ঢাকা , রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫ , ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
এই সরকার দিয়ে কোনো অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়-ডা. তাহের লাখো মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে যারা ধর্মের নামে রাজনীতির ব্যবসা করে, তাদের হাতে নারীরা নির্যাতিত-সালাহউদ্দিন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না-প্রধান উপদেষ্টা নারীদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়নের চিন্তা করলে ভুল হবে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকালীন ডিসি নিয়োগ পুলিশ দেখে ফেলে যাওয়া প্রাইভেটকারে মিললো এক লাখ পিস ইয়াবা তিন মাসে আয়ে প্রবৃদ্ধি তবুও তিতাসের লোকসান ২৪৯ কোটি টাকা প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখেই তরুণের আত্মহত্যা দুই দশকে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা আটগুণ বৃদ্ধি মুন্সিগঞ্জের ভাষানচর বালুমহল ইজারা ঘিরে অভিযোগ, হয়রানি বন্ধে তদন্তের দাবি কৃষি গুচ্ছ ভর্তির আবেদন শুরু ২৫ নভেম্বর, পরীক্ষা ৩ জানুয়ারি ভয়াবহ দুর্ভোগ হানিফ ফ্লাইওভারে! যৌনাচারের অভিযোগে ঢাবি শিক্ষক গ্রেফতার ইসলামী ব্যাংক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্বাচনের আগে গণভোট চায় ৮ দল আমি পাশে না দাঁড়ালে গ্রামীণ ব্যাংকের অনেক স্থাপনা থাকতো না-কাদের সিদ্দিকী স্কুলে ভর্তিতে কোটা নিয়ে আপত্তি অভিভাবকদের দেশে দ্রুত কমছে খাদ্যের মজুত ট্রাভেল এজেন্সি অধ্যাদেশ-২০২৫ বাতিলের দাবি

প্রশাসনে পদের চেয়ে অনেক বেশি পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সংখ্যা

  • আপলোড সময় : ০৪-১১-২০২৫ ০২:২৬:৫৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৪-১১-২০২৫ ০২:২৬:৫৩ অপরাহ্ন
প্রশাসনে পদের চেয়ে অনেক বেশি পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সংখ্যা
দেশের প্রশাসনে পদের চেয়ে অনেক বেশি পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সংখ্যা। ফলে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা ও মর্যাদা বাড়লেও উচ্চতর পদ পাচ্ছে না। বরং আগের পদেই তাদের কাজ করতে হচ্ছে। গত দেড় দশক ধরেই পদ না থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনে পদোন্নতি দেয়ার প্রবণতা চলছে। বর্তমানে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব ও উপসচিদের পদ সংখ্যা (প্রেষণসহ) ১ হাজার ৮৩৯টি। অথচ ওসব পদের বিপরীতে কর্মকর্তা রয়েছেন ২ হাজার ৯৬৬ জন। অর্থাৎ প্রশাসনে পদের চেয়ে সহস্রাধিক কর্মকর্তা বেশি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে ২০২৪ সালে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত এক বছরের বেশি সময়ে প্রশাসনে ১ হাজার ৮১৭ জন কর্মকর্তা পদোন্নতি দিয়েছে। তার মধ্যে ৭৮৫ জন সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে সিনিয়র সচিব পর্যন্ত নিয়মিত পদোন্নতি পেয়েছেন। তাছাড়া বিগত সরকারের আমলে বঞ্চিত ৭৬৪ জন বিএনপি-জামায়াতসমর্থিত কর্মকর্তা ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। আর গত ২৮ আগস্ট উপসচিব পদে পদোন্নতি দেয়া হয় ২৬৮ জন কর্মকর্তাকে। সূত্র জানায়, দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই প্রশাসনে বিএনপি-জামায়াত ঘরানার বঞ্চিত কর্মকর্তারা সামনে আসেন। তারা সচিবালয়ে বৈঠক করে জ্যেষ্ঠতাসহ ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির দাবি করে। তারপর তারা প্রশাসনে কর্মরত বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ব্যাচভিত্তিক তালিকা তৈরি করে পদোন্নতির জন্য সচিবের দপ্তরে জমা দেন। ওই সময় আগে অবসরে যাওয়া ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে সচিব পদসহ বিভিন্ন পদে পদোন্নতি দেয়া হয়। তারা আর্থিক সুবিধা ও মর্যাদা পেলেও জনপ্রশাসন তাদের কোনো কাজে লাগাতে পারেনি। তাছাড়া সমপ্রতি পর্যালোচনা কমিটি অন্যান্য ক্যাডারের বঞ্চিত ৭৮ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ করেছে। সূত্র জানায়, প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদোন্নতি পাওয়া বেশির ভাগ কর্মকর্তাকেই আগের পদেই কাজ করতে হচ্ছে। কারণ পদোন্নতির ফলে নিয়মিত পদের চেয়ে কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি হয়ে গেছে। গত ২০ মার্চ সরকার প্রশাসনের ১৯৬ জন কর্মকর্তাকে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি দেয়। তার মধ্যে ২৪তম ব্যাচের পদোন্নতিযোগ্য ৩২০ জনের মধ্যে ১৩৭ জন পদোন্নতি পান আর ১৮৩ জন বাদ পড়ে। তারপর বঞ্চিতরা দলবেঁধে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সঙ্গে দেখা করে পদোন্নতির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে সরিয়ে দেয়ায় এখন পদোন্নতি সংক্রান্ত সর্বোচ্চ ফোরাম সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) হচ্ছে না। যে কারণে পদোন্নতি দেওয়া আপাতত বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া গত এক বছরে অন্তত ৯ জন সচিব ও ১৯ জন অতিরিক্ত সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে আর ৮৭ জনকে ওএসডি করা হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে সভাপতি করে গঠিত সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) প্রশাসনে উপসচিব ও তার ওপরের পদে পদোন্নতির জন্য কর্মকর্তা বাছাই করা হয়। ওই কমিটিতে আছেন অর্থ উপদেষ্টা, জ্বালানি উপদেষ্টা, পরিবেশ উপদেষ্টা, তথ্য উপদেষ্টা, মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব। কমিটির সিদ্ধান্ত প্রধান উপদেষ্টার কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। তারপর পদোন্নতি-পদায়নের সিদ্ধান্ত হয়। বর্তমানে সচিব পদের ১০ কর্মকর্তা ওএসডি (প্রশাসনিক) রয়েছেন। একই পদে চুক্তি ভিত্তিতে ১২ জন রয়েছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী বর্তমানে সহকারী সচিব থেকে সচিব পর্যন্ত প্রশাসনে মোট কর্মকর্তা আছেন ৬ হাজার ৫১৮ জন। তার মধ্যে সিনিয়র সচিব, সচিব বা সমপর্যায়ের কর্মকর্তা আছেন ৮৪ জন এবং গ্রেড-১ পদের কর্মকর্তা আছেন ১৫ জন। ওই পদে নির্দিষ্ট পদ সংখ্যা নেই। তাছাড়া অতিরিক্ত সচিবের ২১২টি নিয়মিত পদ আছে। তার সঙ্গে বিভিন্ন দপ্তরে প্রেষণে থাকা প্রায় ১২৫টি পদ মিলে মোট পদ দাঁড়ায় ৩৩৭টি। অথচ অতিরিক্ত সচিব আছেন ৩৪৩ জন। যুগ্মসচিবের পদ রয়েছে ৫০২টি কিন্তু কর্মকর্তা আছেন ১ হাজার ২৭ জন। আর জনপ্রশাসনে এখন নিয়মিত উপসচিবের ১ হাজার পদের বিপরীতে কর্মকর্তা রয়েছেন ১ হাজার ৫৯৬ জন। পদের চেয়ে কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি থাকার মধ্যেও গত ২৮ আগস্ট ২৬৮ জনকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেয়া হয়। সিনিয়র সহকারী সচিব আছেন ১ হাজার ৮৭৩ জন এবং সহকারী সচিবের সংখ্যা ১ হাজার ৫৩৩ জন। সেক্ষেত্রে নিয়মিত কোনো নির্দিষ্ট পদসংখ্যা নেই। এদিকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে বেশি সুবিধাপ্রাপ্ত হিসেবে চিহ্নিত। বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলার কারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অন্তত ২০ জন কর্মকর্তাকে জোরপূর্বক অবসরে পাঠানো হয়েছে অথবা অন্য শান্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে হাতাহাতির ঘটনায় জড়িত প্রশাসন ক্যাডারের ১৫ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদনে- সত্যতা মিললেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং তাদের কয়েক জনকে উপসচিব থেকে যুগ্মসচিব পদে উন্নীত করা হয়েছে। প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সচিবালয়ে মারামারি বা দুর্নীতি যা-ই করুক তাদের কিছুই হয় না, বরং ভালো ভালো পদায়ন ও পদোন্নতি পায়। সেজন্যই প্রশাসন ক্যাডারের প্রতি আস্থা রাখতে পারছে না শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও তথ্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা। অভিযোগ আছে প্রশাসন, পুলিশ ও পররাষ্ট্র ক্যাডারে দ্রুত পদোন্নতি হয়। অন্য ক্যাডারে বছরের পর বছর কর্মকর্তারা পদোন্নতির আশায় বসে থাকেন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স