ঢাকা , রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
বরযাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নারী নিহত, আহত ৪০ নিয়ম ভেঙে আগের রূপে গোলাপি বাস বিদেশ থেকে টনকে টন চাল আসলেও প্রভাব নেই দামে জুলাই চার্টারের ওপর নির্ভর করবে আগামী নির্বাচন- প্রেস সচিব শিগগিরই সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক-আলী রিয়াজ সরকারের দ্বিতীয় পর্বেও সংঘাতের আশঙ্কা ড. ইউনূসের শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে- প্রধান উপদেষ্টা রাজধানীতে ফের বেপরোয়া কিশোর গ্যাং পূর্ণমাত্রায় বিদ্যুৎ সরবরাহে সম্মত হলেও মূল্যছাড় দেবে না আদানি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সম্মেলনে শুরু প্রাধান্য পাচ্ছে যে বিষয়গুলো অপারেশন ডেভিল হান্টে ষষ্ঠ দিনে গ্রেফতার ৫০৯ বিপুলসংখ্যক কারখানা বন্ধে দিশেহারা হাজার হাজার শ্রমিক পোশাক রপ্তানির বিপুল টাকা বিদেশেই থেকে যাচ্ছে আশুলিয়ায় ১২শ’ পিস ইয়াবা উদ্ধার আটক ৩ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড রামগঞ্জে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা সরিষার বাম্পার ফলন কৃষক খুশি গাজি কালুর জীবন ও দর্শন নিয়ে শোকমেলা অনুষ্ঠিত গাজীপুরে চার সাংবাদিকের ওপর হামলা, আটক এক চোরাকারবারি ও চাঁদাবাজদের গ্রেফতারে নেই অভিযান

ধানের দাম বেশি ও ঈদের ছুটির অজুহাতে চড়া চালের বাজার

  • আপলোড সময় : ২৯-০৬-২০২৪ ০৮:০১:০০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৯-০৬-২০২৪ ০৮:০১:০০ অপরাহ্ন
ধানের দাম বেশি ও ঈদের ছুটির অজুহাতে চড়া চালের বাজার
ধানের দাম বেশি ও ঈদুল আজহায় মিল বন্ধ- এ দুই অজুহাতে চালের দাম বস্তায় ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন বিক্রেতারাবাজার স্থিতিশীল রাখতে মিলমালিকদের ওপর নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ তাদেরজানা গেছে, খুচরা বাজারে জাত ও মানভেদে প্রতি কেজি দেশি বাসমতি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছেনাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৭৮ টাকা, মাঝারি মানের বিআর ২৮ ও ২৯ চাল ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা এবং মোটা স্বর্ণা ৫৪ টাকা এবং মোটা হাইব্রিড ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছেঈদুল আজহার আগে এসব চালের দাম কেজিতে মানভেদে এক থেকে দুই টাকা পর্যন্ত কম ছিলপাইকারি বাজারে বর্তমানে চিকন চালের মধ্যে প্রতি কেজি মিনিকেট মানভেদে ৫৯ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছেনাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৭৪ টাকায়আর দেশি বাসমতি চালের কেজি ৮০ থেকে ৮৪ টাকামাঝারি মানের প্রতি কেজি বিআর ২৮ চাল ৫১ থেকে ৫৩ টাকা, বিআর ২৯ চাল ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, পাইজাম ৫৪ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছেমোটা চালের মধ্যে প্রতি কেজি গুটি স্বর্ণা মানভেদে ৪৯ থেকে ৫১ টাকায় বিক্রি হচ্ছেহাইব্রিড মোটা চালের কেজিতে ৪৬ টাকাঈদের আগে এসব চালের কেজি এক থেকে দুই টাকা কম ছিলপুরান ঢাকার বাবুবাজার চালের আড়তে চাল কিনতে আসা বেসরকারি কর্মকর্তা পলাশ সাহা বলেন, প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে জীবনযাপন করতে খুব কষ্ট হচ্ছেএকটি পণ্য কিনলে আরেকটি কেনার বাজেট থাকছে নাঈদের ছুটি কাটিয়ে আসার পর একটু কম দামে চাল কেনার আশায় বাবুবাজার পাইকারি বাজারে এলামকিন্তু এসে দেখি বস্তায় ৫০ টাকা করে বেড়েছেশেষ পর্যন্ত চালের দামও বাড়তে শুরু করেছেআমরা নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ কোথায় যাব? নারিজশাইলের ৫০ কেজির বস্তা কেনেন পলাশতবে বস্তায় জাত বা মিলগেট দাম লেখা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার শুধু মুখেই বলে, বাস্তবায়ন করে নাদাম-জাত লেখা থাকলে আমরা যারা সাধারণ ক্রেতা, তারা একটু স্বস্তিতে থাকতে পারিসরকারকে এসব বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে হবেবাজারে বাজারে না ঘুরে মিলগেটে যেতে হবে, যেখানে চাল উৎপাদন হয়, সেখানে যেতে হবেবাবুবাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতা মেসার্স রশিদ রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী আবদুর রশিদ জানান, চালের বাজার গত এক দেড় মাস ধরে স্থিতিশীল ছিলকারণ এ বছর ফলন ভালো হয়েছেবাজারে সরবরাহও ভালো ছিলঈদের পর হঠাৎ চালের দাম বস্তায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছেন কিছু মিলমালিকএতে বাজারে চালের সরবরাহ কিছুটা স্থবিরতিনি জানান, বাজারে এখন আমদানিকৃত চাল নেইকারণ, এখন এলসির চালের থেকে দেশি চালের দাম কমসব মিলিয়ে কিছু মিলমালিক সুবিধা নিতে চাইছেনঈদভাঙা বাজার পুরোপুরি চালু হলে এটা থাকবে না বলে মনে করছেন তিনিবাজারে সরবরাহ ভালো থাকলে চালের দাম আর বাড়বে না বলে আশা করছেন তিনিবস্তায় ধানের জাতের নাম-দাম লেখা থাকছে কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বস্তায় ধানের জাতের নাম, দাম লেখা সবাই চালু করেনিদুই-একটি কোম্পানি চালু করেছেযারা বাকি, তারা সময় চেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছেআসলে ধানের জাত লেখা থাকলে কোনো অসুবিধা নেইকিন্তু মিলগেটের দাম লেখা থাকলে আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়এ পাইকারি বিক্রেতা সমস্যার উদাহরণ টেনে বলেন, ধরুন আজ আমি যদি ৫০ কেজির চালের বস্তা তিন হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনে আনি, গাড়িভাড়া, লেবার খরচসহ অন্যান্য খরচ যুক্ত করে তিন হাজার ৫২০ টাকা বিক্রি করছিআগামীকাল যদি বস্তায় ৫০ টাকা বা ১০০ টাকা কমে যায়, তাহলে আমার চাল আর আগের দামে বিক্রি হবে নাআর যদি বেড়ে যায়, তাহলে আমি নির্দিষ্ট দামের চেয়ে বেশিতে বিক্রি করতে পারব নাবাবুবাজারের মেসার্স হাজী রাইস এজেন্সির মালিক মো. জিয়াউল হক বলেন, বস্তায় ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা বেড়েছেধানের বাজার বেড়েছেএ ছাড়া আমার কাছে যা মনে হয়, ঈদের কারণে অনেক মিল বন্ধ থাকায় বাজারে সরবরাহ কমেছেএ সুযোগে মিলগুলো দাম বাড়িয়ে দিয়েছেতবে এ দাম বেশিদিন থাকবে নাসবকিছু পুরোদমে চালু হলে দাম কমে যাবেবাবুবাজারের পাইকারি আড়তদার দয়াল ভাণ্ডারের ম্যানেজার সাঈদ আহমেদ বলেন, এ বছর বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছেবাজারে নতুন চাল আসার পর দাম অনেকটা কমে যায়গত দেড় মাস ধরে বাজার স্থিতিশীল ছিলকিন্তু ঈদের পর দাম বেড়েছেরায়সাহেব বাজারের খুচরা চাল-বিক্রেতা মো. রাজু আহমেদ বলেন, ঈদুল আজহার পর চালের দাম কেজিতে এক টাকা করে বেড়েছেএক-দেড় মাস ধরে চালের বাজার স্থিতিশীল ছিলঈদের পর আড়তে গিয়ে দেখি প্রতি বস্তায় দাম ৫০ টাকা করে বেড়েছেতবে এ দামটা হয়তো এক সপ্তাহ থাকবেছুটির আমেজ শেষ হলে এবং সবকিছু আগের মতো সচল হলে দাম আবার আগের মতো হবেসূত্রাপুর বাজারের মেসার্স আদনান অ্যান্ড আরাফাত ট্রেডার্সের মালিক মো. ফারুক বলেন, ঈদের পর প্রকারভেদে প্রতি বস্তা চালের দাম ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছেতবে আমি আগের দামেই বিক্রি করছিনতুন করে চাল কেনা হয়নিকম দামে কেনা তাই কম দামেই বিক্রি করছিদীর্ঘ দিন ধরে চালের দাম স্থিতিশীল ছিলঈদের পর কেন জানি দাম বাড়লধানের জাত ও মিলগেট মূল্য লেখা চালের বস্তা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত বাজারে তিন-চারটি কোম্পানির বস্তার গায়ে চালের জাত ও দাম লেখা থাকছেকিন্তু এতে আরেক বিড়ম্বনা তৈরি হচ্ছেআমাদের বেশি দামে কেনা হলেও ক্রেতারা বস্তায় লেখা দাম দিতে চানএতে আমরা ঝামেলায় পড়ে গেছিএ বিষয়ে বাবুবাজার চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, গত এক-দেড় মাস ধরে চালের দাম স্থিতিশীল ছিলঈদের পর সব কিছু বন্ধ ছিলএজন্য হয়তো এক টাকা এদিক-সেদিক হয়েছেতবে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকারের নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছেকেউ যাতে কারসাজি করে অতিরিক্ত মজুত না করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবেকৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সারা দেশে ৫০ লাখ ৫৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছেলক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে ধানের আবাদ হয়েছেএবার বোরোতে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হলো ২ কোটি ২২ লাখ টনসিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শুধু হাওরে চার লাখ ৫৩ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশিআর তাতে ৫০ হাজার টন বেশি উৎপাদনও হয়েছেমৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওরে বোরো ধান কাটা উৎসবে গিয়ে কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুস শহীদ বলেন, আমাদের সারা বছরের মোট চাল উৎপাদনের অর্ধেকের বেশি যোগান দেয় বোরো ধানসেজন্য এ বছরও বোরোর আবাদ ও ফলন বাড়াতে আমরা অনেক গুরুত্ব দিয়েছিবোরোর আবাদ বাড়াতে ২১৫ কোটি টাকার বীজ, সার প্রভৃতি কৃষকদের বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স