বাংলাদেশ টেবিল টেনিস দলের জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সামনে রয়েছে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা-বাহরাইনে এশিয়ান ইয়ুথ গেমস, সৌদি আরবে ইসলামিক সলিডারিটি গেমস এবং পাকিস্তানে দক্ষিণ এশিয়ান গেমস। এই তিন আন্তর্জাতিক আসরকে সামনে রেখে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশন (বিটিটিএফ) নতুন করে গুছিয়ে নিতে চায় জাতীয় দলকে। সে লক্ষ্যে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে মাত্র ২৫ বছর বয়সী থাইল্যান্ডের কোচ পাত্তারাতর্ন পাসারাকে।
২০২২ সালের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক টেবিল টেনিস ফেডারেশনের (আইটিটিএফ) র্যাঙ্কিংয়ে ৩১৪ নম্বরে থাকা পাসারা তখন ছিলেন সাউথইস্ট এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণজয়ী থাই দলের সদস্য। ২০২৪ সালে চিং মি সার্কিট কিংস কাপে স্বর্ণ ও রৌপ্য জেতা এই তরুণ এখন বাংলাদেশ দলের কোচের ভূমিকায়।
বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশন জানিয়েছে, আপাতত দুই মাসের জন্য চুক্তি করা হয়েছে পাসারার সঙ্গে। পারফরম্যান্স সন্তোষজনক হলে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক খেলোয়াড় ক্যাপ্টেন এ এম মাকসুদ আহমেদ (সনেট) জানান, ‘চীনা কোচ আনার চেষ্টা করেও আমরা সফল হইনি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অত্যন্ত ভালো রেটিং পাওয়া থাই কোচ পাসারার বিষয়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
তবে শুধু প্রধান কোচ নয়, তার সঙ্গে একজন সহকারী কোচ বা বিদেশি প্র্যাকটিস পার্টনার নিয়োগের পরিকল্পনাও রয়েছে ফেডারেশনের। এ ছাড়া জাতীয় দলের কিছু প্রতিশ্রুতিশীল খেলোয়াড়কে বিদেশি একাডেমিতে পাঠিয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দিতে চায় কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে জাতীয় ক্যাম্পে অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগের আটজন ছেলে-মেয়ে অনুশীলন করছে। পাশাপাশি সিনিয়র ক্যাম্পে রয়েছে ৩২ সদস্যের প্রাথমিক দল, যাদের মধ্যে ১৬ জন ছেলে এবং ১৬ জন মেয়ে। আগামী শুক্রবার একটি বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই দল থেকে ২০ জনকে নির্বাচিত করা হবে। এর মধ্য থেকেই সম্ভাবনাময় কিছু খেলোয়াড় পাসারার সরাসরি অধীনে অনুশীলন শুরু করবেন। বাকিরা স্থানীয় কোচদের তত্ত্বাবধানে প্রস্তুতি চালিয়ে যাবেন।
তবে কোচ পাসারার বয়সকে ঘিরে কিছু প্রশ্নও উঠেছে। কারণ জাতীয় দলে আছেন এমন কিছু অভিজ্ঞ খেলোয়াড়-যাদের বয়স পাসারার চেয়েও বেশি। যেমন ছয়বারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন মাহবুব বিল্লাহ, যিনি প্রায় পঞ্চাশের কাছাকাছি বয়সে খেলছেন। নারী দলে রয়েছেন সোনাম সুলতানা সোমা, যিনি প্রায় দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রতিযোগিতামূলক টেবিল টেনিসে অংশ নিচ্ছেন। এ বিষয়ে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কোচ ও খেলোয়াড়ের বয়স এখানে মুখ্য নয়। শেখানোর যোগ্যতা ও শেখার মানসিকতা থাকলে বয়স কোনো বাধা হতে পারে না।’
অন্যদিকে, ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনও বিদেশি কোচ নিয়োগ দিয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার কোচ মাঙ্গারা তুয়ারের সঙ্গে ইতোমধ্যেই সমঝোতা হয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সহায়তায় তার বেতন বাবদ মাসে প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয় করবে ফেডারেশন। ইন্দোনেশীয় কোচের সঙ্গে জানুয়ারি পর্যন্ত চুক্তি করতে চায় কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ ক্রীড়াঙ্গনে বিদেশি কোচের আগমন নতুন নয়। তবে বয়সে তরুণ একজনকে নিয়োগ দেওয়া এবং অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের সঙ্গে তার পারস্পরিক সম্পর্ক কেমন হবে, সেটা ভবিষ্যৎ বলবে। তবে এখনই ফেডারেশন তাদের লক্ষ্য ঠিক করে এগিয়ে যেতে চাচ্ছে-আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের পতাকা আরও উঁচু করে ধরতে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

বাংলাদেশ টেবিল টেনিসে থাইল্যান্ডের ২৫ বছর বয়সী কোচ
- আপলোড সময় : ০৪-০৮-২০২৫ ০৮:১৬:২০ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৪-০৮-২০২৫ ০৮:১৬:২০ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ