২৩ বছর আগে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার সনি হত্যা মামলায় সাজাভোগ শেষ করার পর মুশফিক উদ্দীন টগর অস্ত্র ব্যবসায় জড়ান বলে জানিয়েছে র?্যাব। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর আজিমপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব বলছে, সীমান্তবর্তী এলাকা হতে অবৈধভাবে অস্ত্র সংগ্রহ করে ঢাকায় এনে বিভিন্ন মানুষকে সরবরাহ করতেন টগর। সনি হত্যা মামলায় সাজাভোগের পর টগর ২০২০ সালের ২০ আগস্টে কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে ৩২ এমএম ১টি রিভলভার, ১টি ম্যাগাজিন, ১টি কাঠের পিস্তলের গ্রিপ, ১৫৫ রাউন্ড .২২ রাইফেলের গুলি, ১টি ৭.৬২ এমএম মিসফায়ার গুলি, ১টি শর্টগানের খালি কার্তুজ, মানুষের মুখায়বের দুটি মুখোশ ও ২টি মোবাইল জব্দ করা হয়। শুক্রবার কারওয়ান বাজার র?্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন। তিনি বলেন, টগরকে গ্রেপ্তারে প্রথমে আমরা সনি হত্যার বিষয়টা মূল্যায়ন করিনি। আমরা অস্ত্র উদ্ধারে গিয়েছিলাম, পরে অবগত হই তিনি ওই মামলার আসামি। টগর সনি হত্যা মামলায় প্রথম গ্রেপ্তার হন ২০০২ সালের ২৪ জুন। এরপর ২০২০ সালে কারামুক্তির পর থেকে তিনি স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিলেন। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। তার দেওয়া তথ্যনুযায়ী আমাদের অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রম চলমান থাকবে। এক প্রশ্নের জবাবে লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন বলেন, সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে বুঝতে পারি, তার কাছে আরও অস্ত্রের সন্ধান থাকতে পারে। মাত্র গতকালই (গত বুধবার) তাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। আমরা কিছু নম্বর পেয়েছি, সেগুলো নিয়ে কাজ করব। রাজনৈতিক পরিচয়ের বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, যিনি অপরাধী, তিনি অপরাধীই। তাকে কোনো দলও গ্রহণ করে না। আমরা তাকে অপরাধী হিসেবেই বিবেচনা করছি। তার কাছে যা পাচ্ছি, সেটার বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করছি। টগরের বিরুদ্ধে মুগদা থানায় একটি মাদকের মামলা রয়েছে জানিয়ে র্যাব কর্মকর্তা আরেফীন বলেন, সনি হত্যা মামলায় সাজাভোগের পর তিনি মুক্তি পান। বর্তমানে অস্ত্র মামলায় নতুনভাবে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। টগর অস্ত্র এনে কাকে দিয়েছেন, সে তথ্য পেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ, ২০০২ সালের ৮ জুন বুয়েটে দরপত্র নিয়ে ছাত্রদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান কেমিকৌশল বিভাগের ছাত্রী সাবেকুন নাহার সনি। এই ঘটনায় বুয়েট ছাত্রদল সভাপতি মোকাম্মেল হায়াত খান মুকি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলের টগর গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। দীর্ঘ আন্দোলনের পর এ ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। নিম্ন আদালতে মুকি, টগর ও নুরুল ইসলাম সাগরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তবে, ২০০৬ সালের ১০ মার্চ হাইকোর্ট তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বাতিল করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। এই মামলার অন্য দুই আসামি এসএম মাসুম বিল্লাহ এবং মাসুমকে হাইকোর্ট খালাস দেয়। মুকি এরপর অস্ট্রেলিয়ায় পালিয়ে যান এবং সাগরও পলাতক রয়েছেন। টগর গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন, এবং সম্প্রতি র?্যাব তাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

বুয়েট ছাত্রী সনি হত্যায় কারাভোগ শেষে অস্ত্র ব্যবসায় জড়ান টগর
- আপলোড সময় : ২০-০৯-২০২৫ ১০:২৬:৩৫ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২০-০৯-২০২৫ ১০:২৬:৩৫ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ