বিসিএসসহ বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় বিতর্কের মুখে পড়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এরইমধ্যে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির দু’জন উপ-পরিচালকসহ বেশ কয়েকজন সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন পিএসসি চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী। প্রশ্নফাঁসের ঘটনা সামনে আসার পর থেকে আলোচনায় আসে তার অঢেল সম্পদ, উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়। আবেদ আলীর বিরুদ্ধে বহু বেআইনি কর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তিনি অভ্যাসগতভাবে অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষাসহ গত ১২ বছরে ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে করা মামলায় সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ সাতজন দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার পৃথক সাত জন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাদের জবানবন্দি রেকর্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার গ্রেফতারকৃত ১৭ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরমধ্যে পিএসসি চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবনসহ সাত আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়েছে, গ্রেফতারকৃত আসামিরা গত ৫ জুলাই বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃক আয়োজিত পরীক্ষার নাম- বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (বাংলাদেশ রেলওয়ে), পদের নাম- সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (নন-ক্যাডার)-এর নিয়োগ পরীক্ষার জন্য পরীক্ষা অনুষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের পূর্বে পরীক্ষার হুবহু প্রশ্নপত্র ফাঁস করে একদল সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (নন ক্যাডার) পদে নিয়োগ প্রার্থী পরীক্ষার্থীর নিকট অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন এবং প্রশ্নের উত্তর বিতরণ করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র হিসেবে বিগত বছরগুলোর বিভিন্ন সময়ে বিসিএসসহ পিএসসির বিভিন্ন গ্রেডের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র অর্থের বিনিময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের পূর্বে পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছে।
এদিকে জবানবন্দি দিতে সম্মত ছাড়া অপর ১০ আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। পরে ১০ আসামির জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবীরা। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হকের আদালত ১০ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। দায় স্বীকার করা অপর আসামিরা হলেন- অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান, অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম, ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও সায়েম হোসেন এবং বেকার যুবক লিটন সরকার। কারাগারে যাওয়া অপর আসামিরা হলেন- পিএসসির উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, সাবেক সেনা সদস্য নোমান সিদ্দিকী, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান। এর আগে গত সোমবার রাতে রাজধানীর পল্টন থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন আইনে সিআইডির উপ-পরিদর্শক নিপ্পন চন্দ্র চন্দ বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০/৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারনামীয় আসামির মধ্যে সাবেক সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়, শরীফুল ইসলাম ভুইয়া, দীপক বনিক, মো. খোরশেদ আলম খোকন, কাজী মো. সুমন, একে এম গোলাম পারভেজ, মেহেদী হাসান খান, মো. গোলাম হামিদুর রহমান, মুহা. মিজানুর রহমান, আতিকুল ইসলাম, এ টি এম মোস্তফা, মাহফুজ কালু, আসলাম ও কৌশিক দেবনাথ পলাতক রয়েছে।
পিএসসি সূত্র বলছে, সৈয়দ আবেদ আলী মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পশ্চিম বোতলা গ্রামের মৃত আবদুর রহমান মীরের ছেলে। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পিএসসিতে গাড়িচালক হিসেবে যোগ দেন। ২০১৪ সালের এপ্রিলে ‘সহকারী মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার’ পদে লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। সে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। সে সময় আবেদ আলীর বিরুদ্ধে তদন্ত করে পিএসসি। তদন্ত শেষে তাকে চাকরিচ্যুত করার সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেয় কমিটি। সেই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘সহকারী মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার’ পদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালে ২২ এপ্রিল। ওই পরীক্ষায় একজন পরীক্ষার্থীকে উত্তরসহ প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেন। তখন হাতেনাতে ধরা হয় তাকে। প্রতিবেদনে বলা হয়, তদন্তে সৈয়দ আবেদ আলীর বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসসহ বিভিন্ন অনিয়মে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ মিলেছে। অপরাধ বিবেচনায় তাকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হতে পারে। পাশাপাশি আবেদ আলীর বিরুদ্ধে বহু বেআইনি কর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত কমিটি মনে করছে, তিনি অভ্যাসগতভাবে অপকর্মে জড়িত। সৈয়দ আবেদ আলী চাকরিতে যোগদানের সময়ও প্রতারণার আশ্রয় নেন। তিনি নিজের স্থায়ী ঠিকানা গোপন করে ভিন্ন ঠিকানা ব্যবহার করেন। স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে তিনি চাকরির যোগদানপত্রে উল্লেখ করেন, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের শ্রীফলতলা গ্রাম। তার বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর তদন্তে নেমে এ প্রতারণা ধরেন কমিটির সদস্যরা। তার বিরুদ্ধে হওয়া বিভাগীয় মামলার অভিযোগনামা ও বিবরণী স্থায়ী ঠিকানায় পাঠানো হয়। তবে তা ফেরৎ আসে। সাময়িক বরখাস্তের আদেশটিও ফেরৎ আসে। সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন থেকে পিএসসিকে জানানো হয়, আবেদ আলীর দেয়া ঠিকানা সঠিক নয়। এ নামে তার বংশের কেউ সিরাজগঞ্জে নেই। অর্থাৎ সৈয়দ আবেদ আলী চাকরি নেয়ার সময় ভুয়া স্থায়ী ঠিকানা ব্যবহার করেন। এ ঘটনায়ও তার বিরুদ্ধে আরেকটি বিভাগীয় মামলা হয়। তবে এক মামলায় তিনি স্থায়ী বরখাস্ত হওয়ায় পরের মামলাটির তদন্ত আর এগোয়নি।
আবেদ আলী ১৯৯৭ সালে চাকরিতে যোগ দিলেও শুরুতেই তিনি পিএসসি চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন না। ২০১২ সালের শেষদিকে তিনি চেয়ারম্যানের গাড়িচালক হিসেবে দায়িত্ব পান। সে সময় পিএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী। এরপর ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর পিএসসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত সচিব ও সাবেক ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ইকরাম আহমেদ। তিনি ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন। তার সময়েই চাকরি থেকে বরখাস্ত হন গাড়িচালক আবেদ আলী। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ বলেন, ‘আবেদ আলী আমার গাড়িচালক ছিলেন না। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এ নিয়ে মন্তব্য করতে পারবো না।’ জানতে চাইলে পিএসসির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, তার (আবেদ আলী) ব্যাপারে আমি বলতে পারবো না। তিনি তো অপকর্মে জড়ানোয় অনেক আগেই বরখাস্ত হয়েছেন। কার মেয়াদকালে আবেদ আলী চেয়ারম্যানের গাড়িচালক হয়েছিলেন, সেটাও আমার জানা নেই।
রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে গত ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল, তদন্তে এমন প্রমাণ পেলেই নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন। তিনি বলেন, ‘১২ বছর ধরে প্রশ্নফাঁস হয়েছে, সেই অভিযোগ এখন প্রমাণ করা সম্ভব নয়। তবে গত ৫ জুলাই রেলওয়ের যে পরীক্ষা হয়েছে, তার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হলেই সঙ্গে সঙ্গে আমরা পরীক্ষা বাতিল করবো। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ-সংশয় নেই। গতকাল দুপুরে পিএসসি ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন থেকে কেন্দ্রে পৌঁছানোর প্রক্রিয়াও তুলে ধরেন তিনি।
এক যুগ ধরে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। আগের পরীক্ষাগুলোর বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘এটা কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত হবে। এককভাবে আমি এটা নিয়ে বলতে পারি না। দেখুন ১২ বছর মানে তিনজন চেয়ারম্যানের মেয়াদকাল। সে সময়ের পরীক্ষায় কী হয়েছে, তা নিয়ে কমিশন সভা সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তাছাড়া আগের পরীক্ষাগুলো বাতিল করাটা আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে কিনা, সেটাও আইন-কানুনের বিষয় রয়েছে। হুট করে এটা নিয়ে বলাটা কঠিন।
আমাদের মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, আবেদ আলী নিজ এলাকায় সরকারি জমি দখল করে ডেইরি ফার্ম করছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রশাসন ওই জমিতে ডেইরি ফার্ম নির্মাণের কাজ বন্ধ করে স্থাপনা সরিয়ে নিতে বললেও তা শোনেননি তিনি। মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার কমলাপুর বাজারসংলগ্ন এলাকায় গিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সৈয়দ আবেদ আলী ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে কয়েক বছর আগে এলাকায় এসে মসজিদ নির্মাণসহ এলাকার বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানে অনুদান প্রদান শুরু করেন। এ কাজ করে তিনি বেশ পরিচিতি অর্জন করেন। এরপর এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে একটি ডেইরি ফার্ম করতে ডাসার ইউনিয়নের কমলাপুর বাজারসংলগ্ন বড় ব্রিজের কাছে সরকারি খালসহ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের জমি দখল করেন। ওই জমিতে তিনি শতাধিক গরু পালন করা যায় এমন একটি স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেন। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি টের পেলে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। এরপর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারি জমির ওপর নির্মিত স্থাপনা সরিয়ে নিতে বললেও আবেদ আলী তা সরিয়ে নেননি। বর্তমানে নির্মাণাধীন ওই স্থাপনাগুলো পতিত অবস্থায় রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান খান বলেন, আবেদ আলী মাদারীপুরে তেমন কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে না তুললেও কমলাপুর বাজার সংলগ্ন একটি সরকারি জমিতে ডেইরি ফার্ম নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। তবে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বর্তমানে ওই ডেইরি ফার্মের কাজ বন্ধ রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ আফরোজ বলেন, আমরা খবর পাই আবেদ আলী নামে একজন কমলাপুর বাজার সংলগ্ন এলাকায় একটি গরুর খামার এবং একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের জন্য স্থাপনা তৈরি করেছেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জায়গাটি মূলত সড়ক ও জনপথ বিভাগের। তাৎক্ষণিক আমরা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেই। আবেদ আলীকে আমরা জানিয়েছি তিনি যেন তার এই অবৈধ প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেন। তিনি সরিয়ে না নিলে সড়ক ও জনপথ বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়েছে, তারা সরিয়ে নেবেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে গ্রামের বাড়িতে এসে আবেদ আলী পশ্চিম বোতলা বাজারের পাশে তিন তলা বিশিষ্ট একটি বাগান বাড়ি তৈরি করেন। বাগান বাড়ির সামনে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নিজের নামে তৈরি করেন সৈয়দ আবেদ আলী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও সৈয়দ আবেদ আলী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ। বাজার থেকে মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠ পার হয়ে তার বাড়িতে প্রবেশ করতে হয়। বাড়িতে প্রবেশের সময় যে কারও মনে হবে পুরোনো দিনের কোনো জমিদারের বাড়ি এটা। গত কোরবানি ঈদে তিনি তিনটি গরু ও দুটি খাসি কোরবানি করেছেন। কোরবানির সম্পূর্ণ মাংস তিনি এলাকার গরিব মানুষদের মধ্যে বিতরণ করে দেন। অথচ ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য মতে-১৯৮৮ সালের পর থেকে পরবর্তী ৫ বছর স্থানীয় ইউনিয়নের ত্রাণ সহযোগিতার চাল ও গম নিয়ে চলতো আবেদ আলীর বাবা আব্দুর রহমানের সংসার। এরপর আবেদ আলীর বাবা মারা গেলে আবেদ আলী ঢাকায় চলে যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পশ্চিম বোতলা গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, মসজিদ ও ঈদগাহ সম্পূর্ণ নিজের টাকায় তৈরি করেছেন আবেদ আলী। গ্রামের মানুষের কোনো সহযোগিতা তিনি নেননি। মসজিদের ইমাম ও খাদেমের বেতনও তিনি একাই দেন। মক্তবে পড়ানোর বিনিময়ে এলাকার মানুষ ইমামকে শুধু খাবারের টাকা দেন। সৈয়দ আবেদ আলী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মুজিবুর রহমান বলেন, আবেদ আলীকে ছবিতে যেমন পরহেজগার মানুষ মনে হয়, আমি তাকে তেমন একজন পরহেজগার মানুষ হিসেবেই দেখেছি এতদিন। আমাকে তিনি ১০ হাজার ও খাদেমকে ৩ হাজার টাকা বেতন দেন। মূলত উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কারণেই তিনি রোষানলে পড়েছেন বলে আমি মনে করি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
![](https://dainikjanata.net/public/ads/65fd544197946.png)
* আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন ৭ জন * প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পেলে রেলওয়ের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল: পিএসসি চেয়ারম্যান * প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় বিতর্কের মুখে পড়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)
১২ বছর যাবৎ পিএসসির প্রশ্নফাঁসে জড়িত চক্রের প্রধান আবেদ আলী
![১২ বছর যাবৎ পিএসসির প্রশ্নফাঁসে জড়িত চক্রের প্রধান আবেদ আলী ১২ বছর যাবৎ পিএসসির প্রশ্নফাঁসে জড়িত চক্রের প্রধান আবেদ আলী](https://dainikjanata.net/public/postimages/668d618fa1091.png)
![](https://dainikjanata.net/public/ads/65fd544197946.png)
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ