ঢাকা , মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫ , ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
বৈধ পথে বিদেশ গমন ও মানব পাচার রোধে ফরিদপুরে আইএমও'র সংবাদ সম্মেলন জেল-জুলুম সহ্য করা নেতাকর্মীদের মনে রাখবে দল - ফরিদপুরে শামা ওবায়েদ গণভোট ও সনদ আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে -মির্জা ফখরুল নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই-আইন উপদেষ্টা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর অর্ধেকের বেশি তরুণ শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান মিয়া গোলাম পরওয়ারের প্রাথমিকের শিক্ষকদের কর্মবিরতি ক্লাসের বাইরে ১ কোটি শিক্ষার্থী মাঝারি ক্ষুধার দেশেও খাদ্যের অপচয় মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের দশম গ্রেড দেওয়াসহ ১১ দফা দাবি এস আলমসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা সেনাবাহিনীর সদস্য সরিয়ে নেওয়ার খবর গুজব, আগের মতোই মাঠে থাকছেন তারা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা স্যোশাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ রাখা বড় চ্যালেঞ্জ দারোয়ান থেকে শত কোটি টাকার মালিক মনিরুজ্জামান ইসলামী ব্যাংক থেকে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ, ৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা সিএমপির দুই থানার ওসি রদবদল ডিএনসিসির প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক ৩৪ টাকায় ধান, ৫০ টাকা কেজি দরে সেদ্ধ চাল কিনবে সরকার পাঁচ মামলায় হাইকোর্টে জামিন পেলেন সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী সেনা কর্মকর্তাদের হয়ে আর লড়ছেন না ব্যারিস্টার সরওয়ার
প্রতিবাদ করায় রোগীর স্বজনকে নির্যাতন

বিএমইউতে অনিয়ম সমালোচনার ঝড়

  • আপলোড সময় : ১২-১০-২০২৫ ০৭:৫১:১৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১২-১০-২০২৫ ০৭:৫১:১৩ অপরাহ্ন
বিএমইউতে অনিয়ম সমালোচনার ঝড়
অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা পিছু ছাড়ছে না বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ)। এবার আনসার সদস্যদের দিয়ে রোগীর স্বজনদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। রাজবাড়ী থেকে অসুস্থ মাকে নিয়ে বিএমইউতে এসে মারধরের শিকার হন রাজধানীর কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী রাতুল চৌধুরী। জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত ৬ অক্টোবর মাকে ডাক্তার দেখালে কয়েকটি পরীক্ষা দেওয়া হয়। ইকো আর আলট্রাসোনোগ্রাফি বাদে বাকিগুলো করা হয়। আলট্রাসোনোগ্রাফি করার জন্য সেদিন লাইনে দাঁড়ান তিনি। লাইনে দাঁড়ালে সেখান থেকে বলা হয় ৮টার দিকে আলট্রাসোনোগ্রাফি করা হয়। পরের দিন পরীক্ষা করার জন্য রাতুল আরো দুই ঘণ্টা আগে আসেন এবং লাইনে দাঁড়ালে হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয় ১৫ জনের বেশি আলট্রাসোনোগ্রাফি করা হবে না এবং পরের দিন আসতে বলা হয়। রাতুল ভোর সাড়ে ৫টার দিকে হাসপাতালে হাজির হন। এদিনও জানানো হয় ১৫ জনের বেশি আলট্রাসোনোগ্রাফি করা হবে না।
রাতুল চৌধুরী বলেন, পাশে একজন লোক এসে বলে আপনি আলট্রাসোনোগ্রাফি করবেন? এক হাজার টাকা লাগবে। আমি বললাম, সরকারি এখানে টাকা কেন লাগবে? সেখান থেকে রিসিট দেয়, সেখানে গিয়ে বললাম, আপনারা কী ১৫ জনের বেশি আলট্রাসোনোগ্রাফি করাবেন না? বলে না। পরে বলি, টাকা দিলে করবে বললো। আমাকে বলে আপনাকে জবাবদিহি করতে বাধ্য নই এবং চেয়ারম্যানের রুম দেখিয়ে দেয়।
রাতুল বলেন, আমরা ভুক্তভোগী কয়েকজন মিলে চেয়ারম্যানের রুমে যাই এবং চেয়ারম্যান বিদেশ থাকায় ওইখানে দায়িত্বরত লোকের সঙ্গে কথা বলি। তিনি জানান, এখানে ৩০ জনের আলট্রাসোনোগ্রাফি করা যাবে। আমরা বলি, সবারটাই করতে হবে। উনি বলেন, আপনি বেশি বুঝেন। ওখানে প্রায় ১০০ জন রোগী ছিলেন। তাকে বলি, আমাদেরকে তিন দিন ঘুরানো হয়েছে কেন? প্রতিবাদ না করলে তো আমাদের কারোই আলট্রাসোনোগ্রাফি হতো না এবং তিনি চলে যান। কিছুক্ষণ পর আনসার সদস্যরা আসেন ১৫-২০ জন। আমাদেরকে বলে, আমরা বিশৃঙ্খলা করছি। অথচ, আমরা সবাই শান্ত এবং কোনো ঝামেলা করি নাই। আনসার সদস্যরা বলে আপনাদের সঙ্গে দেখা করবেন হাসপাতালের পরিচালক। আমরা যেতে না চাইলে আমাদের ধাক্কা দিয়ে হাসপাতাল থেকে আনসার সদস্যরা নামিয়ে দেয়। রাতুল বলেন, বিষয়টি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা আমাকে আনসার বাহিনীর হাতে তুলে দেয়। আর ২০-২৫ জন আনসার সদস্য আমাকে টেনে হিছড়ে প্রশাসনিক ভবনে নিয়ে যায়। আর তারা নেওয়ার সময় আমাকে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করে। পরবর্তীতে আমাকে একটা রুমে ১০-১২ জন আনসার সদস্য আর ১৫/২০ জন হসপিটালের ডাক্তার লাঠি,  রড দিয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করে। একপর্যায়ে আমাকে উলঙ্গ করে মারা শুরু করে। এতে পরবর্তীতে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। আমার মা প্রশাসনিক ভবনের বাইরে চিৎকার করে বলতে থাকে তার ছেলেকে ছেড়ে দিতে। তখন তারা বলে আমি নাকি এখানে নেই। আমি নাকি গণপিটুনিতে মারা গেছি। আজ অনিয়মের কাছে হেরে গেলে জানবো মানবতার কবর হয়েছে। রাতুলকে মারধরকে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এবং সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে আনসার উপপরিচালক ও গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. আশিকউজ্জামানকে জানালে তিনি মারধরের ঘটনা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ঘটনা ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আনসার সদস্যরা রাতুলকে মারধর করেনি এবং পেশাদারত্বের পরিচয় দিয়েছে।
আনসারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সংঘটিত একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে আনসার সদস্যদের ভূমিকা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এ ধরনের প্রচার সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর। আগত সেবা প্রত্যাশীদের মধ্যে আল্ট্রাসনোগ্রামের দৈনিক সীমা পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় কিছুক্ষণ বাগবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। এ সময় দায়িত্বরত রেডক্রিসেন্ট কর্মীদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে উভয় পক্ষকে পৃথক করে পরিস্থিতি শান্ত রাখেন।
সংস্থাটি জানায়, পরবর্তীতে কিছু ব্যক্তি হাসপাতালের রেজিস্ট্রার মহোদয়ের কক্ষে অনাধিকার প্রবেশ করে উত্তেজনাপূর্ণ আচরণ করেন এবং মব সৃষ্টির চেষ্টা করেন। রেজিস্ট্রার মহোদয়ের অনুরোধে আনসার সদস্যরা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে মব নিয়ন্ত্রণে আনেন ও চিহ্নিত দুজন বিশৃঙ্খল  সৃষ্টিকারীকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেন। এ ঘটনায় দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পেশাদারত্ব, ধৈর্য ও সংযমের পরিচয় দিয়েছেন। কোনো সাংবাদিককে বাধা প্রদান বা সংবাদ প্রচারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়নি। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অসত্য। এ ঘটনার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সেদিন ঘটনাটি অবশ্যই নিন্দনীয়। তবে যতটুকু জেনেছি রোগীর স্বজনদেরও সেই ঘটনায় দায় ছিল। আমরা এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করেছি। তারা প্রতিবেদন জমা দিলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য