ঢাকা , রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫ , ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
এই সরকার দিয়ে কোনো অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়-ডা. তাহের লাখো মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে যারা ধর্মের নামে রাজনীতির ব্যবসা করে, তাদের হাতে নারীরা নির্যাতিত-সালাহউদ্দিন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না-প্রধান উপদেষ্টা নারীদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়নের চিন্তা করলে ভুল হবে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকালীন ডিসি নিয়োগ পুলিশ দেখে ফেলে যাওয়া প্রাইভেটকারে মিললো এক লাখ পিস ইয়াবা তিন মাসে আয়ে প্রবৃদ্ধি তবুও তিতাসের লোকসান ২৪৯ কোটি টাকা প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখেই তরুণের আত্মহত্যা দুই দশকে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা আটগুণ বৃদ্ধি মুন্সিগঞ্জের ভাষানচর বালুমহল ইজারা ঘিরে অভিযোগ, হয়রানি বন্ধে তদন্তের দাবি কৃষি গুচ্ছ ভর্তির আবেদন শুরু ২৫ নভেম্বর, পরীক্ষা ৩ জানুয়ারি ভয়াবহ দুর্ভোগ হানিফ ফ্লাইওভারে! যৌনাচারের অভিযোগে ঢাবি শিক্ষক গ্রেফতার ইসলামী ব্যাংক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্বাচনের আগে গণভোট চায় ৮ দল আমি পাশে না দাঁড়ালে গ্রামীণ ব্যাংকের অনেক স্থাপনা থাকতো না-কাদের সিদ্দিকী স্কুলে ভর্তিতে কোটা নিয়ে আপত্তি অভিভাবকদের দেশে দ্রুত কমছে খাদ্যের মজুত ট্রাভেল এজেন্সি অধ্যাদেশ-২০২৫ বাতিলের দাবি

আদালতে হেনস্তার শিকার ৩ সাংবাদিক

  • আপলোড সময় : ২৯-১০-২০২৫ ০২:৩২:২৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৯-১০-২০২৫ ০২:৩২:২৪ অপরাহ্ন
আদালতে হেনস্তার শিকার ৩ সাংবাদিক
সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে ঢাকার আদালতপাড়ায় জামায়াতপন্থী কয়েকজন আইনজীবীর হেনস্তার শিকার হয়েছেন তিন সাংবাদিক। পরবর্তীতে ওই তিন সাংবাদিককে কাঠগড়ায় ডেকে নিয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাহ পিয়াস কারাগারে পাঠানোর হুমকি দেন। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। কিছুক্ষণ পর ক্ষমা চাওয়ার শর্তে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটি (সিআরইউ)। ভিডিও ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল গতকাল মঙ্গলবার। তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরা এবং বাবা নুর উদ্দিন রানা আদালতে হাজির হন। পরে আসামি বুশরা আদালত থেকে বের হন। তখন আসামির ভিডিও ফুটেজ নিতে যান কালের কণ্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক মাসুদ রানা, একুশে টেলিভিশনের রিপোর্টার আরিফুল ইসলাম এবং দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার রিপোর্টার আরিফুল ইসলাম। তবে জামায়াত পন্থী আইনজীবী রেজাউল হক রিয়াজ ও হাতিরঝিল থানার জামায়াতের রোকন ও আইনজীবী আক্তারুজ্জামান ডালিমসহ অনেকেই ভিডিও করতে বাধা দেন। সাংবাদিকরা পেশাগত কারণে ভিডিও করার কথা জানালে তারা আরও চড়াও হন। এ সময় তারা সাংবাদিকদের বিচারকের কাছে ধরে নিয়ে যেতে উদ্ধৃত হন। তবে সাংবাদিকেরা জানান, আসামির ছবি বা ভিডিও নিতে আদালতের অনুমতির প্রয়োজন নেই। এই কথা বলায় উপস্থিত আইনজীবীরা ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাহ পিয়াসের আদালতের সামনে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেন। এক পর্যায়ে আইনজীবী আক্তারুজ্জামান ডালিম সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। এ সময় এই মামলার বাদী নুর উদ্দিন রানাকে দেখে হুমকি দিতে থাকেন তিনি। বাদীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি সাংবাদিকদের ডেকে এনেছেন। এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাহ পিয়াস তার আদালতে এই তিন সাংবাদিককে এজলাসে ডেকে নেন। এ সময় আইনজীবী রেজাউল হক রিয়াজ কৌশলে পালিয়ে যান। তখন বিচারক তিন সাংবাদিককে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করান। বিচারক সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাদের পরিচয় দেন। সাংবাদিকদের পরিচয় জানার পর বিচারক বলেন, আপনারা কোর্টের সামনে হাঙ্গামা করেছেন। এখন ১১টা ৩৮ বাজে, আপনারাদের কারাগারে পাঠানো হবে। আর কোনো কথা হবে না। আপনাদের সকলের মোবাইল নিয়ে নেওয়া হোক। মিনিট দুইয়েক পর বিচারক বলেন, আপনারা নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলে ছেড়ে দিব। না হলে কারাগারে যেতে হবে। কোনো ছাড় নেই। পরে এই তিন সাংবাদিককে ছেড়ে দেওয়ার অনুমতি দেন আদালত। সাংবাদিক মাসুদ রানা বলেন, সংবাদ সংগ্রহে গেছিলাম। কিন্তু কয়েকজন আইনজীবী ভিডিও তুলতে বাধা দিয়ে মব সৃষ্টি করেন। পরে বিচারক অতিউৎসাহী হয়ে আমাদের তিনজনকে কাঠগড়ায় ডাকেন। আমাদের পরিচয় জেনে বিচারক বলেন, আপনারা বসেন। সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হবে। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার রিপোর্টার আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা আসামির ভিডিও ধারণ করতে গেলে তাদের আইনজীবীরা চড়াও হন। একজনের মোবাইল কেড়ে দেন। ভিডিও ধারণ করায় বিচারকের কাছে জোর করে তারা আমাদের নিতে চেয়েছে। আমরা যেতে না চাওয়ায় তারা খুব খারাপ আচরণ করতে থাকেন। এ সময় আরেক আদালতের বিচারক আমাদেরকে এজলাসে ডাকেন। এরপর কাঠগড়ায় যেতে বলেন। বিচারক কোনো আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর হুমকি দেন। কোনো অপরাধ না করেই নিঃশর্তে ক্ষমা চাওয়া লেগেছে। বিষয়টি খুব দুঃখজনক। অভিযোগের বিষয়ে আইনজীবী আক্তারুজ্জামান ডালিম বলেন, একটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। পরে বিচারক ডেকে সমাধান করে দিয়েছেন। আইনজীবী রেজাউল হক রিয়াজ বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। এ বিষয়ে ঢাকার কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লিটন মাহমুদ বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলার চেষ্টা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এ দিন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল্লা পিয়াসের আদালতের বাইরে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে কোর্টে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় অথবা ব্যাঘাত সৃষ্টি করে এমন কোনো অপেশাদার আচরণ করেনি। সাংবাদিকরা শুধুমাত্র তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন। সেখানে জামাতের আইনজীবীদের দ্বারা হেনস্তার স্বীকার হয়েছেন। এ সময় ওই সব আইনজীবীদের হট্টগোলে আদালতে পরিবেশ নষ্ট হয়। যার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। এসব বিবেচনায় না নিয়ে সংশ্লিষ্ট কোর্টের বিচারক অতিউৎসাহী হয়ে হাসিবুল্লা পিয়াস উল্টো তিন সাংবাদিককে ডেকে নিয়ে জেলে পাঠানোর হুমকি দেন। একজন বিচারকের কাছে এমন আচরণ কাম্য নয়। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমি ওই বিচারকের অপসারণসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই। এ বিষয়ে আমরা প্রধান বিচারপতির কাছে লিখিত অভিযোগ জানাব।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স