রাজকীয় জাঁকজমকপূর্ণ আতিথেয়তার পর প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার বিস্তৃত আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাজ্যে দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফর গতকাল বৃহস্পতিবার এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মোড় নেয়। লন্ডন থেকে বার্তা সংস্থা এএপি এ খবর জানিয়েছে। সফরের দ্বিতীয় দিনে স্টারমার তার সরকারি বাসভবন চেকার্সে ট্রাম্পকে অভ্যর্থনা জানাবেন। উভয় নেতার মধ্যে এই বৈঠকে বাণিজ্য, ইউক্রেন ও গাজা যুদ্ধসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আলোচ্যসূচিতে থাকবে। ট্রাম্পের কাছ থেকে ইউক্রেনের যুদ্ধের ক্ষেত্রে কিয়েভের জন্য আরও প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্টারমার মার্কিন নেতা ও ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছেন। ট্রাম্পের প্রতি স্টারমারের উষ্ণ সুর বাণিজ্য যুদ্ধে কিছুটা নমনীয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়। মে মাসে হোয়াইট হাউসে দুই দেশ একটি ‘অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি চুক্তি’ স্বাক্ষর করে। বাণিজ্য ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য আরও ছাড় পাবে বলে আশা করছে। এটি অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক শূন্যে নামিয়ে আনতে আগ্রহী। কিন্তু ট্রাম্পের মন্তব্য নতুন কোনো চুক্তি আসন্ন নয় বলে ইঙ্গিত দেয়। ব্রিটেনে যাওয়ার প্রাক্কালে ট্রাম্প বলেন, ‘তারা দেখতে চায় যে আরও ভালো চুক্তি পেতে পারে কি-না। তাই, আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলব।’ তবে, মাইক্রোসফট ৩০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের পরিকল্পনা প্রকাশ করার পর, মার্কিন বেসরকারি ইকুইটি জায়ান্ট ব্ল্যাকস্টোন আগামী দশকে যুক্তরাজ্যের প্রকল্পগুলোয় ৯০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করলে স্টারমার এতে উৎসাহ বোধ করেন। অন্যদিকে, ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারক গোষ্ঠী জিএসকে ঘোষণা করেছে যে তারা আগামী পাঁচ বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। গত বুধবার মার্কিন নেতা এক আনন্দঘন সময় কাটান। যুক্তরাজ্যের পূর্ণ জাঁকজমক উপভোগ করেন তিনি। রাজা তৃতীয় চার্লস ট্রাম্পকে উইন্ডসর ক্যাসেলে তোপধ্বনি ও গার্ড অব অনারের মাধ্যমে স্বাগত জানান। তাকে ১ হাজার ৩০০ সেনা সদস্য ও ১২০টি ঘোড়া নিয়ে গড়া বিশেষ গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। ব্রিটিশ কর্মকর্তারা একে স্মরণকালে ব্রিটেনে সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রীয় সফর বলে অভিহিত করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিমানের একটি যৌথ ফ্লাইপাস্ট দেখার কথা ছিল ট্রাম্পের। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে আমেরিকান বিমানগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। গত বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও রাজা তৃতীয় চার্লস রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় অংশ নেন। রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, মিডিয়া মোগল রুপার্ট মারডক, অ্যাপলের সিইও টিম কুক ও গল্ফার নিক ফাল্ডোসহ ১৬০ জন অতিথি এ সময় উপস্থিত ছিলেন। নৈশভোজের আগে, ট্রাম্প অতিথিদের বলেন, এই রাষ্ট্রীয় সফর ‘সত্যিই আমার জীবনের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মান।’ রাজা তার ভাষণে, বিশ্বের সবচেয়ে জটিল কিছু সংঘাতের সমাধান খুঁজে বের করার জন্য ট্রাম্পের ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন। তবে ট্রাম্পের সফর ঘিরে রাজকীয় আয়োজন থাকলেও রাস্তায় বিক্ষোভ হয়। উইনসর ও লন্ডনে শত শত মানুষ ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দেয়।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

রাজকীয় অভ্যর্থনার পর ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য সফরটি হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক
- আপলোড সময় : ১৮-০৯-২০২৫ ০৭:৪৯:৪৩ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৮-০৯-২০২৫ ০৭:৪৯:৪৩ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ