জুলাই আন্দোলনকারীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ ইউজিসি চেয়ারম্যানের
- আপলোড সময় : ০৬-১১-২০২৫ ০৩:৫৯:৩৪ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৬-১১-২০২৫ ০৩:৫৯:৩৪ অপরাহ্ন
জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ। তিনি বলেন, তোমরা (শিক্ষার্থী) বড় যোদ্ধা, দেশের পরিবর্তনকারী। তোমাদের অবদানের জন্য সারা বিশ্ব আমাদের সম্মান করছে। জাতি তোমাদের সম্মান করে, অনেক কিছু প্রত্যাশাও করে। জাতির প্রত্যাশা পূরণ এবং জুলাইযোদ্ধাদের নিয়ে যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে বলে তিনি জানান। গতকাল বুধবার ইউজিসিতে আয়োজিত ‘সোশ্যাল ইমোশনাল ওয়েলবিং অব ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ইউজিসি ও ইউনেস্কো যৌথভাবে এ কর্মশালা আয়োজন করে। ইউজিসি’র ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশন বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মোছা. জেসমিন পারভিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব ও প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম। প্রফেসর ফায়েজ বলেন, জুলাইয়ের ট্রমা থেকে শিক্ষার্থীদের বের হয়ে আসতে সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সহায়ক হবে। তিনি আরও বলেন, জুলাই স্মৃতিচারণায় শিগগিরই ইউজিসি একটি সেমিনার আয়োজন করবে। প্রফেসর তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ৫ আগস্টের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম ও হলগুলোতে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা জারি ছিলো। শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের ভোগান্তি ও মানসিক অশান্তিতে ছিলো। খুব কম শিক্ষক এ সময় শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন। এ অবস্থার পরিবর্তনে শিক্ষার্থীরা অদম্য শক্তি দেখিয়েছে। তিনি আরও বলেন, পঠন-পাঠনে মানসিক স্বাস্থ্য খুবই গুরিুত্বপূর্ণ। ইউজিসি শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সজাগ বলে তিনি জানান। প্রফেসর আনোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা ব্যক্তি স্বার্থকে উপক্ষো করে দেশের স্বার্থে আন্দোলন করেছে। এ আন্দোলনে শিক্ষার্থীসহ ১৪শ’ জন শহীদ এবং প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আন্দোলন পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের ট্রমায় আছেন। এই ট্রমা কমিয়ে আনতে ইউজিসি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি, শিক্ষায় উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে তারা কাজ করছে বলে জানান। প্রফেসর মাছুমা হাবিব বলেন, জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ইউজিসি নিরন্তর কাজ করে যাবে। সময়োপযোগী এ প্রকল্পে বিনিয়োগ করার জন্য তিনি ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ দেন। প্রফেসর আইয়ুব ইসলাম বলেন, তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হলে তাদের সামাজিক ও মানসিক দক্ষতা বৃদ্ধি করা জরুরি। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা এক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ইউজিসি’র সামাজিক ও মানসিক দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন। কর্মশালায় শিক্ষার্থীরা দাবি করেন জুলাই আন্দোলনের ফলেই বিশ্ববিদ্যিালয়গুলোতে সুষ্ঠু পরিবেশে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যিালয়ের হলে সিট পেতে শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের অসুবিধা হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যিালয়ে র্যাগিংয়ের ঘটনাও ঘটছে না বলে জানান। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের নিয়োগে স্বচ্ছতা ও মেধার প্রাধ্যন্য দেওয়া এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ আয়কর আদায় বন্ধে ইউজিসি’র হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কর্মশালায় জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী রিফাত হাওলাদার, সানজিদা তন্বী, রবিউস সানী, মাহফুজা খাতুন এবং উমামা ফাতেমাসহ কর্মশালায় ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। ইউনেস্কোর সহায়তায় সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নামে ইউজিসি একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর আওতায় চলতি নভেম্বর মাস থেকে ২২টি পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সেবা প্রদান করা হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
স্টাফ রিপোর্টার