ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রাজস্ব সার্কেলে এসিল্যান্ড অফিসে অনিয়ম, দুর্নীতি ও প্রকাশ্যে ঘুষ বাণিজ্যের কারণে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না রাজধানীর খিলক্ষেতস্থ ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রাজস্ব সার্কেলে এসিল্যান্ড অফিসে। ওই অফিসে প্রতিনিয়ত হয়রানি, দুর্নীতি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা। সেখানে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে, অনেক ক্ষেত্রে ঘুষ দেয়ার পরও কাজ হচ্ছে না। সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করতে তাদের নথিপত্র পর্যন্ত গায়েব করে দেয়া হচ্ছে। জাল দলিলে জমির নামজারি হয়ে যাচ্ছে অন্যের নামে। নামজারি, খারিজ, খাজনা প্রদানসহ অন্যান্য কাজে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রকাশ্যে ঘুষ, দুর্নীতি ও লুটপাটের মহোৎসব চলছে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রাজস্ব সার্কেলে এসিল্যান্ড অফিসে। জানা গেছে, রাজধানীর খিলক্ষেতস্থ ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রাজস্ব সার্কেল এসিল্যান্ড অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) জালাল উদ্দিন, সার্ভেয়ার জসিম, তহসিলদার সাবদার আলী ও দালাল বাবুল মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্য করে আসছেন। আশিয়ান সিটি এলাকায় জমির নামজারি নিয়ে হাইকোর্টে একটি রীটপিটিশন মামলা দায়ের করা হয়। রীটপিটিশন মামলা নম্বর ১৭১৮২/১২। মৌজা দক্ষিণখান, আশিয়ান সিটি জমির উপর নিষেজ্ঞা থাকা সত্বেও সহকারী কমিশনার (ভূমি) জালাল উদ্দিন নামজারি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে তিনি একের পর এক নামজারি করেছেন। তিনি ১ বছর ৬ মাস ধরে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রাজস্ব সার্কেল এসিল্যান্ড অফিসে সহকারী কমিশনার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এর আগে তিনি মানিকগঞ্জে ভূমি অফিসে কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকে তিনি তদবীর করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রাজস্ব সার্কেল এসিল্যান্ড অফিসে আসেন। তিনি সিন্ডিকেট তৈরি করে মিস কেস, নামজারী কেস করে নিজেস্ব দালালের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তিনি কোন ফাইলে বা কোন কেসে কত টাকা ঘুষ দিতে হবে তা নিধারণ করে দিয়েছেন। আশিয়ান সিটির মামলা নিষ্পিত্তি হওয়ার পরেও তিনি প্রতিটি নামজারি থেকে ৬০ হাজার টাকা নিচ্ছেন। কেউ দাবিকৃত ৬০ হাজার টাকা না দিলে তার ওই নামজারি বাতিল করে দেয়া হয়। একইভাবে লাইনের প্রতি নামজারী এলে কেস ১৩৮ এ নিচ্ছেন ২০ হাজার টাকা। কোর্ট অভাস ১৫ হাজার টাকা ও সাধারণ কেস থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা করে ঘুষ নিচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খিলক্ষেতস্থ ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রাজস্ব সার্কেল এসিল্যান্ড অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) জালাল উদ্দিন ও সার্ভেয়ার জসিম, তহসিলদার সাবদার আলী ও দালাল বাবুলের দৌরাত্ম্যে জিম্মি সেবাগ্রহীতারা। মোটা অঙ্কের ঘুষ ছাড়া সেবা মিলে না। ভূমি সংশ্লিষ্ট সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজস্ব নিয়মে চলছে ভূমি অফিস। তাদের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতায় জিম্মি হয়ে পড়েছেন জমি মালিক ও অংশীদারসহ সেবাগ্রহীতারা। কেউ এসিল্যান্ডের ঘুষের টাকা দিতে অস্বীকার জানালে তার নামজারি নথি ও মিস কেসের ফাইল আটকে রাখা হয়। অন্যদিকে অবৈধ দখল দেয়া প্রভাবশালী চক্রের বিরুদ্ধে জমির প্রকৃত মালিক মিস কেস করে ঘুষ না দিলেই পড়েন মহাবিপদে। ঘুষের নির্ধারিত টাকার কম দিলেও ভুক্তভোগীদের চার-পাঁচ বছর এসিল্যান্ড অফিসের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রাজস্ব সার্কেলে এসিল্যান্ড অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) জালাল উদ্দিন বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন। তিনি বলেন আমি রাষ্ট্রপতির আত্মীয়। এসিল্যান্ড অফিসে কোন ঘুষ নেয়া হয় না। কোনো মৌজায় নামজারি বন্ধ নেই। সঠিক থাকলে নামজারি করা হচ্ছে। সরকারি নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত কোনো টাকা দেয়া হয় না।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
* সার্ভেয়ার তহসিলদার ও দালালের মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়েছে সিন্ডিকেট * সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার
এসিল্যান্ড অফিস অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়া
- আপলোড সময় : ১২-০৬-২০২৪ ১২:১৫:২৮ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১২-০৬-২০২৪ ১২:১৫:২৮ পূর্বাহ্ন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ