ঢাকা , শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫ , ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সালমান এফ রহমানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা খরায় পুড়ছে চা-বাগান উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা ইফতারিতে দই-চিড়ার জাদু একরাতে দু’জনকে কুপিয়ে হত্যা এলাকায় আতঙ্ক স্বাভাবিক নিত্যপণ্যের বাজার, সংকট সয়াবিনে মামলা থেকে স্বামীর নাম বাদ দেয়ার কথা বলে স্ত্রীকে ধর্ষণ ছেঁউড়িয়ায় শুরু লালন স্মরণোৎসব দোহাজারীতে বাসচাপায় ৩ জন নিহত হেনস্তার পর ছাত্রীকে ফেলে দিলো দুর্বৃত্তরা ৫৬০ মডেল মসজিদ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ভ্যাট দেয় না বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরনের কাপড় টিভি ফ্রিজ খাট টাকা সব পুড়ে শেষ বস্তিতে আগুন ঢাকা মেডিকেলের আউটডোরে চিকিৎসা বন্ধ পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধির রেকর্ড ঠাকুরগাঁও হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া শিশু গাজীপুরে উদ্ধার মাগুরার সেই শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হাসিনাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ডাক্তার দেখাতে না পেরে রোগীদের বিক্ষোভ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অভিমুখী চিকিৎসকদের পদযাত্রায় বাধা প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিলো পুলিশ

নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ

  • আপলোড সময় : ০১-০৬-২০২৪ ১১:৫৭:১১ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০১-০৬-২০২৪ ১১:৫৭:১১ অপরাহ্ন
নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ
নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ উঠে এসেছে এই পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে গঠন করা কমিটির প্রতিবেদনে। কমিটির সুপারিশে চ্যালেঞ্জের কথা যেমন বলা হয়েছে, তেমনি মোকাবিলায় করা হয়েছে কিছু সুপারিশও। তবে এসব চ্যালেঞ্জ উত্তরণে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে মোকাবিলা করতে হবে আরও অনেক চ্যালেঞ্জ। ২০২৫ সালে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন কার্যক্রম ও মূল্যায়নের পর বোঝা যাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কতটা সফল সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্তকরণ কমিটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে ষান্মাসিক, বার্ষিক মূল্যায়ন এবং পাবলিক মূল্যায়নের পদ্ধতি কেমন হবে তা বলা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখার আলোকে ইতোমধ্যে পাঠদান, ষান্মাসিক ও বার্ষিক মূল্যায়ন পদ্ধতি নির্ধারণের আলোকে সুপারিশ করা হয়েছে। শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠদান শুরু হয় এবং বার্ষিক মূল্যায়ন শেষ করা হয়। চলতি বছর ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ষান্মাসিক মূল্যায়নের রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে ইতোমধ্যে।
গতানুগতিক পরীক্ষা পদ্ধতিতে অভ্যস্ত অভিভাবকদের একটি অংশ শিক্ষকদের প্রতি আস্থাহীনতার কথা জানিয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এরপর মূল্যায়ন পদ্ধতি অভিভাবকদের কাছে স্পষ্ট করতে উদ্যোগও নেয় মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ গুলো হলো; ১. সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত আদর্শ মানে নেই। ২. শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত ও মানসম্মত শিক্ষকের অভাব। ৩. তথ্যপ্রযুক্তি ক্লাসরুম সুবিধা,অডিও ভিজ্যুয়াল সুবিধার অপর্যাপ্ততা। ৪. নৈপুণ্য অ্যাপ ব্যবহারে শিক্ষকদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার অভাব। ৫. মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনায় শিক্ষকদের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে সংশয়। ৬. পাবলিক মূল্যায়নে বিষয়ভিত্তিক প্রত্যবেক্ষকের অপ্রতুলতা। ৭. যথাযথ শিখন পরিবেশের অভাব। অভিভাবক ও অংশীজনের শিক্ষাক্রম সম্পর্কে ধারণাগত অস্পষ্টতা। ৮. মূল্যায়ন কার্যক্রমে বিষয়বস্তু নির্ভর লিখিত পরীক্ষার স্বল্পতা। শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে গঠিত কমিটির সদস্যদের মতামত ও চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় নিয়ে সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। মূল্যায়ন পদ্ধতিতে যোগ্যতা ও কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নের পাশাপাশি লিখিত (পরীক্ষা) মূল্যায়ন রাখা যেতে পারে। আন্তঃসম্পর্ক বজায় রেখে লিখিত মূল্যায়নের ওয়েটেজ (মূল্যায়ন) ৫০% এবং কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নের ওয়েটেজ (মূল্যায়ন) ৫০% করা যেতে পারে। স্কুলভিত্তিক ষান্মাসিক ও বার্ষিক মূল্যায়ন এবং পাবলিক মূল্যায়ন একই পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। চূড়ান্ত মূল্যায়ন সনদ বা ট্রান্সক্রিপ্টে মূল্যায়নের ৭ পর্যায়ের স্কেলে যোগ্যতা ও পারদর্শিতার সূচকের বিষয়টি অভিভাবক এবং অংশীজনদের অবহিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ অনুযায়ী শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোন কোন দেশের মডেলকে পর্যালোচনা করা হয়েছে এবং কোন কোন দেশে এই মডেল সফল বাস্তবায়ন হয়েছে এবং মূল্যায়ন পদ্ধতির আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে অংশীজনকে অবহিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। চূড়ান্ত মূল্যায়ন পদ্ধতি ও গাইডলাইনের আলোকে নৈপুণ্য প্ল্যাটফর্ম হালনাগাদ করা যেতে পারে এবং এ বিষয়ে শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা যেতে পারে।
শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন নিয়ে চ্যালেঞ্জ ?উল্লেখের পাশাপাশি তা উত্তরণে সুপারিশও করা হয়েছে কমিটির প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকারের মতামতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে আমরা একটি মূল্যায়ন পদ্ধতির মধ্যে আছি। বর্তমানে সম্পূর্ণ ভিন্ন মূল্যায়ন পদ্ধতি উপস্থাপন করা হয়েছে। বর্তমান পুরো মূল্যায়ন পদ্ধতিটা শিক্ষকদের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কার্যক্রম, যোগ্যতা ও আচরণ পর্যবেক্ষণ করে মূল্যায়ন করবেন। এখানে শিক্ষার্থীরা কী যোগ্যতা অর্জন করলো সেটির কোনও লিখিত মূল্যায়ন পদ্ধতি না থাকায় পুরো মূল্যায়ন পদ্ধতিটা শিক্ষকদের পর্যবেক্ষণের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এতে একদিকে যেমন যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়া বা পক্ষপাতমূলক মূল্যায়নের সুযোগ থেকে যায়, অপর দিকে শিক্ষার্থীদের নিজস্ব যোগ্যতার মাপকাঠি নির্ধারণ করা সম্ভব হয় না।
উদাহরণ হিসেবে বোর্ড চেয়ারম্যানের মতামতে কর্মমুখী শিক্ষা ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতির উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, শিক্ষকরা শিখনকালীন মূল্যায়ন শেষে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ফলাফল কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাঠান। এতে শিক্ষার্থীরা প্রায় শতভাগ নম্বর পাচ্ছে, তবে তাদের সঠিক শিখন অর্জিত হচ্ছে কিনা এ বিষয়ে সন্দেহ থেকে যাচ্ছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের মতামতে আরও বলা হয়েছে, শিখনকালীন অভিজ্ঞতা (বীঢ়বৎরবহপব) ও কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়ন শতকরা ৫০ ভাগ হতে পারে এবং লিখিত মূল্যায়ন ৫০ ভাগ হতে পারে। যেদিন পরীক্ষা সেদিনের জন্য সে বিষয়ের শিক্ষক যোগ্যতাভিত্তিক কার্যক্রমের প্রত্যবেক্ষক হিসেবে থাকতে হবে এবং প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একই বিষয়ের এত প্রত্যবেক্ষক পাওয়া যাবে না। কারণ একই বিষয় বা একই ধরনের প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর ১ জন পর্যবেক্ষক দেয়ার মতো শিক্ষক আমাদের নেই।
বোর্ড চেয়ারম্যানের এই প্রস্তাবনার বিপরীতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, পাবলিক মূল্যায়ন বা পরীক্ষা ইতোপূর্বে যেভাবে আয়োজন করা হতো এখনও সেভাবেই থাকবে। লিখিত উত্তরপত্রগুলো কোডিং হবে, পর্যবেক্ষক সবই থাকবেন। যেদিন যে বিষয়ে পরীক্ষা হবে প্রত্যবেক্ষক শুধু সেই বিষয়ের হতে হবে। প্রতি ২০ জন পরীক্ষার্থীর জন্য একজন বিষয়ভিত্তিক প্রত্যবেক্ষক লাগবে। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ের শিক্ষকও প্রত্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। যেমন- বাংলা ভাষার জন্য ইংরেজি ভাষার শিক্ষক প্রত্যবেক্ষক হতে পারবে। পাবলিক মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কার্যক্রমভিত্তিক ও লিখিত মূল্যায়নে সম-ওয়েটেজ সম্ভব হবে এবং এতে আন্তসম্পর্ক থাকবে। তবে কমিটির সুপারিশে বলা হয়, আন্তঃসম্পর্ক বজায় রেখে লিখিত মূল্যায়নের ওয়েটেজ (মূল্যায়ন) ৫০ শতাংশ এবং কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নের ওয়েটেজ (মূল্যায়ন) ৫০ শতাংশ করা যেতে পারে। স্কুলভিত্তিক ষাণ্মাসিক ও বার্ষিক মূল্যায়ন এবং পাবলিক মূল্যায়ন একই পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। যদিও সর্বশেষ পাবলিক সামষ্টিক মূল্যায়নে এখন পর্যন্ত লিখিত অংশের ওয়েটেজ ৬৫ শতাংশ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আর কার্যক্রমভিত্তিক অংশের ওয়েটেজ রাখা হচ্ছে ৩৫ শতাংশ। মোট ৫ ঘণ্টার (বিরতিসহ) পাবলিক মূল্যায়নে কার্যক্রমভিত্তিক লিখিত অংশে থাকছে অ্যাসাইনমেন্ট, উপস্থাপন, অনুসন্ধান, প্রদর্শন, সমস্যা সমাধান, পরিকল্পনা প্রণয়নসহ অন্যান্য বিষয়। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ধারাবাহিকভাবে দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ বছরব্যাপী চলতেই থাকবে। প্রশিক্ষণ দিয়ে মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করা হয়েছে। তারা বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। অভিভাবকরা একসময় বুঝতে পারবেন সব কিছু। শিক্ষার্থীদের কোনও সমস্যা হচ্ছে না। ফলে চ্যালেঞ্জ থাকলেও আমরা মোকাবিলাও করতে পারবো।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, নিয়মিত প্রশিক্ষণ অব্যাহত থাকবে, নতুন কিছু শুরু করলে চ্যালেঞ্জ তো থাকেই, কিন্তু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা ক্যাডারের এক কর্মকর্তা বলেন,নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী লেখাপড়া এবং মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অবকাঠামো উন্নয়ন খুবই জরুরি। নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত কমাতে হবে। আর সে কারণে অনেক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। এসব সমস্যার সমাধান রাতারাতি সম্ভব না। সে কারণেই সুন্দর একটি কারিকুলাম বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জ থেকেই যাবে,যা ধীরে ধীরে মোকাবিলা করতে হবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষক সংকট মেটাতে হবে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ অব্যাহত রাখতে হবে। শিক্ষকদের মানোন্নয়ন ছাড়া কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা দুরূহ। তাছাড়া শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করছেন কিনা তা দেখবে কে? সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হলে মাঠপর্যায়ে সুপারভাইজার বাড়াতে হবে। আর এসব কারণেই গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষায় ব্যাপক বিনিয়োগ করতে হবে।

 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স