ঢাকা , শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫ , ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
আমরা দাসত্বের মধ্যে থাকতে চাই না -প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতরা যে কারও বাসায় যেতে পারেন-পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সব ধরনের ক্রিকেট বর্জনের ঘোষণা ক্লাব সংগঠনের ফের মাঠে নামছে এনসিপি আরও কঠিন হচ্ছে আ’লীগের ফেরার পথ বিএনপি চায় সংসদে জামায়াত গণভোটে আমতলীত ও তালতলীতে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা, জেলেদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে হাসপাতাল মর্গে বেওয়ারিশ লাশের স্তূপ যানজটে আটকা সড়ক উপদেষ্টা, ১২ কর্মকর্তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অফিস করার নির্দেশ রসায়নে নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী গণভোটে নোট অব ডিসেন্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আহ্বান আলী রীয়াজের দৈনিক জনতার প্রকাশক ছৈয়দ এম আন্ওয়ার হোসেনের তৃতীয় মৃত্যুবাষির্কী আজ আজ হংকংয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ ফিফার কমিটিতে বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল আমি আশাবাদী, আমরা ভালো করতে পারব : শমিত সিরিয়ার বিপক্ষে দারুণ জয় পেলো মেয়েরা ভারতের আম্পায়ারই কাল হলো বাংলাদেশের? ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াই করেও জিততে পারলোনা বাঘিনীরা বাংলাদেশ সফরের জন্য টেস্ট দল ঘোষণা দিলো আয়ারল্যান্ড প্রথমবারের মতো মাদ্রাসা ক্রিকেট চালু করতে যাচ্ছে বিসিবি

ভয়ংকর মেডিকেল বর্জ্য বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি

  • আপলোড সময় : ০৫-১০-২০২৫ ১২:১২:১০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৫-১০-২০২৫ ১২:১২:১০ অপরাহ্ন
ভয়ংকর মেডিকেল বর্জ্য বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি
* মানহীন হাসপাতালগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ঝুঁকিতে দেশ * সংস্কার না হলে ঝুঁকিতে পড়বে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য পরিবেশ দূষণ রোধ, জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার সঙ্গে জড়িতদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকরী চিকিৎসা বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করার কথা থাকলেও তা অনেকটা অমীমাংসিত রয়ে গেছে। ফলে ক্রমবর্ধমান এসব মেডিকেল বর্জ্য যেমন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তেমনি বাড়িয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ঝুঁকি। মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এসব বর্জ্য নিয়ে যেন অনেকটা দায়সারা ভাব হাসপাতাল ও সিটি করপোরেশনের। জানা গেছে, বাংলাদেশে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ এর অধীনে ২০০৮ সালে মেডিকেল বর্জ্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হলেও তা কাগজে কলমে আটকে রয়েছে। নীতিমালায় অন্যতম শর্ত ছিল মেডিকেল বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলতে থাকতে হবে নিজস্ব ব্যবস্থাপনা সঙ্গে আবশ্যিক জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়া। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালায় বলা হয়েছে, কঠিন বর্জ্য ধ্বংসের জন্য প্রতিটি হাসপাতালে মেডিকেল ইনসিনেরেটের, অটোক্লেভ মেশিনসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকতে হবে। কিন্তু রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে নেই অত্যাধুনিক কোনো ব্যবস্থা। অন্যদিকে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিকেল বর্জ্য অপসারণ ও ধ্বংস করার নির্দেশ থাকলেও, তা বরাবরই উপেক্ষিত। ফলে এসব বর্জ্য অপসারণের সঙ্গে যারা কাজ করেন তাদের যেমনি মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে, তেমনি পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। তবে অভিযোগ রয়েছে, পর্যাপ্ত লোকবল সংকট এবং কর্তৃপক্ষের নজদারির অভাবে এইসব মেডিকেল বর্জ্য দিনের পর দিন ভাগাড়ে পড়ে থাকে। পাশাপাশি বর্জ্য রিসাইকেল হয়ে পুনরায় রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহারেরও অভিযোগ করেছেন অনেকে। চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গাইডলাইনে বলা রয়েছে-হলুদ পাত্রে সংক্রামক বর্জ্য, সবুজ পাত্রে পুনঃচক্রায়ণযোগ্য বর্জ্য, লাল পাত্রে ধারালো বর্জ্য ও কালো পাত্রে সাধারণ বর্জ্য সংরক্ষণের নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু বর্জ্য অপসারণের সঙ্গে যারা কাজ করেন তারা অনেকেই জানেন না সংরক্ষণের প্রক্রিয়া। সরেজমিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বারডেমসহ বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে ডাস্টবিনে পলিথিনে মুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবং সাভার ও নারায়ণগঞ্জ এলাকার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল থেকে দৈনিক ১২-১৫ টন মেডিকেল বর্জ্য তৈরি হয়। স্বাস্থ্য ঝুঁকি জেনেও জীবিকার তাগিদে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা এসব বর্জ্য অপসারণে বাধ্য হন। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, বাংলাদেশের বর্তমান স্বাস্থ্যসেবার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতি বাস্তবায়ন থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। যেখানে শহরাঞ্চলে ৫৫ শতাংশ কঠিন বর্জ্য থাকছে উন্মুক্ত অবস্থায়। যা দূষণ, জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি ও জলবায়ু পরিবর্তনকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। প্রয়োজন মতো আইন প্রণয়নের মারাত্মক পরিণতি ও একটি সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা—এমনকি বাংলাদেশের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি দেখভালেরও একটি নিবেদিত কর্তৃপক্ষ নেই। দেশের মেডিকেল বর্জ্য উৎপাদন প্রতি বছর আনুমানিক ৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামগ্রিক বর্জ্য উৎপাদন প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। শুধু ঢাকায় দৈনিক প্রায় সাড়ে ছয় হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যা ২০৩২ সাল নাগাদ বেড়ে সাড়ে ৮ হাজার টনে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিশ্বব্যাংকের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিদিন ১৫ লাখ টনেরও বেশি কঠিন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে মাত্র ৪০ শতাংশ সংগ্রহ করা হয় এবং ১০ শতাংশেরও কম পুনরায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ‘হেলথকেয়ার ওয়েস্ট ইন বাংলাদেশ: কারেন্ট স্ট্যাটাস, দ্য ইমপ্যাক্ট অব কোভিড-১৯’ এবং সাসটেইনেবল ম্যানেজমেন্ট উইথ লাইফ সাইকেল অ্যান্ড সার্কুলার ইকোনমি ফ্রেমওয়ার্ক শীর্ষক এক গবেষণায় পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে যে, কোভিড-১৯ ও অন্যান্য জরুরি চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা বাদ দিলে ২০২৫ সালে বাংলাদেশ প্রায় ৫০ হাজার টন মেডিকেল বর্জ্য (প্রতি শয্যায় ১ দশমিক ২৫ কেজি) উৎপন্ন করবে। যেগুলোর মধ্যে ১২ হাজার ৪৩৫ টন বিপজ্জনক হবে। তবে ২০২২ সালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকায় প্রতিদিন প্রতি শয্যায় মেডিকেল বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ ১ দশমিক ৬৩ কেজি থেকে ১ দশমিক ৯৯ কেজি। কোভিড-১৯ মহামারির পরে এটির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) ২০১৫ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে কক্সবাজার জেলায় পাঁচটি মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুবিধা স্থাপন করেছে। এ ধরনের উদ্যোগ সত্তে¡ও মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ অব্যাহত রয়েছে, বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর এলাকায়। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নিয়ে মাসিক গোলটেবিল আলোচনা সিরিজ এসডিজি ক্যাফের ১২তম পর্বের আয়োজন করে ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস (ইউএনওপিএস) বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবরের এই অনুষ্ঠানে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান অন্বেষণ করা হয় এবং এসডিজি ১১, ১২ ও ১৩ তুলে ধরা হয়। এর লক্ষ্য হলো- ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিরোধ, হ্রাস, পুনর্ব্যবহার ও পুনঃব্যবহারের মাধ্যমে বর্জ্য উৎপাদন হ্রাস করা। অনুষ্ঠানটিতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. রওশন মমতাজ। তিনি তার প্রবন্ধে বাংলাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংকটের বাস্তবতা তুলে ধরেন। তিনি একটি বড় পরিবারের বর্জ্য পৃথকীকরণ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে উল্লেখ করেন, প্রতি ১৫ বছরে বর্জ্যের পরিমাণ দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশের অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, পৃথকীকরণের অভাব ও দুর্বলভাবে পরিচালিত ল্যান্ডফিলগুলো পরিবেশগত সমস্যাগুলোকে আরও বাড়াচ্ছে। ড. মমতাজ তিনটি আর অর্থাৎ হ্রাস, পুনঃব্যবহার ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার ওপর জোর দিয়েছেন। অতিরিক্ত উৎপাদক দায়বদ্ধতা (ইপিআর) অবশ্যই একটি টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাঠামো বিকাশের জন্য বাস্তবায়ন ও প্রয়োগ করতে হবে। ইউএনওপিএস বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সুধীর মুরালিধরন বলেন, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শুধু নিষ্পত্তি নয়; এটি আমাদের ভোগের ধরনগুলো পুনরায় আকার দেওয়া ও স্থায়িত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ও। যদিও মেডিকেল বর্জ্য বাংলাদেশের মোট কঠিন বর্জ্যের মাত্র ১ শতাংশ হলেও এর ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা পুরো বর্জ্য প্রবাহকে দূষিত করে ও বিপজ্জনক করে তোলে। নিয়ন্ত্রক কাঠামো ও এর সীমাবদ্ধতা: বাংলাদেশ সরকার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অনুশীলন বাড়ানোর জন্য জাতীয় থ্রিআর কৌশল প্রণয়ন করেছে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম উন্নত করতে এসব কৌশল অন্তর্ভুক্ত করেছে। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১-এ প্রথমবারের মতো এক্সটেন্ডেড প্রডিউসার রেসপনসিবিলিটি (ইপিআর) চালু করা হয়েছে। এই বিধিমালা সত্তে¡ও, বাংলাদেশ এখনও মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি নিবেদিত কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। এর পরিবর্তে প্রিজম বাংলাদেশ, ওয়েস্ট কনসার্ন, সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (সিএসডি), এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) এবং আইসিডিডিআর,বি’র মতো সংস্থাগুলো মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ করে ঢাকায় নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে, হাসপাতালের কিছু কর্মী সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতের পরিবর্তে পুনর্ব্যবহারযোগ্য মেডিকেল বর্জ্য (যেমন কাচের বোতল, সিরিঞ্জ, স্যালাইন ব্যাগ ও বøাড ব্যাগ) অসাধু পুনর্ব্যবহারযোগ্য বর্জ্য সংগ্রহকারীদের কাছে বিক্রি করে। একটি চক্র ওষুধের দোকান, হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে বিক্রি করার আগে প্রয়োজনীয় জীবাণুমুক্তকরণ ছাড়াই এই উপকরণগুলো পরিষ্কার ও পুনরায় প্যাকেজ করে বলে জানা গেছে। ২০০৮ সালের মেডিকেল বর্জ্য (ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট) বিধিমালা অনুসারে, হাসপাতালগুলোকে পুনরায় ব্যবহার রোধ করতে প্লাস্টিকের টিউব ও অন্যান্য বর্জ্য উপকরণগুলো কেটে বা ছিদ্র করে দিতে হয়। তবে টিআইবির গবেষণায় দেখা গেছে, ৩১ শতাংশ হাসপাতালে এই নিয়ম মানতে ব্যর্থ হয় এবং ৪৯ শতাংশ হাসপাতালে সুই ধ্বংসকারী যন্ত্রের অভাব রয়েছে। ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত ‘গভর্নেন্স চ্যালেঞ্জেস ইন মেডিকেল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক এক গবেষণায় ৪৫টি জেলার হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন ও পৌর কর্তৃপক্ষসহ ৯৩টি মেডিকেল বর্জ্য কর্মী ও ২৩১টি প্রতিষ্ঠানের ওপর জরিপ চালানো হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মকানুন মেনে না চলা এবং তদারকির অভাব রয়েছে। যদিও ২০০৮ সালের বিধিমালা প্রকাশের তিন মাসের মধ্যে একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও এখনও তা আলোর মুখ দেখেনি। এর পরিবর্তে সিটি করপোরেশন ও হাসপাতালগুলো লাইসেন্সবিহীন ঠিকাদারদের কাছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আউটসোর্স করেছে। স্বচ্ছতা ও সমন্বয়ের অভাব: ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ইউএনবির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি নিয়ে কথা বলতে চায় না। অনেক হাসপাতাল এখনও উচ্চ বাছাই ব্যয় ও প্রয়োগকারী ব্যবস্থার অভাবের কথা উল্লেখ করে সাধারণ আবর্জনা হিসাবে বর্জ্য অপসারণ করে। তাছাড়া মেডিকেল বর্জ্য ট্র্যাক করার কোনো কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ নেই। গবেষণায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মও উঠে এসেছে। সরকারি হাসপাতালে চাকরির জন্য এক থেকে দুই লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব অগ্রগতিকে আরও বাধাগ্রস্ত করছে। আমলাতান্ত্রিক অদক্ষতার কারণে বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরে জাতীয় উপদেষ্টা কমিটি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির অনেকাংশেই অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মেডিকেল বর্জ্য নিয়ে যে নীতিমালা হয়েছে বাস্তবে এর প্রতিফলন ঘটেনি। দায়িত্বশীলদের কর্তব্যে অবহেলা ও জবাবদিহিতার অভাবকে দায়ী করেন তিনি। মেডিকেল বর্জ্যে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং বাস্তু মানুষের নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় সহযোগিতায় সচেতন থাকার কথা, সেগুলোর কিছুই হয়নি। অথচ যে সমস্যা সেটা আরও বাড়ছে। সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এগিয়ে এলে বর্জ্য নিয়ে চলতে থাকা দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা থেকে মুক্তি মিলবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে অবিলম্বে সংস্কার ও একটি নিবেদিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা না হলে মারাত্মক পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স