আগের বছর সংকট শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ৩২ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে। সর্বশেষ গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১.৯৩ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ১৯৩ কোটি ৬৯ লাখ ৪০ হাজার ডলারে। একই সময়ে অন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবায়ন পদ্ধতি অনুসারে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭.১২ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৭১২ কোটি ১৮ লাখ ২০ হাজার ডলার (বিপিএম ৬টি। গত বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আরিফ হোসেন খান। বর্তমান রিজার্ভ দেশে একটি স্বস্তির জায়গা তৈরি করেছে। ২০২৪ সালের মে মাসে রিজার্ভে এ যাবৎ কালের সবচেয়ে বড় পতন হয়। ওই সময়ে বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভের পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ২৪.১৯ বিলিয়ন ডলার। নিট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৮.৬৪ বিলিয়ন ডলার (বিপিএম৬)। এসময় রিজার্ভ বৃদ্ধিতে বৈদেশিক ঋণ সংগ্রহ, প্রবাসী আয়ের ডলারের প্রণোদনা বাড়ানো, বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আনতে প্রচার কার্যক্রম বৃদ্ধি, দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পরিমাণ বাড়ানো ও বৈধ কাগজপত্র দেখানোর ক্ষেত্রে শিথিল করাসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নেয় সরকার। ব্যাংকগুলোর ডলার কিনতে দামের ক্ষেত্রেও শিথিল করে। একই সময়ে রেমিট্যান্স, আমদানি ও রপ্তানি আয়ের ডলারের দাম আইএমএফ ঘোষিত সিঙ্গেল দামে আসার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু হুন্ডির দাপট কমাতে না পারার কারণে ভালো ফল মেলেনি। এসময় গত বছর জুন-জুলাই মাসে দেশে সরকার পতনের আন্দোলনকে দমনে দেশব্যাপী ইন্টারনেট বন্ধ ও ব্যাংকিং খাতের প্রশাসনিক ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে ডলারের চাহিদা ঠিক থাকলেও ডলার আসার পথ সংকুচিত হয়ে যায়। এর ফলে ডলার আবার ২৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তৎকালিন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পায়, আইএমএফ, এডিবি, জাইকা, কোরিয়ান ব্যাংক ও চীনের অবকাঠামো ব্যাংকের (এআইআইবি) ঋণের কিস্তি ছাড় হয় এবং হুন্ডি ও টাকার পাচার রোধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ফলে নতুন করে টাকা পাচার কমে আসে। এতে হুন্ডিতে লাগাম দেওয়া সম্ভব হয়। এসময়ে রেমিট্যান্সে প্রণোদনা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ডলার লেনদেনের বড় তিন খাত রেমিট্যান্স, আমদানি ব্যয় ও রপ্তানি আয়ে ডলারের দাম এক করতে সমর্থ হয়। ডলারের চাহিদা কমে আসার ক্ষেত্রে এ উদ্যোগও ভূমিকা রাখে। এর মাধ্যমে ডলারের অবৈধ চাহিদা কমে যায়। ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি বেড়েছে। গত তিন মাস বাণিজ্যক ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার কেনার পরিবর্তে দুই বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। এসব উদ্যোগের ফল বৈদেশিক মুদ্রা একটি স্বস্তির জায়গায় ফিরেছে। বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে প্রায় ছয় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি
- আপলোড সময় : ১১-১০-২০২৫ ০৬:৪৬:৪৫ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১১-১০-২০২৫ ০৬:৪৬:৪৫ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ