* নিষিদ্ধ আ’লীগের বোমা হামলা ও যানবাহনে আগুনের ঘটনায় জনমনে শঙ্কা
অরাজকতার পথে হাঁটছে দেশ
- আপলোড সময় : ১২-১১-২০২৫ ১০:১৯:৪৭ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১২-১১-২০২৫ ১০:১৯:৪৭ অপরাহ্ন
* রাজধানীসহ সারাদেশে ধারাবাহিক নাশকতায় বিঘ্নিত জনগণের নিরাপত্তা
* প্রথমবারের মতো রাজধানীর মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ
* নাশকতা ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নামানো হয়েছে বিজিবি
* জুলাই হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার মামলার রায়ের দিন ধার্য আজ
* কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ লকডাউন কর্মসূচি ঘিরে আরও উত্তপ্ত হয়েছে পরিস্থিতি
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির রায় ঘোষণার দিন ধার্য নিয়ে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় লকডাউন কর্মসূচি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়েছে। আজ ১৩ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে গত তিনদিন ধরে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ, পেট্রোল বোমা হামলা ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অরাজকতার পথে হাঁটছে দেশ।
নানা ধরনের অপতৎপরতা ও বাসে আগুনসহ রাজধানীজুড়ে বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণে জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এছাড়াও গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগেই না কি একই দিনে হবে, তা নিয়ে উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন। নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে এরইমধ্যে রাজপথে নেমে পড়েছে জামায়াত নেতৃত্বাধীন আট রাজনৈতিক দল। রাজধানীসহ সারাদেশে ধারাবাহিক নাশকতায় বিঘ্নিত হতে পারে জনগণের নিরাপত্তা। তাই সারাদেশে নাশকতা ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যদিও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই কর্মসূচিকে ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা হুমকি নেই।
জানা গেছে, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লকডাউন কর্মসূচি ঘিরে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে আতঙ্ক ছড়ানোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুরোনো কিছু ভিডিও ছড়িয়ে দাবি করা হচ্ছে, এসব ভিডিও লকডাউন কর্মসূচি সফল করতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী সমর্থকদের অংশগ্রহণের। যদিও ফ্যাক্টচেকে তা পুরোনো বলে জানা যায়। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে একের পর এক বাসে অগ্নিসংযোগ, বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে জনমনে। তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রম কঠোরভাবে দমন করা হবে।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মসূচি কঠোরভাবে দমন করার হুঁশিয়ারি দিয়ে নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, এটা ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর নয়, এটা জুলাই, চিরকালের জন্য।
সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর সূত্রাপুরে মালঞ্চ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের এক ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তার আগে সকাল পৌনে ৮টার দিকে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় ইস্পাহানী বালিকা বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের গেটের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। যদিও এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। গত মঙ্গলবার রাতে গাজীপুরে তিন যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। জেলার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাসন, ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের শ্রীপুর ও চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের চক্রবর্তীর এলাকায় থেমে থাকা তিনটি বাসে আগুন দেওয়া হয়।
চলমান দুর্বৃত্তায়ন ও অপতৎপরতায় এখন পর্যন্ত বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও জনমনে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। দুর্বৃত্তরা যেভাবে নাশকতা চালাচ্ছে, তাতে রাস্তায় চলাচল করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে প্রিপারেটরি স্কুলে দুটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। গতকাল মঙ্গলবার দিনগত রাত ১২টা ৪ মিনিটে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুটি মোটরসাইকেলে চারজন এসে পরপর দুটি পেট্রোল বোমা প্রিপারেটরি স্কুল লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা হয়। পরে তারা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, রাতে দুটি মোটরসাইকেল এসে একটি রাউন্ড দিয়ে প্রিপারেটরি স্কুলের সামনে থেমে যায়। এদের মধ্যে দুটি মোটরসাইকেলের চালকের মাথায় হেলমেট, বাকি দুজনের মুখে মাস্ক ও মাথায় ক্যাপ পরা ছিল। এরপর একটি মোটরসাইকেল থেকে নেমে একজন পেট্রোল বোমায় আগুন ধরিয়ে দুটি বোমা স্কুলে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করে। পরে তারা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক আহমেদ। তিনি বলেন, স্কুলকে লক্ষ্য করে দুটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
অপরদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে গ্রামীণ ব্যাংকের চান্দুরা শাখায় জানালার কাচ ভেঙে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে আসবাব ও কাগজপত্র পুড়ে গেছে। তবে ভল্টের টাকা লুট বা বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরায় ওই গ্রামীণ ব্যাংকের শাখার অবস্থান। ব্যাংকের পেছনে ডরমিটরিতে ব্যবস্থাপকসহ কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী থাকেন।
গ্রামীণ ব্যাংকের চান্দুরা শাখার ব্যবস্থাপক কলিম উদ্দিন বলেন, গত মঙ্গলবার রাত ২টা ৫ মিনিটের দিকে বাইরে থেকে জানালার কাচ ভেঙে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগানো হয়। নিরাপত্তা প্রহরী বিষয়টি বুঝতে পেরে আমাদের জানান। ব্যাংকের ভেতরে গিয়ে আগুন জ্বলতে দেখি। আগুনে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, শিট, গ্রাহকদের পাসকার্ড, আসবাব, জানালার কাপড় পুড়ে গেছে। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে নিয়ে আগুন নেভাই। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আসে। কলিম উদ্দিন জানান, ব্যাংকের পেছনে রান্নাঘরের পাশে একটি চেয়ার রাখা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ওই চেয়ারের মাধ্যমে দুর্বৃত্তরা এসে কাচ ভেঙে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় থানায় জিডি করেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী কাজ করছেন। তিনিসহ কয়েকজন ব্যাংকের পেছনে ডরমিটরিতে থাকেন। তাই দ্রুত আগুন নেভাতে পেরেছেন।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহিদুল ইসলাম বলেন, আগুনে ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ নথি, ঋণের কাগজপত্র পুড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে কয়েল জ্বলছিল। কীভাবে আগুন লেগেছে, তা এখন বলা যাচ্ছে না। পুলিশ তদন্ত করছে।
এদিকে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের নিসর্গ রিসোর্টে পেট্রলবোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। তবে সেগুলো বিস্ফোরিত হয়নি। গতকাল বুধবার ভোর ৫টার দিকে উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের কুচলিবাড়ি এলাকার রিসোর্টটি থেকে অবিস্ফোরিত অবস্থায় দুটি পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়। প্রায় পাঁচ মাস আগেও নিসর্গ রিসোর্টে পেট্রলবোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছিল। গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা ট্রাস্টি হলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
রিসোর্টের নিরাপত্তাকর্মী, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রিসোর্টের সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে গতকাল বুধবার ভোরে পেট্রলবোমাসদৃশ দুটি বস্তু দেখতে পান নিরাপত্তাকর্মীরা। তারা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কাচের বোতল দুটি উদ্ধার করে। পুলিশের ধারণা, এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতে রাতের কোনও একসময় দুর্বৃত্তরা বাইরে থেকে বোতলগুলো ভেতরে নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। তবে সেগুলো বিস্ফোরিত হয়নি।
কালীগঞ্জ থানার উলুখোলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) জামাল উদ্দিন বলেন, ?মুখে স্কচটেপ পেঁচানো বোতল দুটির ভেতরে কেরোসিনজাতীয় দাহ্য পদার্থ ছিল। দুর্বৃত্তরা সেগুলো রিসোর্টে নিক্ষেপ করলেও বিস্ফোরিত না হওয়ায় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র অনুযায়ী, গত কয়েক দিনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ঢাকায় অবস্থিত রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে, ডিএমপির ৫০টি থানায় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে থাকার দাবি করলেও কার্যত মাঠপর্যায়ে এর প্রভাব পুরোপুরি লক্ষ্য করা যায়নি। গত কয়েক দিনে দুর্বৃত্তরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যানবাহন থেকে শুরু করে বিভিন্ন যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে। এছাড়া, মুখোশ ও হেলমেট পরিধানকারী একদল লোক রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নির্বিচারে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। দুর্বৃত্তরা শুধু ককটেল বিস্ফোরণ বা বাসে আগুন দিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না, তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করছে। সর্বশেষ, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের গার্লস শাখায় পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। যদিও এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকায় অবস্থিত রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, সুপ্রিম কোর্ট, সচিবালয়সহ প্রধান প্রধান সরকারি অফিসগুলোতে পুলিশের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ, র?্যাব, বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মাঠপর্যায়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এসব রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ছাড়াও রাজধানীর বনানী, উত্তরা, বাড্ডা, পল্টন ও ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ সম্পূর্ণ ধানমন্ডি এলাকায়।
ধানমন্ডি থানা সূত্রে জানা যায়, বিশেষ করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের নাশকতার ঘটনা যেন না ঘটতে পারে, সেজন্য গত দুই দিন ধরেই সেখানে পুলিশের ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। সন্দেহজনক যান চলাচল দেখলে পুলিশ ব্যারিকেডে আটকে তল্লাশি করছে। গত কয়েক দিনের ককটেল বিস্ফোরণ ও বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অধিকাংশ ঘটনা ঘটেছে রাতের বেলায়। সেজন্য রাতে যেন কোনো ধরনের নাশকতার ঘটনা না ঘটতে পারে, সেজন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও কার্যক্রম গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঢাকার বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ডিএমপি। এছাড়াও রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঢাকায় লকডাউন কর্মসূচি সম্পর্কে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমাদের পাঁচ দফায় মানবতাবিরোধী অপরাধী খুনিদের যে বিচারের দাবি করেছি ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যখন এই নভেম্বরে কিছু অপরাধীর রায়ের সম্ভাবনা, তখন ফ্যাসিস্টরা বাংলাদেশজুড়ে ককটেল, গাড়িতে আগুন দিয়ে নাশকতার ষড়যন্ত্র করছে। সরকার ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আমরা শুনছি, ঢাকার হোটেলে হোটেলে সন্ত্রাসীরা অবস্থান নিয়েছে। আপনারা অভিযান চালিয়ে ফ্যাসিস্টদের গ্রেফতার করুন।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর বর্তমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দলের বৃহস্পতিবারের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ অফিসগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
বিজিবি সদর দফতরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীসহ ঢাকায় ১২ প্লাটুন ও আশপাশের জেলায় দুই প্লাটুনসহ মোট ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, গত কয়েকদিনে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, হেলমেট ও মাস্ক পরে ভোরবেলা অথবা দিনের ব্যস্ততম সময়ে টার্গেট করা স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি রাজনৈতিক দল। অনেক সময় ককটেল বিস্ফোরণে অপ্রাপ্তবয়স্কদেরও ব্যবহার করা হচ্ছে। দু-একটি মোটরসাইকেল থেকে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে, তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এসব ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের কাজ চলছে। তিনি বলেন, কিছুদিন ধরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দল ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন অপপ্রচারের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে, বিশেষ করে ঢাকা শহরের। গত কয়েকদিনে ঢাকা শহরে ককটেলসদৃশ বস্তু নিক্ষেপ এবং বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক ছড়ানোসহ আইনশৃঙ্খলা বিনষ্ট করার অপচেষ্টা রয়েছে। ঢাকাবাসী আমাদের সঙ্গে আছে-তাই কোনো অঘটন ঘটলে তা মোকাবিলার সক্ষমতা আমাদের রয়েছে বলেও জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ১৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবারকে ঘিরে শক্ত অবস্থানের জন্য আমাদের প্যাট্রোলিং বাড়ানো হয়েছে। কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া যেখানে-সেখানে খোলা তেল বিক্রি বন্ধসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, সন্ত্রাসীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। আজ ১৩ তারিখ ঘিরে আমাদের কার্যক্রম চলছে। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলেই আমাদের পুলিশকে সবাই সেটা জানান।
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
হাবিবুর রহমান