নেত্রকোনা থেকে মো. রতন মিয়া
নেত্রকোনার কলমাকান্দায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে উভয়পক্ষের আন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ থানায় পাল্টপাল্টি অভিযোগ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার বিকেলে। তবে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে।
কলমাকান্দার কৈলাটী ইউনিয়নের বিষমপুর গ্রামের আল আমিনের অভিযোগ জমি নয়ে বিরোধের জের ধরে তার লোকজনের ওপর হামলা চালানো হয়। অন্যদিকে অপর পক্ষের আবুল কালামের অভিযোগ যুবকদের লুডু খেলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
অভিযোগে জানা গেছে, কলমাকান্দার বিষমপুর গ্রামের মো. আল আমিনদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে একই গ্রামের মো. আবুল হাসেমদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এরই জের ধরে গত ৬ আগস্ট আল আমিনের লোকজন ওই জমিতে আবাদ করতে গেলে আবুল হাসেম ও তার লোকজন বাধা দেয়। এ সময় দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ওইদিন বিকেলে আল আমিন তার অসুস্থ মাকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে সিধলী বাজারে যাওয়ার পথে প্রতিপক্ষের লোকজন তার ওপর হামলা চালায় এবং রামদা দিয়ে কুপিয়ে ও লাঠি দিয়ে পিঠিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে আল আমিনের লোকজন এগিয়ে গেলে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় দুই পকেআষর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে আল আমিন(৩২), মো. দেলোয়ার হোসেন(৪২), মো. সেয়েব মিয়া (২৮), আ. আজিজ (৫৫), মোসা. রহিছা আক্তার (৫৫)সহ কমপক্ষে ৮ জন আহত হয়।
অপর পক্ষের মো. আবুল কালামের অভিযোগ আবদুর রাজ্জাকের ছেলে মারুফের (২০) সাথে গত ৪ আগস্ট একই গ্রামের খায়রুল কবীরের ছেলে মাহফুজুল করীম ওরফে মাহফুজের (২০) লুডু খেলা নিয়ে কথা কাটাকাটি ও ঠেলা ধাক্কার ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে মারুফের চাচা আবদুস ছাত্তার বিষয়টি মাহফুজের লোকজনকে জিজ্ঞেস করেন। এতে মাহফুজের পরিবার ক্ষিপ্ত হয়। এরই জের ধরে গত ৬ আগস্ট সন্ধ্যায় মাহফুজের বাড়ির সামনে বাপ্পী কবীর, সাইফুল ইসলাম, মাহফুজুল করীম ওরফে মাহফুজের নেতৃত্বে ২৫-২৭জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আবদুস সাত্তারকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে ও রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তাকে বাঁচাতে মারুফের লোকজন এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা তাদের ওপরও চড়াও হয় এবং এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে কয়েকজনকে আহত করে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে আবদুস ছাত্তার (৪০), ফৌজদার মিয়া (৫০), ফারুক মিয়া (২৭), খোকন মিয়া (৪৫), মামুনুর রশিদ (২৭), রনি মিয়া (২৫)সহ ৭ জন আহত হয়। গুরুতর আহত আবদুস ছাত্তার নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখান থেকে তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার ডান হাতের তিনটি আঙ্গুল কেটে যায়। এছাড়া দুইজন আহতকে ময়মনসিংহ ও বাকীদের নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় মো. আবুল কালাম বাদী হয়ে কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফর রহমান জানান, সিধলীতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ব্যাপারে দুই পক্ষই অভিযোগ করেছে। আবুল কালামের লোকজন বেশি আহত হয়েছে। এক পক্ষের অভিযোগে মামলা হয়েছে। অপরপক্ষের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
