
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে তুঙ্গে ত্রিমুখী বিরোধ
- আপলোড সময় : ০৩-০৮-২০২৫ ০৪:০০:১২ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৩-০৮-২০২৫ ০৪:০০:১২ অপরাহ্ন


* নির্বাচিত সংসদের হাতে সংস্কার কার্যক্রম ছেড়ে দেব না : নাহিদ
* মির্জা ফখরুল ও সাদিক কায়েমের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ
‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপি ও এনসিপির নেতাদের মধ্যে ত্রিমুখী বিরোধ তুঙ্গে। এই বিরোধ মূলত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের মধ্যে বিদ্যমান। স¤প্রতি, ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা যাচ্ছে, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ত্রিমুখী বিরোধের মূল কারণগুলো হচ্ছে-বিরোধী দলগুলো সরকারের বিভিন্ন কর্মকাÐের সমালোচনা করছে এবং তাদের দাবি, দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসনের অভাব রয়েছে। বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বাইরে রয়েছে এবং তারা সরকার পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন করছে। তাদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সংঘাত দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের মধ্যে ক্যাম্পাসে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের জন্য সংঘর্ষ হচ্ছে। এর সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থনও যোগ হয়েছে। বিভিন্ন বিক্ষোভ এবং রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সহিংসতা দেখা যাচ্ছে, যা রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। এতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাকর হয়ে উঠছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে শেষ হয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ৬৮ দিনের আলোচনা। ১৯টি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে-যার কিছুতে রয়েছে ‘নোট অব ডিসেন্ট’। ঐকমত্য ও দ্বিমতের নোট অব ডিসেন্ট নিয়েই তৈরি হচ্ছে ‘জুলাই সনদ’। বাংলাদেশের রাজনীতিতে মতাদর্শের ঊর্ধ্বে ওঠে একসঙ্গে সকল দলের আলোচনার বিষয়টি বিরল। যা দেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক বার্তা নিয়ে এলেও এখন বিতর্কের কেন্দ্রে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ও আইনি ভিত্তি নিয়ে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি দল স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে-আইনি ভিত্তি ছাড়া তারা সনদে স্বাক্ষর করবে না। সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ও আইনি ভিত্তি নিয়ে কঠোর অবস্থানের কথা ব্যক্ত করেছে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। তারা বলছে, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এই সরকারের সময়েই করতে হবে এবং সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। আইনি ভিত্তি ছাড়া এই সনদে স্বাক্ষর করবে না বলেও জানিয়েছে দলগুলো। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসালামী বলছে, আইনি ভিত্তি না থাকলে সনদ মূল্যহীন হয়ে পড়বে। সেজন্য তারা কমিশন ও সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ মামলাও করবে। বিএনপি বলছে, ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে দেয়া জাতীয় সনদে খসড়ার প্রতি একমত তারা। পরবর্তী পার্লামেন্ট গঠন করার ২ বছরের মধ্যে তারা সনদ বাস্তবায়ন করবেন। এখানে প্রধান উপদেষ্টা, কমিটির সকল সদস্য ও রাজনৈতিক দল সকলে স্বাক্ষর করবেন। এর চাইতে বড় সম্মতিকে আইনি ভিত্তি না বললে কোনটাকে বলবো? জুলাই ঘোষণাকে সংবিধানের ৪র্থ তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
মির্জা ফখরুল ও সাদিক কায়েমের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যাচারের’ অভিযোগ নাহিদের : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং শিবিরের প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েমের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহŸায়ক নাহিদ ইসলাম। সেইসঙ্গে জাতীয় সরকার গঠন প্রক্রিয়া, ছাত্রশক্তির জন্ম এবং অভ্যুত্থান-পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনার বিষয়েও নিজের অবস্থান জানিয়েছেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাসে এসব বিষয় তুলে ধরেন তিনি। স্ট্যাটাসে নাহিদ লিখেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল স¤প্রতি একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন জাতীয় সরকারের কোনো প্রস্তাবনা ছাত্রদের পক্ষ থেকে তাদের দেয়া হয় নাই। তারা অন্য মাধ্যমে এ প্রস্তাবনা পেয়েছিল। এই বক্তব্যটি সত্য নয়। ৫ আগস্ট রাতের প্রেস ব্রিফিংয়ে আমরা বলেছিলাম অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার করতে চাই। সেই প্রেস ব্রিফিংয়ের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আমাদের ভার্চুয়াল মিটিং হয়। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জাতীয় সরকার ও নতুন সংবিধানের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। তারেক রহমান এ প্রস্তাবে সম্মত হননি এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের দিয়ে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সাজেশন দেন। আমরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কথা বলি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে। ‘৭ আগস্ট ভোরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বাসায় আমরা ওনার সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার ও উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে আলোচনা করি। উপদেষ্টা পরিষদ শপথ নেয়ার আগে তারেক রহমানের সঙ্গে আরেকটি মিটিংয়ে প্রস্তাবিত উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ নিয়ে আলোচনা/পর্যালোচনা হয়,’ যোগ করেন এনসিপির আহŸায়ক। শিবির নিয়ে নাহিদ ইসলাম লিখেন, শিবির নেতা সাদিক কায়েম স¤প্রতি একটা টকশোতে বলেছেন ছাত্রশক্তির গঠনপ্রক্রিয়ায় শিবির যুক্ত ছিল, শিবিরের ইনস্ট্রাকশনে আমরা কাজ করতাম। এটা মিথ্যাচার। ‘গুরুবার আড্ডা’ পাঠচক্রের সঙ্গে জড়িত একটা অংশ এবং ঢাবি ছাত্র অধিকার থেকে পদত্যাগ করা একটা অংশ মিলে ছাত্রশক্তি গঠিত হয়। সঙ্গে জাবির একটা স্টাডি সার্কেলও যুক্ত হয়। একটা নতুন ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুবার আড্ডা পাঠচক্রে দীর্ঘসময় ধরে কাজ করা হয়েছে। আমরা ক্যাম্পাসে আট বছর রাজনীতি করছি। ফলে প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সব সংগঠন ও নেতৃত্বকে আমরা চিনতাম এবং সব পক্ষের সঙ্গেই আমাদের যোগাযোগ ও সম্পর্ক ছিল। সেই কারণে ঢাবি শিবিরের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল। যোগাযোগ, সম্পর্ক বা কখনো সহযোগিতা করা মানে এই না যে তারা আমাদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল। তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয়ত, সাদিক কায়েম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সমন্বয়ক ছিল না। কিন্তু ৫ আগস্ট থেকে এই পরিচয় তিনি ব্যবহার করেছেন। অভ্যুত্থানে শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকার কারণে সাদিক কায়েমকে প্রেস ব্রিফিংয়ে বসার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সাদিক কায়েমরা অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ঢালাও প্রচারণা করেছে এই অভ্যুত্থান ঢাবি শিবিরই নেতৃত্ব দিয়েছে, আমরা সামনে শুধু পোস্টার ছিলাম। অভ্যুত্থানে শিবিরের ভ‚মিকা কেউ অস্বীকার করে নাই। কিন্তু এই অভ্যুত্থান শিবিরের একক নয়, শিবিরের ইনস্ট্রাকশন বা ডিরেকশনও হয় নাই। আমরা সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেই সিদ্ধান্ত নিতাম। আর কারা ক্ষমতার ভাগ বাঁটোয়ারা করতে চাইছে, গোষ্ঠী স্বার্থ রক্ষা করতে চাইছে সে বিষয়ে অন্যদিন বলব।
স্ট্যাটাসে জুলকারনাইন সায়েরের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনে নাহিদ লিখেন, ২ আগস্ট, ২০২৪ রাতে জুলকারনাইন সায়েররা একটা আর্মি ক্যু করে সামরিক বাহিনীর এক অংশের হাতে ক্ষমতা দিতে চেয়েছিলেন। এ উদ্দেশ্য কথিত সেইফ হাউসে থাকা ছাত্র সমন্বয়কদের চাপ প্রয়োগ করা হয়, থ্রেইট করা হয় যাতে সে রাতে ফেসবুকে তারা সরকার পতনের একদফা ঘোষণা করে আর আমাদের সঙ্গে যাতে আর কোনো যোগাযোগ না রাখে। রিফাতদের বিভিন্ন লেখায় এ বিষয়ে বলা হয়েছে। আমাদের বক্তব্য ছিল একদফার ঘোষণা মাঠ থেকে জনগণের মধ্য থেকে দিতে হবে। আর যারা এভাবে চাপ প্রয়োগ করছে তাদের উদ্দেশ্য সন্দেহজনক। আমাদের ভেতর প্রথম থেকে এটা স্পষ্ট ছিল, ক্ষমতা কোনোভাবে সেনাবাহিনী বা সেনাবাহিনী সমর্থিত কোনো গ্রæপের কাছে দেয়া যাবে না। এতে আরেকটা এক-এগারো হবে এবং আওয়ামী লীগ ফিরে আসার সুযোগ তৈরি হবে। এছাড়া আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটাকে জনগণের স্বতঃস্ফ‚র্ত গণঅভ্যুত্থান হিসেবে সফল করতে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সামনে এগোতে হবে। ৫ আগস্ট থেকে আমরা এ অবস্থান ব্যক্ত করে গিয়েছি। এনসিপির আহŸায়ক বলেন, সায়েরগং ৫ আগস্টের পর বারবার চেষ্টা করেছে আমাদের বিরুদ্ধে পাল্টা নেতৃত্ব দাঁড় করাতে। সে ক্ষেত্রে সাদিক কায়েমদের ব্যবহার করেছে এবং তারা ব্যবহৃতও হয়েছে। সায়ের গংদের এ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কল রেকর্ড ফাঁস, সার্ভাইলেন্স, চরিত্রহনন, অপপ্রচার, প্রোপাগান্ডা হেন কোনো কাজ নাই হচ্ছে না। বাংলাদেশে সিটিং মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে যত অপপ্রচার হচ্ছে এ দেশের ইতিহাসে এ রকম কখনো হয়েছে কি না জানা নাই। কিন্তু মিথ্যার ওপর দিয়ে বেশিদিন টিকা যায় না। এরাও টিকবে না।
এ বিষয়ে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জুলাই সনদ এখনো স্বাক্ষরিত হয়নি। কিন্তু সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে সব মৌলিক বিষয়গুলো একত্রিত করে সনদ হয়েছে। আমরা বিভিন্ন মতামত এবং ভিন্নমতসহ সেখানে একমত হয়েছি। আশা করি, সবাই ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়ায় একমত থাকবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য আমাদের শক্তি হবে। তিনি বলেন, জুলাই সনদের খসড়া সব রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়েছিল। যে সমস্ত সুপারিশগুলো ঐকমত্যের ভিত্তিতে সবাই গ্রহণ করেছে, সেই সুপারিশগুলো একত্রিত করে জুলাই সনদ প্রণীত হবে। জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছার ওপর কোনো আইন নেই। এখানে সবাই একত্রিত হয়ে যে সনদ তৈরি হবে তা আইনের ঊর্ধ্বে। তবে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, আমরা মনে করি জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রতিশ্রæতির ওপর নির্ভর করলে হবে না। আইনি ভিত্তি না থাকলে সনদ মূল্যহীন হয়ে পড়বে। সেজন্য আমরা কমিশন ও সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ মামলা করবো। আইনি ভিত্তি ছাড়া এই সনদে স্বাক্ষর করবে না জামায়াতে ইসলামী। তিনি বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না হলে এতদিনের বৈঠক খাওয়া-দাওয়া, আর আলাপ-আলোচনা ছাড়া আর কিছুই নয়। অনেকে বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে আইনি ভিত্তি দেয়া সম্ভব নয়। এটি ঠিক নয়-কারণ তিনটি পদ্ধতিতে দেয়া যায়। এক লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক, গণভোট ও রেফারেন্ডাম।
এ বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহŸায়ক জাভেদ রাসিন বলেন, শুরু থেকেই বলছি, দু’টি বিষয় স্পষ্ট করতে হবে, মৌলিক সংস্কার কী হবে, দ্বিতীয়ত, এই সংস্কার কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। কিন্তু পদ্ধতিগত আলোচনা না করেই আমাদের হাতে খসড়া ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। আমরা এই খসড়ার তীব্র বিরোধিতা করি। তিনি বলেন, এই খসড়ার সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি, বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াও স্পষ্ট নয়। যদি একতরফাভাবে চাপিয়ে দেয়া হয়, তাহলে আমরা এই সনদে স্বাক্ষর করবো না। তবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, নির্বাচিত সরকার এসে যে এই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবে, এর গ্যারান্টি কে দিবে? পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের ওপরই যদি ছেড়ে দেয়া হয় সংস্কার বাস্তবায়ন, তাহলে এতদিনের শ্রম বৃথা। শুধু দলিল আকারে দিলেই হবে না, এর আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন স্পষ্ট করতে হবে। আর বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আমরা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সফল হয়েছি। কমিশনের আলোচনায় ১৯টি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য হয়েছে। আগামী ৫ থেকে ৭ দিনের ভেতর তারা (কমিশন) একটি চ‚ড়ান্ত খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোকে দেবেন। এরপর হয়তো বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আবার দু’একদিন আলোচনা হতে পারে। এখন বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়েই সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে।
নির্বাচিত সংসদের হাতে সংস্কার কার্যক্রম ছেড়ে দেব না : চলমান রাজনৈতিক সংস্কার কার্যক্রম পরবর্তী নির্বাচিত সংসদের হাতে ছেড়ে না দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সময় থেকেই তা কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহŸায়ক নাহিদ ইসলাম। গতকাল শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে দলীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। আজ রোববার বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিতব্য ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। নাহিদ ইসলাম বলেন, নতুন বাংলাদেশের ইশতেহারে আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার রূপরেখা তুলে ধরা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা জুলাই পদযাত্রা করেছি। এতে অংশগ্রহণকারী ও সহযোগীদের ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেন, জুলাই পদযাত্রার মূল দাবি ছিল বিচার সংস্কার ও নতুন সংবিধান। আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র এবং জুলাই সনদের কথা বলেছি। শুনেছি, আগামী ৫ আগস্ট সব পক্ষকে নিয়ে জুলাই সনদ প্রকাশ করা হবে এ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। নাহিদ বলেন, জুলাই সনদের অনেক বিষয়ে ঐকমত্য হলেও কিছু বিষয়ে ভিন্নমত (নোট অব ডিসেন্ট) রয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে বা বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে আমাদের এখনও কিছু জানানো হয়নি। বাস্তবায়ন পদ্ধতির বিষয়টি স্পষ্ট হলেই সব দল সনদে স্বাক্ষর করবে। তিনি আরও বলেন, আমরা বলেছি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে এবং সেই সনদের ভিত্তিতেই আগামী নির্বাচন এবং সংসদ বা গণপরিষদ গঠন হতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সময় থেকেই জুলাই সনদ কার্যকর করতে হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ