ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫ , ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
রাকসু নির্বাচনের তফসিল ৩য় বারের মতো পুনর্বিন্যস্ত পিছিয়েছে ভোট জকসু নির্বাচনে বয়সসীমা থাকছে না দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা চন্দ্রনাথ পাহাড় ঘিরে উসকানির চিহ্ন দেখামাত্র ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে-মির্জা ফখরুল শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়-বুয়েট ভিসি প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের দাবির যৌক্তিকতা যাচাইয়ে কমিটি ডেঙ্গু চিকুনগুনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জায় কাবু মানুষ হিজাব বিতর্কে শিক্ষক বরখাস্ত উত্তাল ভিকারুননিসা আজ জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ মোট ভোটার ১২ কোটি ৬১ লাখ ডাকসু নির্বাচনে প্রচারণায় উৎসবমুখর ঢাবি ক্যাম্পাস প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের উপর সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ গাজীপুরে বিএনপি নেতার বাড়িতে ডাকাতি জেনেভা ক্যাম্পে সেনা অভিযানে গ্রেফতার ১১ গোবিন্দগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ ভূমিদস্যু ও জালিয়াতি সম্রাট আসলামের অবৈধ কর্মকাণ্ডে গোপন তদন্ত শুরু ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ১৭ বাংলাদেশি প্রধান আসামির মৃত্যুদণ্ড সহযোগীর পাঁচ বছর কারাদণ্ড জটিল রোগে ৩ লাখ টাকা পাবেন সরকারি কর্মচারীরা আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ট্রাইব্যুনালের বিচার শুরু
ডাকসু নির্বাচন : চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ, প্রার্থী ৪৭১

আনুষ্ঠানিক প্রচারণা প্রার্থীদের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ

  • আপলোড সময় : ২৭-০৮-২০২৫ ০৫:১৫:০৫ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-০৮-২০২৫ ০৫:১৫:০৫ অপরাহ্ন
আনুষ্ঠানিক প্রচারণা প্রার্থীদের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ
প্রথম দিনেই শিবিরের ফেস্টুন ফেলে দিল দুর্বৃত্তরা সেনা মোতায়েনসহ তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে প্রচার-প্রচারণা। তবে প্রচারণার প্রথমদিনেই একে অপরের প্রতি ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের তীর ছুড়ছেন। একই সঙ্গে ছবিগুলো বিকৃত করা হয়েছে এবং হিজাব পরিহিত ছবিকে বিকৃত করতেও দেখা গেছে। যদিও এই ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। এরআগে গতকাল মঙ্গলবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রচারণা শুরু হয়েছে। প্রার্থীরা ব্যানার ও ফেস্টুন লাগিয়ে নিজেদের প্রচার করছেন। এর আগে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অনেক প্রার্থীই কৌশলে কুশল বিনিময়ের নামে নির্বাচনী প্রচার চালানোর অভিযোগ উঠে। প্রথমে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠে ছাত্রদলের মনোনীত সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে। যদিও বিধি লঙ্ঘন হয়নি, বলে দাবি আবিদুল ইসলাম খানের। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে তিনি আবার পাল্টা অভিযোগ করছেন। সোমবার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় ডাকসু নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলনে ডাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, আমরা আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ পেয়েছি। কমিশনের সদস্যরা এ ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেবেন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। এরপর কমিশনের সিদ্ধান্ত তাকে জানিয়ে দেব। জানা গেছে, আবিদুল ইসলাম খান গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হলের পাঠকক্ষে প্রবেশ করে অধ্যয়নরত একাধিক শিক্ষার্থীর কাছে গিয়ে নিজের পরিচয় দেন। তিনি তাদের দোয়া-সমর্থন চান এবং কোলাকুলি করেন। এরপর সোমবার ব্যবসায় অনুষদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় শেষে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেন শিবির সমর্থিত সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান। তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচন উপলক্ষে এক ধরনের সাজসাজ আমেজ বিরাজ করলেও নির্বাচন কমিশনের নমনীয় আচরণের কারণে কিছু প্যানেল ও প্রার্থীরা নিয়মিত আচরণবিধি লঙ্ঘন করে যাচ্ছেন। দলবদ্ধ হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন, শিক্ষার্থীদের রিডিং রুমে পর্যন্ত চলে যাচ্ছেন। আমরা ফরমালি এবং ইনফরমালি জানানোর পরও কমিশন আচরণবিধিগুলো লঙ্ঘনের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। গতকাল মঙ্গলবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রচারণা শুরু হয়েছে। প্রার্থীরা ব্যানার ও ফেস্টুন লাগিয়ে নিজেদের প্রচার করছেন। তবে, প্রচারণার প্রথম দিনেই চারুকলা অনুষদে ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এদিন সকালে শিবির সমর্থিত এই জোট ব্যানার টানিয়ে প্রচারণা শুরু করে। কিন্তু চারুকলা অনুষদে তাদের পূর্ণাঙ্গ প্যানেলের ছবি সম্বলিত ফেস্টুনটি টানানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই টেনে হিঁচড়ে সেটি ফেলে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ছবিগুলো বিকৃত করা হয়েছে এবং হিজাব পরিহিত ছবিকে বিকৃত করতেও দেখা গেছে। যদিও এই ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। ডাকসুর আচরণবিধি অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রচার সামগ্রী যেমন পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিলের কোনো ক্ষতি করা যাবে না। এ বিষয়ে কথা হয় ঢাবি শাখা শিবিরের সভাপতি এবং জিএস (সাধারণ সম্পাদক) প্রার্থী এস এম ফরহাদ এর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাব। এটা ছাত্রলীগের কাজও হতে পারে অথবা অন্য কারো কাজও হতে পারে। তিনি সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। নির্বাচন কমিশনকেই খুঁজে বের করতে হবে কারা এই কাজ করছে। খুঁজে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তবে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানী বলেছেন, আমরা এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইসলামি ছাত্রশিবির। ডাকসু নির্বাচনে সেনা মোতায়েনসহ তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকবে: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন করার স্বার্থে সেনা মোতায়েনসহ তিন স্তরের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বহিরাগতদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে থাকবে প্রশাসন। মঙ্গলবার ডাকসু নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা ও নিরাপত্তা ইস্যুতে প্রার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ তথ্য জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. গোলাম রব্বানী। এর আগে এই সভায় ডাকসু নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন চিফ রিটার্নিং অফিসার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রিটার্নিং কর্মকর্তারা সবাই উপস্থিত ছিলেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. গোলাম রব্বানী সভায় ডাকসু নির্বাচনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) আমাদের সঙ্গে থাকবে। তারা সহযোগিতার পূর্ণ আশ্বাস দিয়েছে। ইতোমধ্যে কাজও শুরু করেছে। তিনি জানান, ভোটের দিন তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকবে। প্রথম স্তরে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবেন প্রক্টরিয়াল বডি ও বিএনসিসি সদস্যরা। দ্বিতীয় স্তরে মোতায়েন থাকবেন পুলিশ সদস্যরা। আর তৃতীয় স্তরে সেনাবাহিনী থাকবে নির্দিষ্ট প্রবেশপথে। তারা সারাদিন স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে এবং ভোট শেষে ব্যালটের নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করবে। বহিরাগতদের প্রসঙ্গে প্রফেসর রব্বানী বলেন, ভোটের সাত দিন আগে থেকে কোনো বহিরাগত হলে থাকতে পারবে না। হাউস টিউটর ও প্রভোস্টদের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। আমরা নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ হল পরিদর্শন করব। তিনি বলেন, ভোটের দিন পুরো ক্যাম্পাস সিলগালা থাকবে। শুধু বৈধ ভোটাররা প্রবেশ করতে পারবে। ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন মেট্রো স্টেশনও বন্ধ থাকবে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী অনাবাসিক। তারা সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ব্যবহার করেন। ভোটের দিনে তাদের সুবিধার্থে বাসের ট্রিপ বাড়ানো হবে। পাশাপাশি ডিএমপি কমিশনারকে অনুরোধ করা হয়েছে যাতে ঢাবি শিক্ষার্থীবাহী যানবাহন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে ক্যাম্পাসের সাতটি প্রবেশপথে সেনাবাহিনীকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভোটের দিন সকাল থেকে তারা নিয়মিত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ব্যালট বাক্স সুরক্ষার কাজও করবে। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের এক সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত এবং ৯ সেপ্টেম্বর সারাদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রোরেল স্টেশন বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে হলে কোনো বহিরাগত অবস্থান করতে পারবে না। সভায় রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. কাজী মারুফুল ইসলাম প্রার্থী ও ভোটারদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের শহীদদের অবমাননা করে কোনো ধরনের প্রচারণা চালাতে পারবেন না প্রার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে চূড়ান্তভাবে প্রার্থী সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৭১ জনে। মঙ্গলবার প্রকাশিত চূড়ান্ত তালিকায় দেখা গেছে, প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন জমা দেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ২৮ জন স্বেচ্ছায় প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন। অপরদিকে, বাছাই প্রক্রিয়ায় বাদ পড়া ১০ জন প্রার্থী আপিল না করায় তাদের মনোনয়নপত্রও বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী, সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে রয়েছেন ১২ জন। তাছাড়াও গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৫ জন প্রার্থী। সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে সদস্য পদে। এবার মোট ২১৭ জন প্রার্থী সদস্য পদে লড়বেন। সবমিলিয়ে ২৮টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছেন ৪৭১ জন প্রার্থী।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স