামি হচ্ছেন, মেসার্স মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মো. আবদুস সাত্তার সরকার, মো. আহসান হাবিব সরকার, বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. জাহের উদ্দিন সরকার, ইউনিভার্সেল ট্রেড করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী মো. আসাদুর রহমান, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল কুদ্দুস, ইএনটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নারায়ণ প্রসাদ সান্যাল ও শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শামছুর রহমান।
অভিযোগপত্র অনুমোদন সম্পর্কে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হায়াত বলেন, অভিযোগপত্র অনুমোদনের বিষয়ে তিনি এখনও কোনও চিঠি পাননি। চিঠি পেলে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
