পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমরা ভারতের ওপর দিয়ে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। চুক্তির আওতায় ভারতীয় সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনবে বাংলাদেশ। একই বিষয়ে ভুটানের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা চলছে। এই অঞ্চলের মানুষের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির স্বার্থেই যোগাযোগ ব্যবস্থা আমরা আরও বাড়াতে চাই, নেপাল ও ভুটানকেও যুক্ত করতে চাই। কিন্তু এটি নিয়ে বিভ্রান্তি চড়াচ্ছে বিএনপি। গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭৫ বছর উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ এই সেমিনারের আয়োজন করেছে। বাংলাদেশের সমস্ত অর্জন আওয়ামী লীগের হাত দিয়েই অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে দলের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ৭৫ বছরের কন্টকাকীর্ণ পথচলায় আওয়ামী লীগ সবসময় অগণতান্ত্রিক ও অপশক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের চক্ষুশূল হয়েছে। পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খান মার্শাল ল জারির পর বঙ্গবন্ধুসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন। স্বাধীনতার পরও জিয়াউর রহমান ও এরশাদ আওয়ামী লীগের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছেন। ২০০৭ সালেও ভিন্ন খোলসে প্রকৃতপক্ষে সামরিক শাসন চলেছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ২০০৭ সালে সমাজে বুদ্ধিজীবী পরিচয় দেওয়া কিছু ব্যক্তিকে ভাড়া করে সামনে দিয়ে প্রকৃতপক্ষে সামরিক শাসনই চালু করা হয়েছিল। সে সময় দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ বিএনপির দুর্নীতি আর দুঃশাসনের অভিযোগ তুলে যেই শাসক এসেছিল, তাদের তো প্রথমে খালেদা জিয়াকেই গ্রেপ্তার করার কথা ছিল। কিন্তু তারা সেটি না করে প্রথমে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করেছিল। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু, জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সবসময় অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী শক্তির চক্ষুশূল ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে বিএনপির বিভিন্ন মন্তব্যের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কিছু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। আর কিছু নবায়ন করা হয়েছে, কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি। সমস্ত সমঝোতা স্মারক দেশের স্বার্থেই করা হয়েছে। অথচ বিএনপি নেতারা গলা ফাটিয়ে বলে যাচ্ছেন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব নাকি ঢাকা কলেজে পড়াতেন, বিএনপির আরও কিছু নেতাসহ ড. মঈন খানও শিক্ষিত। চুক্তি আর সমঝোতা স্মারকের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে না পারা বিএনপির শিক্ষিত নেতারা কেন অশিক্ষিতের মতো কথা বলছেন, সেটি আমার বোধগম্য নয়। ড. হাছান বলেন, আসলে যাদের নেত্রী বলেছিলেন সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে বাংলাদেশ যুক্ত হলে দেশের সমস্ত সিক্রেসি আউট হয়ে যাবে, তারা কানেক্টিভিটির মর্ম বোঝার কথা নয়। যেমন নেত্রী তেমন তার সভাসদ, সেজন্যই তারা এসব আবোল-তাবোল কথা বলছেন, আর বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। কোন কোন পীর সাহেবও দেখছি লাফাচ্ছেন। অথচ গাজায় যেভাবে মানুষ হত্যা করা হয়েছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে, প্রায় ৩৮ হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মিছিল নিয়ে লাফাতে দেখি না তাদের। বিএনপি-জামায়াতও এ নিয়ে একটি শব্দ বলেনি। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যাপক মো. মঈনুদ্দীন, আবুল কালাম আজাদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ পালিত প্রমুখ।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

আমরা ভারতের ওপর দিয়ে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করছি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- আপলোড সময় : ৩০-০৬-২০২৪ ০৪:২০:১৭ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ৩০-০৬-২০২৪ ০৪:২০:১৭ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ