কেরানীগঞ্জে অপ্রতিরোধ্য এক ভূমিদস্যুর গল্প
জমি নেই তবুও ২টি হাউজিং প্রকল্পের মালিক
- আপলোড সময় : ১৫-১০-২০২৫ ০২:৩০:১৯ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৫-১০-২০২৫ ০২:৩০:১৯ অপরাহ্ন
* আপন নিবাস হাউজিং প্রকল্পের কর্ণধার জাকির হোসেন ফের সক্রিয়
* বিগত আ’লীগের আমলে শত শত বিঘা জমি অবৈধভাবে দখল করেছেন
* দীপুর পিএস জাকিরের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক হত্যা মামলা
* তার নেতৃত্বে এখনও চলছে আওয়ামী লীগ পুর্নগঠনের প্রক্রিয়া
ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জের ভালিকাভুক্ত ভূমিদস্যু সাবেক বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ছোট ভাই দিপুর পিএস আপন নিবাস-এর মালিক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে শত শত বিঘা জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাবেক ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর জাকির হোসেনের নেতৃত্বে এখনও চলছে আওয়ামী লীগ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া। প্রতিদিন ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের সর্বত্র অর্থের যোগানদাতা জাকির হোসেন নানা কর্মকাণ্ড গোপনে চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, জাকির হোসেন এক সময়ে এলাকার টোকাই ছিলেন। দীর্ঘদিন কেরানীগঞ্জ এলাকায় থাকার সুবাদে ফ্যাসিস্ট সরকারের সবচেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ছোট ভাই দিপুর সাথে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে দিপুর পিএস থাকার কারণে অসহায় গরিবদের বাড়িঘর দখল করে আপন নিবাস নামে একটি ভুইফোড় আবাসন প্রকল্প শুরু করেন। জাকির হোসেনের নিজের কোন জমি না থাকলেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে শত শত বিঘা জমি দখল করে নাম সর্বস্ব সাইনবোর্ড বসিয়ে ধান্ধাবাজি ব্যবসা শুরু করেন। আর এই ধাধাবাজির ব্যবসায় তিনি দ্রুত সকলতা অর্জন করেন। এই ভূমিদস্যু জাকির হোসেনকে সরাসরি সহয়তা করতেন নসরুল হামিদ বিপুর ছোট ভাই দিপু। কারণ দীর্ঘদিন বিপুর পিএস হওয়ার কারণে জাকির হোসেন যে অন্যায়ই করতেন তার কোন বিচার হত না। কেরানীগঞ্জ এলাকায় বাড়িঘর জমি দখলের পর রাতারাতি আপন নিবাসের সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাড়িঘর হারা এক অসহায় ব্যক্তি জানান, কেরানীগঞ্জ আপন নিবাস এলাকায় তার পৈত্রিক বাড়ি। এই বাড়িতেই তার সন্তানদেরকে নিরে দীর্ঘ যুগের পর যুগ বসবাস করে আসছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় আপন নিবাসের মালিক দিপুর পিএস জাকির হোসেন রাতের আধারে তার সমস্ত ক্যাডার বাহিনী নিয়ে তার পরিবারের সবাইকে উচ্ছেদ করে তা পুরোটাই দখলে নিয়ে নেয়।
পরের দিন দিপুর কাছে বিষয়টি জানালে তিনি এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে তাদেরকে বের করে দেয়া হয়। এলাকাবাসী জানান, আপন নিবাসের মালিক এক সময়ে এলাকায় পাসপোর্ট অফিসের দালাল ছিলেন। ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতার আসার পর সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ছোট ভাই দিপুর সাথে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর দিপুর অত্যন্ত আস্তাভাজন হওয়ার পর তার পিএসের দায়িত্ব পান।
এই পিএসের দায়িত্ব পাওয়ার পর তার আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এলাকায় আপন নিবাস নামে একটি হাউজিং প্রকল্প হাতে নেন। কিছু দিনের মধ্যেই জাকির হোসেন শতশত বিঘা জমির মালিক হয়ে যান। পাশাপাশি তার আরো একটি হাউজিং প্রকল্প হাতে নেন। এভাবে কয়েক বছরের মধ্যে শত শত কোটি টাকার মালিক বনে যান জাকির হোসেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে অনেক ভুক্তভোগী তার বাড়িঘর জমি হারিয়ে অসায় হয়ে এখনো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। একমাত্র দিপুর পিএস হওয়ার কারণে অসহায় দায়িদ্র মানুষের সহায় সম্বল হাতিয়ে নিয়ে এখনও বহাল তবিয়াতে এই ভূমিদস্যু জাকির হোসেন। একটি সূত্র জানায়, জাকির হোসেন এক সময়ে কেরানীগঞ্জের আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হওয়ার কারণে শত শত অপকর্ম তিনি করেছেন। কোন বিচার হয়নি। ৫ আগস্টের পর দীর্ঘ সময় পলাতক ছিলেন। পরে স্থানীয় কিছু বি এন পি নেতাদের সাথে আতাত করে এখন লোকালয়ে প্রতি নিয়ত দেখা যায়। জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে কয়েকটি হত্যা মামলা রয়েছে। এলাকার ভুক্তভোগী মো. আমিনুল ইসলাম রাজু বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন। পিটিশন মামলা নং ১০৬৫/২৪ উক্ত মামলায় শেখ হাসিনা ১নং ওবায়দুর কাদেরসহ শতাধিক আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়। এ মামলায় ৩৭ নম্বর আসামি হাকির হোসেন। জাকির হোসেন সপ্তাহের একদিন ঢাকার তার ১৫ নম্বর ১৫তলার আলরাজি কমপ্লেক্স ভবন বিজয়নগর এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ যুবলীগদের নিয়ে রাতে মিটিং করেন রাতভর মিটিং চলে তার আলরাজি কমপ্লেক্স ভবনে। আওয়ামী লীগকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য গোপনে অর্থের যোগান দিচ্ছেন জাকির হোসেন। তিনি কিছু দিন আগে বিদেশ গিয়ে পলাতক নেতাদের সাথে গোপন মিটিং করেছেন। ৫ আগস্টের পর তিনি কয়েকবার বিদেশে গিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের পলাতকদের সাথে মিটিং করে দেশে ফিরে। তিনি গোপনে তা বাস্তবায়ন করেন। এ ব্যাপারে জাকির হোসেন জানান, যে সরকার দেশে আসে তাদের সাথে মিলে মিশে কাজ করতে হয়। তা না হলে ব্যবসা করা যায় না। তিনি দিপুর পিএস ছিলেন না বলে তাদের কোন সহযোগিতা তিনি পানানি। জমি দখলের অভিযোগেও অস্বীকার করেন তিনি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
আবু জাফর