ঢাকা , সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
মনিরামপুর সাংস্কৃতিক সংসদের শিল্পী সমাবেশ অনুষ্ঠিত সভাপতি মেজবাহ ও সম্পাদক মো. রাজিব নগরকান্দায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু কুমিল্লায় ঘুষ ছাড়া পুলিশে নিয়োগ পেলেন ৪৭ কনস্টেবল বোচাগঞ্জ উপজেলা পরিষদে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করতে চান তোফায়েল লিটন চৌধুরী কুমিল্লায় র‌্যাব ও পুলিশের পৃথক অভিযানে ৯০ কেজি গাঁজাসহ আটক ২ সোনারগাঁওয়ে সাড়ে ৭শ বছরের প্রাচীন গ্রন্থাগার সংস্করণের দাবিতে মানববন্ধন চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভাঙনের মুখে ২৫ কিলোমিটার এলাকা বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করলো মরক্কো অ্যান্ডোরার বিপক্ষে হতাশাজনক জয় ইংল্যান্ডের আর্মেনিয়ার জালে পর্তুগালের গোল উৎসব নেপালের সাথে ড্র করতে পেরে খুশি ক্যাবরেরা পাকিস্তানে ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালে বোমা বিস্ফোরণ, নিহত ১ হারারেতে লংকানদের বিপক্ষে সহজ জয় পেলো জিম্বাবুয়ে বুলবুলকে হুমকির অভিযোগে যা বললেন তামিম এশিয়া কাপের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়লো টাইগাররা ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে পাগলা ঘোড়ার কামড়ে ২০ জন আহত পোরশায় নকল ঔষধ কারখানায় অভিযান ভোটিং প্রক্রিয়া নিয়ে চারটি সচেতনতামূলক সভা করবে ডাকসু নির্বাচন কমিশন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভাঙনের মুখে ২৫ কিলোমিটার এলাকা

  • আপলোড সময় : ০৭-০৯-২০২৫ ০৯:০৬:৪১ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৭-০৯-২০২৫ ০৯:০৬:৪১ অপরাহ্ন
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভাঙনের মুখে ২৫ কিলোমিটার এলাকা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে জাহিদ হাসান মাহমুদ মিম্পা
আগ্রাসী পদ্মার তীব্র ভাঙনে একে একে গ্রাস করছে বসতভিটা, আবাদি জমি, সরকারি স্থাপনা ও গ্রামীণ সড়ক। সব হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন একের পর এক বাসিন্দা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে এমনই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পদ্মাপাড়ের কয়েকটি গ্রামে এখন শুধু ভাঙন হাহাকার। পদ্মা সেখানে সর্বগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে। বারবার ভাঙনের কবলে পড়ে নিজেদের বেড়ে ওঠা জায়গা ছেড়ে অন্য জায়গায় অবস্থান নিতে হচ্ছে পদ্মা-তীরবর্তী বাসিন্দাদের।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, ২৫ কিলোমিটার এলাকা এখন ভাঙনের মুখে। নদী ভাঙন রোধে পদ্মার তীরজুড়ে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সাড়ে ৭০০ কোটি টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সুফল পাবে ওইসব এলাকার মানুষ।
জানা গেছে, প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদী ভাঙন মানুষের জীবনকে অনিয়শ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়, সেই অনিয়শ্চয়তা থেকে বেরিয়ে আসতে মানুষ চায় স্থায়ী সমাধান। আর এই স্থায়ী সমাধান হচ্ছে একটি শক্তিশালী, টেকসই বাঁধ। কিন্তু বছরের পর বছর তাদের এই দাবিটিই উপেক্ষিত হয়ে আসছে। যার ফলে তাদেরকে প্রতিবারই বর্ষার সময় চরম মূল্য দিতে হয় নি.স্ব হয়ে। পদ্মার আগ্রাসী রূপ মানুষের দুর্দশা বাড়িয়ে দেয়। পদ্মার ভাঙনে নি.স্ব হয় তীরবর্তী মানুষ। ভিটেমাটি হারিয়ে উদ্বাস্তু হচ্ছেন তারা। প্রিয় জন্ম মাটি ছেড়েছেন অনেকে। এর কারণ একটাই ‘টেকসই বাঁধ’ নির্মাণ না হওয়া। অথচ দীর্ঘস্থায়ী, টেকসই বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, নকশা হয়েছে, কত কত প্রতিশ্রুতি, আশ্বাস পেয়েছেন চরাঞ্চলের মানুষ। কিন্তু কবে সেই প্রকল্পের বাস্তবায়ন?
সংশ্লিষ্টরা জানান, সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর থেকে শিবগঞ্জের মনোহরপুর পর্যন্ত পদ্মা নদীতে ভাঙন দেখা দেয়। এছাড়া সদর উপজেলার দেবিনগর, শাজাহানপুর, চরবাগডাঙ্গা ও আলাতুলি ইউনিয়নের কিছু অংশে ভাঙন দেখা যায়। নদী ভাঙন তীব্র হয় পদ্মায় পানি বাড়লে এবং কমলে। এ জন্য ওইসব এলাকার মানুষের বর্ষা মৌসুমের পাশাপাশি শুষ্ক মৌসুমেও ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটে। চলতি বছরের জুলাইয়ে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে ভাঙন শুরু হয়। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার ৫ ইউনিয়নের প্রায় ৫০০ পরিবার ভাঙনের মুখে তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছেন। তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের বরেন্দ্র অঞ্চল অথবা পদ্মা নদীরে এপারে বসতঘর তুলছেন।
পদ্মা-তীরবর্তী বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন বলেন, ছোটবেলা থেকেই নদীর ভাঙা-গড়ার খেলা দেখছি। এই পদ্মা নদী আগে অনেক দূরে ছিল। ভাঙতে ভাঙতে পৌঁছে গেছে বাড়ির দরজায়। অস্থায়ীভাবে ভাঙন ঠেকাতে বছরের পর বছর কাঁড়িকাঁড়ি টাকা খরচ না করে স্থায়ীভাবে নদীতে বাঁধ দেয়া হলে আমরা রেহাই পাবো। তিনি আরও বলেন, গত বছর নদী ভাঙনে দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উপ-সাইক্লোন কেন্দ্র বিলীন হয়ে গেছে। এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি ভাঙনের মুখে সরানো হচ্ছে। তীব্র ভাঙনে ইউপি ভবনের জায়গাটিও আর থাকল না।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ বলেন, পদ্মার ভাঙনে আমি নিজে পাঁচবার বাড়ি ভেঙেছি। নদী ভাঙনের কারণে এ বয়সেও (৭৫ বছর বয়সেও) বারবার ঘরবাড়ি ভেঙে অন্য জায়গা সরিয়ে নিতে হয়েছে। ভাঙনে আমি তো পাঁচবার বাড়িঘর সরিয়েছি, আমার বাবা-দাদারাও এই নদী ভাঙনে তাদের ভিটামাটি সরিয়েছেন।
আলাতুলি ইউনিয়নের মুনিজা খাতুন বলেন, গত ১ মাস আগেই আমার শ্বশুরবাড়ির ভিটামাটি নদীতে চলে গেছে। তাই আমি আমার সন্তানকে নিয়ে মানিকচরে আমার বাবার বাড়িতে উঠেছি। এরকম প্রতিবছরই করতে হয় আমাদের কিন্তু এবার সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম আহসান হাবীব বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর বাতাসমোড়, পাঁকার ঘাট, মনোহরপুর, ঝাইলপাড়া, মল্লিকপাড়া, পোলাডাঙ্গা বিওপি এসব এলাকার ডান তীর-বাম তীর মিলে প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকা এখন ভাঙনের মুখে। জরুরি ভিত্তিতে পোলাডাঙ্গা বিওপি ও মনোহরপুর এলাকায় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার পদ্মা নদীর তীর রক্ষা নামে একটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রথমে এ প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা। বর্তমানে ওই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য