ঢাকা , শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫ , ২৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
গোপালগঞ্জে গণপূর্ত ভবন ও গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ডিপজলের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা, পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ মুক্তি পেলেন সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না কুমিল্লায় নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট অনুষ্ঠিত হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে ইইউ’র বার্তা ঢাকা ওয়াসার এমডি হলেন আব্দুস সালাম ব্যাপারী উত্তপ্ত রাজধানীসহ সারাদেশ সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট বাস্তবধর্মী সিদ্ধান্ত-১২ দলীয় জোট ১ম প্রান্তিকে ওয়ালটনের মুনাফায় শতকরা ৪৮ ভাগ প্রবৃদ্ধি মনোনয়ন বঞ্চিতদের টার্গেট এনসিপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বাড়ার আশঙ্কা আর্থিক চাপে দিশাহারা সরকার আমি স্বামী হত্যার আসামি হয়ে ২ শিশু সন্তান নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি আমতলীতে শীত আসতে না আসতেই গরম পোশাক বিক্রির ধুম চাঁপাইনবাবগঞ্জে সেতু ধসে বিপাকে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ ১১ মাসে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরা অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা ১০০০ ছাড়াল চীন সীমান্তের কাছে নতুন বিমানঘাঁটি ভারতের মক্কায় রেড অ্যালার্ট জারি থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার সৈন্যদের ফের পাল্টাপাল্টি হামলা
আ’লীগের ঢাকা লকডাউন

উত্তপ্ত রাজধানীসহ সারাদেশ

  • আপলোড সময় : ১৪-১১-২০২৫ ১২:২০:০৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৪-১১-২০২৫ ১২:২০:০৬ পূর্বাহ্ন
উত্তপ্ত রাজধানীসহ সারাদেশ
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘিরে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, অবরোধ ও নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। রাতভর ও সকাল পর্যন্ত রাজধানীসহ অন্তত সাত জেলায় গাড়িতে আগুন দেওয়া, ট্রেন চলাচল ব্যাহত এবং সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরির কারণে সারাদেশে একপ্রকার অচলাবস্থা দেখা দেয়। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, গত বুধবার রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ঢাকাসহ টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, গোপালগঞ্জ ও শরীয়তপুরে অন্তত সাতটি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে কমলাপুরে একটি লেগুনা, মিরপুরে ট্রাস্ট পরিবহনের বাস, টাঙ্গাইলের বারইখোলা এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস, গজারিয়া ও গোপালগঞ্জে ট্রাক এবং শরীয়তপুরে একটি পিকআপ। তবে এসব ঘটনায় কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। জানা যায়, রাজধানী ঢাকায় দোলাইরপাড়, শাহ আলী, সূত্রাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বাসে আগুন দেওয়া হয়। ট্রেন ও বাসে হামলার পাশাপাশি হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সকাল থেকেই মোতায়েন ছিল। ডিএমপি জানিয়েছে, রাজধানীতে অন্তত ১৭ হাজার পুলিশ সদস্য মাঠে দায়িত্ব পালন করছেন। ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছ ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। এতে সকাল থেকে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ভাঙ্গা, সোয়াদী ও পুলিয়া এলাকায় গাছের গুঁড়ি ফেলে যান চলাচল বন্ধ করে রাখেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে কিছু এলাকায় অবরোধ তুলে নেয়। মাদারীপুরের শিবচরে দুর্বৃত্তরা একটি চিনি বোঝাই ট্রাকে আগুন দেয় এবং পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ফেনীর মহেশপুরে রেললাইনে গাছ ফেলে দেওয়া হলেও টহলদল দ্রুত তা সরিয়ে ফেলে দুর্ঘটনা এড়াতে সক্ষম হয়। নারায়ণগঞ্জে গত ১২ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী জানিয়েছেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলটির সদস্যদের শনাক্ত করে বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। জেলার সাতটি থানায় ২৬টি তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে এবং নিয়মিত টহল বাড়ানো হয়েছে। গাজীপুরের জয়দেবপুরে পেট্রলবোমা তৈরির সময় স্থানীয়দের সহায়তায় ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের তিন নেতাকে আটক করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তারা যানবাহনে বোমা নিক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে বোমা তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে সকাল ৬টা থেকে ৮টার মধ্যে ককটেল বিস্ফোরণ ও ট্রাকে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, ওই সময় আওয়ামী লীগের কর্মীরা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করে মিছিল করছিলেন। পুলিশ দ্রুত সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সন্দেহভাজন দুইজনকে আটক করে। বরগুনায় জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, দুই ব্যক্তি বোমা ছুড়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় তেমন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে। এদিকে রাজধানীর গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা ব্যানারে আগুন দেয় ও ভাঙচুর চালায়। ঘটনাস্থলে স্লোগান দিতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। যদিও ফায়ার সার্ভিস জানায়, বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের খবর তারা পায়নি। ঢাকা শহরের চিত্রও ছিল ভিন্ন। সকাল থেকে যানবাহন কম দেখা গেলেও দুপুরের পর কিছুটা বাড়ে। মেট্রোরেলে যাত্রীসংখ্যা ছিল তুলনামূলক কম। সচিবালয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সকাল থেকে কেবল ১ ও ২ নম্বর গেট খোলা ছিল। অফিস-আদালতে উপস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি ছিল অনেক কম। দূরপাল্লার বাস চলাচল প্রায় বন্ধ ছিল। সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী টার্মিনালে সীমিতসংখ্যক বাস ছাড়লেও অনেক পরিবহন মালিক বাস রাস্তায় নামাননি। অগ্রিম টিকিট কাটা যাত্রীদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবারের এই লকডাউন কর্মসূচি ঘিরে সারাদেশে সরকার সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় ছিল। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বিশেষ নিরাপত্তা জোরদার করা হয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স