তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার, নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিতে ১২ দফা দাবি জানিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলোর জোট আরএমজি ওয়ার্কিং গ্রুপ কোর কমিটি। গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্কপের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কাদের হাওলাদার, ডব্লিউএফটিইউ-বিসির মেম্বার সেক্রেটারি রাজেকুজ্জামান রতন, আইবিসির সভাপতি কুতুবউদ্দিন আহমেদ, এনসিসিডব্লিউইয়ের মেম্বার সেক্রেটারি নইমুল আহসান জুয়েল ও শাকিল আখতার চৌধুরী এবং জি-স্কপের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী রুহুল আমিন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি শ্রমজীবী মানুষ। দেশে প্রায় সাত কোটি সত্তর লাখ শ্রমজীবী মানুষ রয়েছে, যাদের অধিকাংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করেন। তৈরি পোশাক খাতে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ, যার বেশিরভাগ নারী। দেশের মোট রজফতানি আয়ের ৮২ শতাংশই আসে এই খাত থেকে। সংবিধান, শ্রম আইন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশন ও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা শ্রমিকদের অধিকারকে স্বীকৃতি দিলেও বাস্তবে তা অনেক ক্ষেত্রে কার্যকর হয়নি। শ্রম সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নেও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি দেখা যায়নি।
সংগঠনের উপস্থাপিত ১২ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-ইপিজেড ও এসইজেডসহ সব গার্মেন্টস শ্রমিকের জন্য একই শ্রম আইন প্রযোজ্য করা, ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করা ও ইউনিয়ন নেতাদের হয়রানি বন্ধ করা; গার্মেন্টস শিল্পের টেকসই উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সম্প্রসারণ ও বিদ্যমান শ্রমিকদের কাজের সুরক্ষা নিশ্চিত করা; জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা ও তা আইনি সুরক্ষার আওতায় আনা, কর্মস্থলে বিল্ডিং, ফায়ার ও ইলেকট্রিক সেফটি স্ট্যান্ডার্ড বাস্তবায়ন, স্বাস্থ্যসেবা ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা, পেনশন ও প্রভিডেন্ট ফান্ড বাধ্যতামূলক করা, শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু এবং দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের মানদণ্ড নির্ধারণ, সব গার্মেন্টস শ্রমিকের জন্য মানসম্মত আবাসন ও সামাজিক নিরাপত্তা জাল সম্প্রসারণ, ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি, পিতৃত্ব ছুটি চালু এবং কারখানাভিত্তিক ডে–কেয়ার কেন্দ্র স্থাপন; আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুযায়ী যৌন নিপীড়ন ও সহিংসতামুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা এবং নারী শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ পরিবহন চালু করা; শ্রম আদালতের সংখ্যা বৃদ্ধি, ডিজিটালাইজেশন ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) প্রক্রিয়া চালু করা, শ্রম পরিদর্শন ও প্রশাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, প্রযুক্তি ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝুঁকিতে থাকা শ্রমিকদের পুনঃদক্ষতা উন্নয়ন, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং মানবাধিকার ডিউ ডিলিজেন্স (এইচআরডিডি) বাস্তবায়ন এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করা। সংগঠনটি জানায়, ১৫ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠনের কাছে প্রস্তাবনা হস্তান্তর করা হবে। ২০ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত লিফলেট ও স্টিকার বিতরণ করা হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
গার্মেন্টস শ্রমিকদের ১২ দফা নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান
- আপলোড সময় : ১৩-১০-২০২৫ ০৭:৪৪:০৫ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৩-১০-২০২৫ ০৭:৪৪:০৫ অপরাহ্ন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
স্টাফ রিপোর্টার