ঢাকা , রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫ , ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
এই সরকার দিয়ে কোনো অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়-ডা. তাহের লাখো মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে যারা ধর্মের নামে রাজনীতির ব্যবসা করে, তাদের হাতে নারীরা নির্যাতিত-সালাহউদ্দিন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না-প্রধান উপদেষ্টা নারীদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়নের চিন্তা করলে ভুল হবে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকালীন ডিসি নিয়োগ পুলিশ দেখে ফেলে যাওয়া প্রাইভেটকারে মিললো এক লাখ পিস ইয়াবা তিন মাসে আয়ে প্রবৃদ্ধি তবুও তিতাসের লোকসান ২৪৯ কোটি টাকা প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখেই তরুণের আত্মহত্যা দুই দশকে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা আটগুণ বৃদ্ধি মুন্সিগঞ্জের ভাষানচর বালুমহল ইজারা ঘিরে অভিযোগ, হয়রানি বন্ধে তদন্তের দাবি কৃষি গুচ্ছ ভর্তির আবেদন শুরু ২৫ নভেম্বর, পরীক্ষা ৩ জানুয়ারি ভয়াবহ দুর্ভোগ হানিফ ফ্লাইওভারে! যৌনাচারের অভিযোগে ঢাবি শিক্ষক গ্রেফতার ইসলামী ব্যাংক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্বাচনের আগে গণভোট চায় ৮ দল আমি পাশে না দাঁড়ালে গ্রামীণ ব্যাংকের অনেক স্থাপনা থাকতো না-কাদের সিদ্দিকী স্কুলে ভর্তিতে কোটা নিয়ে আপত্তি অভিভাবকদের দেশে দ্রুত কমছে খাদ্যের মজুত ট্রাভেল এজেন্সি অধ্যাদেশ-২০২৫ বাতিলের দাবি
মানবতাবিরোধী অপরাধ

দণ্ডিত নেতাদের উত্তরসূরিরা নির্বাচনে ভোটের মাঠে

  • আপলোড সময় : ১৪-১০-২০২৫ ০৫:৩১:৪৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৪-১০-২০২৫ ০৫:৩১:৪৯ অপরাহ্ন
দণ্ডিত নেতাদের উত্তরসূরিরা নির্বাচনে ভোটের মাঠে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দামামা বাজছে জোরেশোরে। প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত রাজনৈতিক দলগুলো। বিএনপি শিগগির চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার কথা জানিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী ঘোষণা করেছে বেশ আগে। এবার নির্বাচনের মাঠে প্রধান এ দুই দলের নেতাদের উত্তরসূরিদের দেখা যেতে পারে নির্বাচনের মাঠে। এর মধ্যে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন নেতার সন্তানরা দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। জামায়াত সূত্রে জানা যায়, মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাসেম আরমান ঢাকা-১৪ আসনে নির্বাচন করবেন। আরমান ২০১৬ সালে গুম হন। ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট মুক্তি পেয়ে তিনি ফিরে আসেন। ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা মীর কাসেম আলী কখনো সংসদ নির্বাচন করেননি। তবে তিনি ২০০১ সালে জন্মস্থান মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচনের জন্য প্রচারণা চালিয়েছেন বলে জানা যায়। ২০১৬ সালে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির ও একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে নাজিবুর রহমান মোমেন প্রার্থী হচ্ছেন পাবনা-১ আসনে। জানা যায়, ১৯৯১ ও ২০০১ সালে এ আসনটি জামায়াতের দখলে ছিল। সংসদ সদস্য ছিলেন মতিউর রহমান নিজামী। মাওলানা নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় ২০১৬ সালে। নির্বাচনের বিষয়ে ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন বলেন, মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। কিন্তু দেশে এখনো ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পরিবর্তন ও কাঠামোগত সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ ভোটকেন্দ্র দখল, ভোট কাটাসহ জনগণ এখনো নানারকম ভীতির মধ্যে রয়েছে। এক্ষেত্রে আগে এ জায়গা থেকে জনগণকে শঙ্কামুক্ত করা উচিত। পিরোজপুরের দুই আসনে নির্বাচন করবেন মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর দুই পুত্র। মাসুদ সাঈদী পিরোজপুর-১ ও শামীম সাঈদী পিরোজপুর-২ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। মাসুদ সাঈদী ২০১৪ সালে পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিরোজপুর-১ আসনে দুবারের সংসদ সদস্য ছিলেন। সাঈদী ২০২৩ সালে কারান্তরীণ থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তৎকালীন বিএসএমএমইউ) মারা যান। সাঈদীর দুই পুত্রই এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা ও সমাবেশ করছেন। বাবার পরিচিত মুখ জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে আশা করছেন তারা। পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাসুদ সাঈদী বলেন, আসনটি মূলত আল্লামা সাঈদীর আসন। বাবাকে অনুসরণ করেই আমি কাজ করে যাচ্ছি। বাবার প্রতি মানুষের যে শ্রদ্ধা, আশা করি ভোটেও সেটা প্রভাব ফেলবে। আমার বাবা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে পিরোজপুরের মানুষ গভীরভাবে ভালোবাসে। তিনি এই আসন থেকে টানা দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার আমলে পিরোজপুরের উন্নয়নে এমন অনেক কাজ হয়েছে, যা বিগত ৪০-৫০ বছরে দেখা যায়নি। এজন্যই আজও পিরোজপুরের মানুষ উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে আল্লামা সাঈদীকে স্মরণ করে। তিনি বলেন, জামায়াত আমাকে মনোনীত করেছে। আমার ভাইকেও মনোনীত করেছে। পিরোজপুরের মানুষের সমর্থনও আছে আমাদের দুই ভাইয়ের প্রতি। জিয়ানগর উপজেলার চেয়ারম্যান হিসেবে ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছি। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করার সময় এলাকার মানুষ আমার কর্মকাণ্ড, কমিটমেন্ট, সততা ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের সব দিক ভালোভাবেই দেখেছে। আমার সফলতা বা ব্যর্থতা সব কিছু সম্পর্কে জনগণ জানে। তারা জানে, আমি দুর্নীতি করিনি, স্বজনপ্রীতিতে জড়াইনি। এজন্যই এলাকাবাসীর সঙ্গে আমার একটি গভীর আস্থা ও সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। জামায়াতে ইসলামী সহকারী সেক্রেটারি এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, জামায়াতে ইসলামীতে বাবার আসনে যাদের নমিনেশন দেওয়া হয়েছে, তারা সবাই সৎ এবং যোগ্য। বিগত ১৫ বছর তারাও নানা অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বাবা এমপি ছিলেন, তাই ছেলেকে নমিনেশন-বিষয়টি এমন নয়। এলাকার মানুষের বিপুল সমর্থন রয়েছে তাদের প্রতি। কাজও করে যাচ্ছেন। স্বৈরাচারী সরকারের আমলে ২০১৪ সালে পিরোজপুরে আল্লামা সাঈদীর পুত্র শামীম সাঈদী বিপুল ভোটে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। জামায়াত বিভিন্ন চিন্তাভাবনা করেই প্রার্থী দেয়। বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপি থেকে জয়পুরহাট-১ (কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর) আসনে প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী ও মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আবদুল আলীমের ছেলে ফয়সাল আলিম। আবদুল আলীম ২০১৪ সালের ৩০ আগস্ট বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (তৎকালীন বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে প্রার্থী হয়েছেন মানবতাবিরোধী অপরাধে বিএনপির আরেক দণ্ডপ্রাপ্ত নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম বিন কাদের চৌধুরী। ২০১৫ সালে ছয়বারের সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। হুম্মাম তার নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। দলের মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়েও আশাবাদী। চট্টগ্রামের রাজনীতিতে তিনি বেশ সরব। তবে মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয়। বিএনপি কোনো আসনেই প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি। বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিম বলেন, জয়পুরহাটে সবাই সমানতালে কাজ করে যাচ্ছে। ফয়সাল আলিমের বাবা বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ছিলেন, তার ত্যাগ দল বিবেচনা করবে। প্রতিটি প্রার্থী আমাদের যোগ্য। তবে দল যাদের নমিনেশন দেবে তারাই নির্বাচন করবেন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স