ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে সেল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ইউজিসির বিপুল আমদানিতেও ভোজ্যতেলের বাজার অস্থিতিশীল চিন্ময় দাসের জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল মুক্তিযোদ্ধা তথ্যভাণ্ডার তৈরিতে অনিয়ম এ সরকারও কুমিল্লা থেকে খুনের ইতিহাস শুরু করেছে-শামসুজ্জামান দুদু যুব সমাজ দেশে জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা পাচ্ছে না-জিএম কাদের ট্রাম্পের শুল্কনীতির অস্থিরতায় বিশ্ব অর্থনীতির ঝুঁকি বাড়ছে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন বাড়ছে পাচার অর্থ ফেরাতে কানাডার সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা ২৩৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয় কমিটিতে ১২ প্রস্তাব অনুমোদন প্রশাসন ক্যাডারের তরুণদের হতাশা-ক্ষোভ গুচ্ছে থাকছে ২০ বিশ্ববিদ্যালয় ৯ বছরেও ফেরেনি রিজার্ভ চুরির অর্থ কারাগার থেকে ফেসবুক চালানো সম্ভব নয় ৮ ফেব্রুয়ারি ছয় সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ-আসিফ নজরুল এক সপ্তাহ পর ক্লাসে ফিরলেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটায় উত্তাল জাবি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থা সমর্থন করছি না-মান্না চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ৪৬ নেতাকর্মী গ্রেফতার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপের আখেরি মোনাজাত আজ

নবাবী ভোজ ও সুলতান’স ডাইনসহ একাধিক রেস্তোরাঁ সিলগালা

  • আপলোড সময় : ০৬-০৩-২০২৪ ১০:৪৮:০৩ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৬-০৩-২০২৪ ১০:৪৮:০৩ পূর্বাহ্ন
নবাবী ভোজ ও সুলতান’স ডাইনসহ একাধিক রেস্তোরাঁ সিলগালা নবাবী ভোজ ও সুলতান’স ডাইনস
রাজধানীর বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে ৪৭ জনের মৃত্যুর পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অনুমোদনহীন ও নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। অভিযানে নবাবী ভোজ ও সুলতান’স ডাইন নামের দুটি রেস্তোরাঁসহ একাধিক রেস্তোরাঁ সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে অভিযান শুরু করেন রাজউকের কর্মকর্তারা। অভিযানের খবর পেয়ে নবাবী ভোজের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রেস্তোরাঁ বন্ধ করে সরে পড়েন। পরে রাজউকের অভিযান পরিচালনাকারী দলের সদস্যরা রেস্তোরাঁটি সিলগালা করে দেন। সুলতান’স ডাইনের বিষয়ে রাজউকের কর্মকর্তারা জানান, রেস্তোরাঁটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তবে তারা দাবি করেছেন, তাদের সব কাগজপত্র আছে। তাই আপাতত রেস্তোরাঁটি সিলগালা করা হয়েছে। কাগজপত্র দেখাতে পারলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনির হোসেন হাওলাদার জানান, নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অভিযানে এসেছেন তারা। রেস্তোরাঁগুলোয় আগুন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আছে কি না তা দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, রেস্তোরাঁয় আগুন জ্বালিয়ে খাবার রান্না করা হয়, গ্যাসের ব্যবহার হয়। সেজন্য আগুন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আছে কি না দেখছি। পাশাপাশি অন্যান্য নিয়ম মানা হচ্ছে কি না সেটিও দেখা হচ্ছে। নবাবী ভোজ রেস্তোরাঁ আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে করা হয়েছে। এজন্য সিলগালা করে দিয়েছি।
এদিকে অভিযানে বেইলি রোডের ক্যাপটাল সিরাজ সেন্টার নামের একটি ভবনের অগ্নিসুরক্ষার ছাড়পত্র হালনাগাদ না করায় দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার ভবনটির পরিচালক সারফুদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সবকিছু ঠিক আছে। শুধু ফায়ারের ছাড়পত্র এখনো পাইনি।
রাজধানীর অনিরাপদ ভবন নিয়ে রাজউকের ঘুম কবে ভাঙবে জানতে চাইলে রাজউকের অঞ্চল-৭-এর পরিচালক মনির হোসেন হাওলাদার বলেন, রাজউক ঘুমিয়ে নেই। এর আগেও রাজউক নিয়মিত অভিযান চালিয়েছে। হয়তো সেটা গণমাধ্যমের চোখে পড়েনি। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। আগুনের ঝুঁকি ও অনুমোদন না থাকার পরও ভবনটিতে আটটি রেস্তোরাঁ চলছিল বছরের পর বছর ধরে। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে সেখানে খেতে ভিড় করেছিলেন নগরের বাসিন্দারা। এই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে রাজউক। ভবনের নকশা ও অনুমোদনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার বিরুদ্ধে অভিযানে নামে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি।
অপর একটি সূত্র জানায়, রাজধানীতে অভিযানের ভয়ে ধস নেমেছে রেস্তোরাঁ ব্যবসায়। অধিকাংশ মালিক বন্ধ রেখেছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। নিরাপত্তার কারণেও কমেছে ক্রেতার আনাগোনা। রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির দাবি, সব লাইসেন্স ঠিক থাকার পরও হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা।
ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডের এক ভবনেই রয়েছে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও হাফ ডজন রেস্টুরেন্ট। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে, রাজধানীসহ সারাদেশে গড়ে উঠছে ঝুঁকিপূর্ণ এমন হাজারো ভবন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা, জরুরি বহির্গমনের মতো বিষয়গুলো।
সম্প্রতি, বেইলি রোড ট্রাজেডির পর ঝকঝকে তকতকে এসব রেস্টুরেন্টের নিরাপত্তা কতটা ভঙ্গুর তা আবারো সামনে এসেছে। এই ঘটনার পরই সাড়াশিঁ অভিযানে নামে প্রশাসন। যা নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী জানান, আতঙ্কের মধ্যে ব্যবসায় করছেন তারা। প্রশাসন কী কারণে এরকম করছে, তাও বুঝতে পারছেন না। গত কয়েকদিন আগে যে রেস্টরেন্টেু বিক্রি হতো এক থেকে দুই লাখ টাকা, সেটি কমে এখন দিনে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সব কাগজ-পত্র থাকার পরও, গ্রেপ্তার ও জরিমানার ভয়ে এখন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলতে পারছেন না তারা।
রেস্তোরাঁর অনুমোদনের ক্ষেত্রে অগ্নি নির্বাপনসহ নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের কথা বলেছেন স্থপতি মুস্তাফা খালিদ পলাশ। তিনি বলেন, বিপজ্জনক ক্যাটগরিতে ভাগ করে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান করতে হবে। যেমন-ক্যামিকেল, গোডাউন আলাদা আলাদা করতে হবে। এতে ঝুঁকি কমবে।
প্রসঙ্গত, সারাদেশে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির অধীনে নিবন্ধিত রেস্তোরাঁ, রেস্টুরেন্ট আছে সাড়ে চার হাজারের মতো। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে বেইলি রোডে আগুনের ঘটনার পর অবৈধভাবে পরিচালিত বাণিজ্যিক ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু করে প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার রেস্তোরাঁয় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন আছে কিনা, জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি রয়েছে কিনা, নিরাপদ স্থানে রেখে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা, এ ছাড়াও অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র এবং ঝুঁকির বিষয়টি নজরদারি করা হয়। পুলিশের অভিযান চলাকালে আটক করা হয় বিভিন্ন রেস্তোরাঁর বেশ কয়েকজনকে। তাদের মধ্যে কয়েকটি রেস্তোরাঁর ম্যানেজার রয়েছেন।

 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স