ঢাকা , বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫ , ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
নিবন্ধন চাওয়া ১৪৪ দলই প্রাথমিক বাছাইয়ে অনুত্তীর্ণ ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৩৭৫ বাক্সবন্দি মেশিন এখন চায়ের টেবিল সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চার সংবাদ সম্মেলন নিয়ে পুলিশের ব্যাখ্যা ঐকমত্যে আসতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো প্রাণনাশের হুমকি দিল প্রতারক ৪ দফা দাবি জোরপূর্বক প্রত্যাগত ওমান প্রবাসী ফোরামের পুলিশ কল্যাণ তহবিল থেকে দেড় কোটি টাকার অনুদান পাবে ৩৮৯ জন বিমানবন্দর থেকে ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠালো মালয়েশিয়া নির্বাচন কমিশনের ৫১ কর্মকর্তাকে বদলি গেটে হাঁটুপানি, ভোগান্তিতে রোগী-স্বজনরা জিয়ার অনুকম্পায় রাজনীতি করে এখন তার পুত্রকে টার্গেট করছেÑ রিজভী চাঁদাবাজির অভিযোগে ওসিসহ ৬ পুলিশ প্রত্যাহার পঞ্চবেকি বয়া নদীর আয়রন ব্রিজ মৃত্যুফাঁদ ময়মনসিংহে মুক্তিপণ দিয়ে মিললো শিশুর লাশ ৪ লাখ টন চাল কিনবে সরকার, বেসরকারিভাবে ৫ লাখ টনের অনুমতি কে কাকে লাল কার্ড দেখাবে, তা ঠিক করবে জনগণ-ডা. জাহিদ বাংলাদেশিদের মিসরের ভিসা দিতে নিষেধাজ্ঞা নেই : দূতাবাস ইইউ’র প্রাক-নির্বাচনী অনুসন্ধানী দল ঢাকা আসছে সেপ্টেম্বরে সংরক্ষিত আসন বিলুপ্তির সুপারিশের প্রতিবাদ মহিলা পরিষদের

বাংলাদেশে আরও রোহিঙ্গা প্রবেশের শঙ্কা

  • আপলোড সময় : ২৬-০৫-২০২৪ ১২:০২:৪২ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৬-০৫-২০২৪ ১২:০২:৪২ অপরাহ্ন
বাংলাদেশে আরও রোহিঙ্গা প্রবেশের শঙ্কা বাংলাদেশে আরও রোহিঙ্গা প্রবেশের শঙ্কা
যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সম্প্রতি প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা নাফ নদীর তীরে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে অপেক্ষা করছেন। গত শুক্রবার জেনেভায় জাতিসংঘের সদরদফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার মুখপাত্র এলিজাবেথ থ্রোসেল একথা বলেন। তিনি বলেন, অনেক রোহিঙ্গা হত্যার শিকার হয়েছেন। অনেকের বাড়িঘর, সম্পদ আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তারা ১৭ মে থেকে পালাতে শুরু করেন। থ্রোসেল বলেন, সম্প্রতি বুথিডং মৌডং শহরে আরাকান আর্মি (এএ) সেনাবাহিনীর লড়াইয়ে ১০ হাজার নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। রাখাইন সহিংসতার মাত্রা আরও বাড়ার মারাত্মক স্পষ্ট ঝুঁকিতে রয়েছে জানিয়ে সতর্ক করে এলিজাবেথ থ্রোসেল বলেন, মংডুতে লড়াই চলছে। সেখানে সামরিক বাহিনীর একাধিক চৌকি আছে। এছাড়া এলাকাটিতে রোহিঙ্গাদের একটা বড় জনগোষ্ঠী বাস করে। তিনি বলেন, এমন আতঙ্কজনক পরিস্থিতিতে বেসামরিক নাগরিকরা আরও একবার হত্যা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ লুটের শিকার হচ্ছেন। তাদের সুরক্ষা নিরাপত্তা নিশ্চিতে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। তারা আবারও বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন। এলিজাবেথ থ্রোসেল বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে। এর আগের সহিংসতার সময় বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে দেশটিতে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। তিনি জানান, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ফলকার টুর্ক বাংলাদেশসহ অন্য দেশগুলোকে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারেযারা সুরক্ষা খুঁজছেন, তাদের তা দেয়ারঅনুরোধ করেছেন। একই সঙ্গে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সংহতি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র ইইউর সতর্কতা: মিয়ানমারের সংঘাত পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে সতর্ক করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র কয়েকটি দেশ। এক যৌথ বিবৃতিতে দেশগুলো বলছে, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতার মুখে হাজারো বেসামরিক নাগরিক বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। বেসামরিক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিবদমান সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আমরা। ২০১৭ সালে রাখাইনে উত্তেজনার সময়েও যখন ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে, তখনও বলা হয়েছিলবাঙালি সন্ত্রাসীরা দায়ী। সম্প্রতি সিএনএন প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছেন, আরাকান আর্মি মুখপাত্র খাইং থু খা গত শুক্রবার সন্ধ্যায় টেলিগ্রামে লিখেছিলেন বুথিডাংয়ের মুসলিম সম্প্রদায়গুলোকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে এবং শিশু নারী এবং বয়স্ক ব্যক্তিসহ তাদের জন্য খাদ্য, আশ্রয় এবং চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে। পরবর্তী সময়ে আরাকান আর্মির পক্ষ থেকে আবারও দাবি তুলে বিবৃতি দেয়া হয় যে, তারা কখনোই বেসামরিক বস্তুকে লক্ষ্য করে না এবং অভিযোগের আঙুল তোলে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দিকে। বুথিডাংয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর জন্য তারা সামরিক বাহিনীর মিত্র রোহিঙ্গা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে দায়ী করেযাদের তারাবাঙালি সন্ত্রাসীআখ্যায়িত করছে। দীর্ঘদিন ক্যাম্পে কর্মরত বেসরকারি সংস্থার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শুরুর দিকে ২০১৭ সালের দিকে গণমাধ্যমে আরাকান আর্মি এই বাঙালি সন্ত্রাসী শব্দগুলো বলেছে, শুনেছি। এরপর অনেকদিন শুনিনি। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে দেখেছি এই শব্দযুগল নিয়ে রোহিঙ্গা নেতারা বরাবরই তাদের শঙ্কার কথা বলেন। তাদের শঙ্কা, বাঙালি বলে তাদের ফেরানোর পথ বন্ধের চেষ্টা করছে আরাকান আর্মি।
ক্যাম্পে রোহিঙ্গা অধিকার নিয়ে কাজ করেন অ্যাক্টিভিস্ট অনিক (ছদ্মনাম) বলেন, আমরা গত মাসে দুয়েকবার খেয়াল করেছি বিষয়টা। গুরুত্বপূর্ণ কিছু কমেন্ট করতে গিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এই শব্দটাই ব্যবহার করে আরাকান আর্মি। এটা স্ট্যাবলিশ করার চেষ্টা আছে, সেটা বোঝা যায়। রোহিঙ্গাদের কেন মিয়ানমারবাঙালি সন্ত্রাসীবলেন এমন প্রশ্নে রোহিঙ্গা গবেষক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রাহমান নাসির উদ্দিন বলেন, এটা মিয়ানমারের স্টেট ন্যারেটিভ। কারণ তারা রোহিঙ্গাদেরইলিগ্যাল বেঙ্গলি মাইগ্র্যান্টমনে করে বা রাষ্ট্রীয় তকমা দেয়। তাই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের তারাবাঙালি সন্ত্রাসীবলে।
এটা আরেকটু আগে থেকে বুঝতে হলে বলতে হবে আরাকান আর্মির সঙ্গে আরএসও (রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশন) দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। ২০১৭ সালের ঘটনার পর থেকে আরসা (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি) বেশ কোনঠাসা। এই সুযোগে আরএসও মাঠে আসার চেষ্টা করে। ২০২১ সালের মিয়ানমারের সামরিক জান্তা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলে আরাকান আর্মি জান্তাবিরোধী সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করে। তখন জান্তা সরকার আরাকান আর্মির সঙ্গে আরসার সম্পৃক্ততা আছে বলে প্রকাশ্যে উভয়কে রাষ্ট্রবিরোধী হিসেবে দাবি করে। আরসার সঙ্গে সম্পৃক্ত রোহিঙ্গাদের জান্তা সরকারবাঙালি সন্ত্রাসীবলে। অন্যদিকে আরএসও সঙ্গে সম্পৃক্ত রোহিঙ্গাদেরবাঙালি সন্ত্রাসীবলে আরাকান আর্মি। উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, বর্তমানে রাখাইনের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। সংঘাত এখনও চলছে। আরাকান আর্মি জাতিগত রাখাইন জনগোষ্ঠীর জন্য স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রায় সবকয়টি এলাকায় তারা তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স