ঢাকা , সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
রাজধানীতে ভয়ঙ্কর মাদক কিটামিন উদ্ধার আগস্টে বিজিবির অভিযানে ১৭৭ কোটি টাকার অবৈধ পণ্য জব্দ থমথমে হাটহাজারী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ভাসানী সেতুর বৈদ্যুতিক ক্যাবল চুরির মামলায় ২ আসামি কারাগারে বরগুনায় স্ত্রীর গলাকাটা ও স্বামীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার জাতীয় স্বার্থে জবাবদিহিমূলক গণমাধ্যম অপরিহার্য- পরিবেশ উপদষ্টো আকস্মিক বন্যায় খাগড়াছড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক মান্না রায়হানের মৃত্যু তুরাগ-উত্তরা ফুটপাত দখল করে দোকানপাট ও কাঁচা বাজার আওয়ামী লীগের মিছিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ রাজশাহীতে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার ৩ টাঙ্গাইলে দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ঘিরে ১৪৪ ধারা ১১ মামলায় আত্মসমর্পণের পর কারাগারে যুবদল নেতা ইসহাক অবরোধে অচল ঢাকা সিলেট মহাসড়ক, ৬ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক হাসিনা-কাদের-শামীম ওসমানসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা বাংলাদেশি পণ্য রফতানিতে বিধিনিষেধ ভারতের মনিরামপুর সাংস্কৃতিক সংসদের শিল্পী সমাবেশ অনুষ্ঠিত সভাপতি মেজবাহ ও সম্পাদক মো. রাজিব নগরকান্দায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু কুমিল্লায় ঘুষ ছাড়া পুলিশে নিয়োগ পেলেন ৪৭ কনস্টেবল

তুরাগ-উত্তরা ফুটপাত দখল করে দোকানপাট ও কাঁচা বাজার

  • আপলোড সময় : ০৮-০৯-২০২৫ ০২:৪৪:৪৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৮-০৯-২০২৫ ০২:৪৪:৪৬ অপরাহ্ন
তুরাগ-উত্তরা ফুটপাত দখল করে দোকানপাট ও কাঁচা বাজার
তুরাগ থেকে মনির হোসেন জীবন রাজধানীর তুরাগ-উত্তরায় ফুটপাতের সড়কগুলো বর্তমানে নিত্যনৈমিত্তিক বাজারে পরিণত হয়েছে। অবৈধ ফুটপাত, সড়ক ও ওয়াকওয়ে জুড়ে দোকানপাট ও কাঁচা বাজারে সয়লাব হয়ে গেছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃক নির্মিত মানুষের হাঁটা চলার জন্য নির্মিত ওয়াকওয়ে দখল করে চলছে জমজমাট নিত্যনতুন ব্যবসা। যেভাবে যে পারছে ঠিক সেভাবেই চলছে হরিলুট আর হরিলুট। দেখার যেন কেউ নেই! অনেকটাই, অভিভাবকহীন উত্তরা-তুরাগ এলাকার ফুটপাত। গতকাল রোববার বিকেলে তথ্য অনুসন্ধান ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি), উত্তরা পশ্চিম ও তুরাগ থানার আওতাধীন উত্তরা ১২নং সেক্টর, প্রিয়াংকা সিটি, খালপাড়, ১৫নং সেক্টর সংলগ্ন সরকারি বেপজা কোয়ার্টার, খালপাড় গণকবরের সামনের সড়কে সারিসারিভাবে ভ্যান গাড়িতে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন দোকানপাট, ১১ নং সেক্টর সোনারগাঁও জনপথ সড়ক কাঁচা বাজার এবং অবৈধ ফুটপাত দখল করে দেখাচ্ছে চলছে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা। তুরাগ ও উত্তরার ফুটপাতের সড়কগুলো দিনকে দিন বাজারে পরিণত হয়েছে। রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে মুরগির দোকান, সবজি বিক্রেতা, খাবার হোটেল, অবৈধ কাঁচা বাজার, রাইদা বাসের স্ট্যান্ড, ফলের দোকান, জামা কাপড় বিক্রির দোকান, চায়ের দোকান প্রভৃতি। এসব অবৈধ দোকানপাট দিন দিন অনেকটাই জমজমাট হয়ে উঠেছে। এর ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগান্তি যেমন বাড়ছে, ঠিক তেমনি ইতিপূর্বে কোটি কোটি টাকা খরচ করে মানুষের ভোগান্তি লাগবে চলাচলের জন্য ডিএনসিসি কর্তৃক নির্মিত “ওয়াকওয়ে” ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন কারণে-অকারণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের সৌন্দর্য। এসব অবৈধ দোকানপাট থেকে স্থানীয় সরকার দলীয় কতিপয় নেতা সুবিধা আদায় করছেন। কেউ কেউ বিভিন্ন ধরনের দোকানপাট বসিয়ে ভাড়া দিয়েছেন। আবার অনেকেই ব্যবসা করছেন। ফলে অনেকেই নিজেদের পকেট ভারি করছেন। সোনারগাঁও জনপথ সড়কের নলভোগ কাঁচা বাজারের সামনে ও চন্ডাল ভোগ নতুন বাজার মেইন রোডের সামনের অংশে প্রায় অর্ধশতাধিক পুরাতন গাড়ির চাকা ও টায়ার বিক্রির বিভিন্ন দোকানপাট গড়ে উঠেছে। তার মধ্যে রাস্তার দক্ষিণ পাশে দোকানগুলোর মালিকরা হলো-মিজানুর, শরীফ, সোবহান, হিমেল, ফাহিম, হাবিবুল্লাহ, নবীন টাকা নেয় সুজন ও মিঠু প্রমুখ। এছাড়া রাস্তার উত্তর পাশে- লিটন মোল্লা, জুনায়েদ, নাজিম, অনিক, জিসান, মিন্নান, রুবেল, সোহেল, বাবু, রানা, সেন্টু, সোহেল, সাইফুল, চঞ্চল ও সাদ্দাম হোসেন। এ সকল অবৈধ দোকানপাট সরকারি পরিত্যক্ত জায়গা ব্যবসায়ী তথা (নিজেরা) উঠিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খবর এলাকাবাসী, ভুক্তভোগী ও বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য তথ্য সূত্রের। স্থানীয় নলভোগ, চন্ডাল ভোগ নতুন বাজার ও ডিয়াবাড়ি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আমরা টাকা দিয়েই সরকারি জায়গায় দোকানপাট বসিয়েছি এবং দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবসা করছি। আগে ঝামেলা ছিল বেশি। টাকাও দিতাম বেশি। এখন ঝামেলা কম, তাই টাকার পরিমাণ ও দেই কম! স্থানীয় লোকজনকে ম্যানেজ করেই আমাদেরকে ব্যবসা করতে হয়। সম্প্রতি ডিএনসিসি ও রাজউক কর্তৃপক্ষ দোকানপাট উচেছদ ও ভাঙচুর করার পর নিজেরাই টাকা খরচ করে ঘর সরকারি পরিত্যক্ত জায়গায় ঘর উঠিয়ে নিয়েছি। আবার ভাংবে আবার নতুন করে ঘর উঠবে। সমস্যাটা কি? বর্তমানে দেশে নির্বাচিত কোনো সরকার নাই। এ সুযোগে যা পার, কামাই কর। উত্তরা ১২নং সেক্টর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তি সাংবাদিকদের জানান, আমরা আমাদের সিকিউরিটি গার্ডদের মাধ্যমে বহুবার দোকানদারদের সতর্ক করেছি, সরে যেতে বলেছি, কিন্তু তারা এখান থেকে সরে যায়নি। উল্টো দিন দিন ব্যবসা প্রসার হচ্ছে। সেক্টরের বাসিন্দারা আমাদের কাছে বারবার অভিযোগ জানাচ্ছেন, কিন্তু এখন আমরা কার্যত অসহায় হয়ে পড়েছি, কারণ আমাদের তো প্রশাসনিক ক্ষমতা নেই, যে আমরা উচ্ছেদ অভিযান চালাবো। সোসাইটির কর্মকর্তারা জানান, এবিষয়টি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)-এর প্রশাসক ও ডিএনসিসি’র অঞ্চল-৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, খুব দ্রুত যে, ফুটপাতের ওপর গড়ে উঠা এসব মিনি বাজারকে উচ্ছেদ করা হয়। সেক্টরবাসীকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন একটি পরিবেশ আনতে ফুটপাত, রাস্তা ও ওয়াকওয়ে যেন অচিরেই উচ্ছেদ করার জোর দাবি জানান। উত্তরা প্রেসক্লাবের নির্বাচিত সভাপতি আলাউদ্দিন আল আজাদ দৈনিক জনতাকে বলেন, সম্প্রতি বুলডোজার দিয়ে আমাদের প্রাণের সংগঠন উত্তরা প্রেসক্লাবের ভবন ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এ ঘটনার পর আমরা কার্যকরী কমিটির নেতৃবৃন্দসহ সবাই মিলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর চেয়ারম্যানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে একটি দরখাস্ত জমা দিয়েছি। রাজধানীর সোনারগাঁও জনপথ সড়ক হাউজ বিল্ডিং থেকে শুরু করে ১২নং সেক্টর খালপাড় হয়ে ডিয়াবাড়ি মেট্রোরেল উত্তর পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশে গড়ে উঠেছে শত শত অবৈধ দোকানপাট। তার মধ্যে হাউজ বিল্ডিং, ১১ নং সেক্টর চৌরাস্তা, (জমজম টাওয়ার), ১২ নং সেক্টর ময়লার মোড়, খালপাড় বড় মসজিদের সামনে, সাব বিদ্যুৎ স্টেশন ঘেঁষে চন্ডাল ভোগ গ্রামের উঁচু ব্রিজের নিচের ঢাল, রুপায়ন সিটির সামনে, অবৈধ রাইদা বাসের স্ট্যান্ড, পরিত্যক্ত উত্তরা প্রেসক্লাব ভবনের পাশে তিনটি খাবার হোটেল, অবৈধ ট্রাক স্ট্যান্ড, চন্ডাল ভোগ নতুন বাজার, উত্তরা কার হাট, ফ্রেন্টাসি আইল্যাল্ডের সামনে, বিআরটিএ উত্তরা, ডিয়াবাড়ী মডেল হাইস্কুলের সামনে, কাঁলা মিয়া মার্কেট ও মেট্রোরেল উত্তরা উত্তর গোলচক্কর এলাকাসহ অধিকাংশ এলাকাতেই ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে ব্যবসা চালানো এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। ডিএনসিসি নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান চালালেও দখলদাররা কিছুদিন পর আবার বসে যায়। স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ, কঠোর আইন প্রয়োগ এবং বিকল্প ব্যবসার জায়গা তৈরি। নতুবা জনজীবন যেমন ব্যাহত হবে, তেমনি নগর পরিকল্পনার সৌন্দর্যও ধ্বংস হয়ে যাবে। ফুটপাত ও সড়ক দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসির অঞ্চল-৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) আ ন ম বদরুদ্দোজা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সোনারগাঁও জনপথ সড়ক ও ডিয়াবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছি। উত্তরা ১২নং সেক্টর ও বেপজা কোয়ার্টার সংলগ্ন এলাকাগুলো আমাদের নজরে রয়েছে। সেখানে খুব দ্রুতই অভিযান পরিচালনা করা হবে। রাস্তা ও ফুটপাত জনসাধারণের, সেগুলো দখল করে কোনো ব্যবসা করার সুযোগ নেই। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরো বলেন, আমরা গত মাসে অনেকগুলো অভিযান পরিচালনা করেছি, ক্রমান্বয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আশা করি এটাও খুব শিগগিরই করা হবে। সরকারি জায়গায় এসব অবৈধ দোকানপাটগুলো থাকার কোনো সুযোগ নেই বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। এবিষয়ে ভুক্তভোগী, সচেতন মহল, সেক্টরবাসী ও সর্বসাধারণের মানুষ অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট উচ্ছেদ এবং প্রতিকার চেয়ে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, পুলিশ প্রধান (আইজিপি), ডিএমপির পুলিশ কমিশনার, এলিট ফোর্স র‌্যাব ডিজি, উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি), রাজউক চেয়ারম্যান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)-এর প্রশাসনিক কর্মকর্তার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য