পাবনা প্রতিনিধি
পাবনার ঈশ্বরদীতে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা সামছুদ্দিন মালিথার নেতৃত্বে চাঁদাবাজি, অবৈধভাবে জমিদখল ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে। বিএনপির নাম ভাঙিয়ে তিনি ও তার সহযোগী জাকারিয়া পিন্টু ও মেহেদী হাসান বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘর-বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ক্র্যাব কার্যালয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং সব অঙ্গ সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। সংবাদ সম্মেলনে ঈশ্বরদী উপজেলা যুবদলের সংগঠক ও ঈশ্বরদী সরকারী কলেজ শাখার সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. জুবায়ের হোসেন বাপ্পি লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। লিখিত বক্তব্যে জুবায়ের হোসেন বাপ্পি বলেন, পাবনার ঈশ্বরদীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নাম ভাঙিয়ে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু, তার ভাই ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সচিব মেহেদী হাসান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সামছুদ্দিন আহমেদ মালিথা ঈশ্বরদী উপজেলা ও আশপাশের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার চেষ্টা করছেন। এসব ঘটনায় দল থেকে তাদেরকে বহিষ্কার করা হলেও তাদের বেপরোয়া কর্মকাণ্ড থামছেই না। ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নাম ভাঙিয়ে দল থেকে বহিষ্কৃত এসব সন্ত্রাসীরা চাঁদাবাজি, জমি দখলবাজি ও মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। ক্যাডার বাহিনী দিয়ে সরকারি খাস জমি, ব্যক্তিগত জমি, মসজিদের জমি দখল, এক জায়গার ইজারা নিয়ে পৌর এলাকার দশ জায়গায় সরকার নির্ধারিত টাকার চেয়ে বেশি চাঁদা আদায়, বালুমহাল জবর-দখলের চেষ্টা, দিনে-দুপুরে গুলি ছোড়াসহ নানান ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছেন। তিনি বলেন, এই ক্যাডার বাহিনীর কারণে আজ ঈশ্বরদী উপজেলার অনেক গ্রামের মানুষ বাড়ি ছাড়া, সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়েছে। এই চক্রের জাকারিয়া পিন্টু ও তার ভাই মেহেদির বিরুদ্ধে ৬৭টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে ১৬টি হত্যা মামলা। এছাড়া অপহরণ, ধর্ষণ, বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, অস্ত্র, ডাকাতি, সন্ত্রাসী হামলা ও চাঁদাবাজির মামলা তো আছেই। নিজ ভাইকে হত্যাসহ অভিযুক্ত এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে থাকা হত্যা মামলাগুলোর অধিকাংশই বিএনপি নেতাকর্মী হত্যার। এসব মামলার বেশিরভাগ পাবনার ঈশ্বরদী ও লালপুর থানায় নথিভুক্ত। এছাড়াও গত বছরের ৫ আগ?স্টের পর থেকে পিন্টু-মেহেদিরা আরও বেপরোয়া হলেও সামছুদ্দিন মালিথা গংদের চাপে অসংখ্য চাঁদাবা?জি, ভাংচুর, জ?মি দখ?লের অভি?যোগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জমা দিতে পারছেন না ভুক্তভোগীরা। বাপ্পির দাবি, এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় গত ১৯ জুলাই ভোরে প্রায় ১০-১২ জন ব্যক্তি দেশি-বিদেশি অস্ত্রসহ তার বাড়িতে হামলা করেন। এসময় তারা তাকে হত্যার হুমকি দেন। এসব ঘটনায় স্থানীয়ভাবে আইনি সহায়তা না পেয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিজের নিরাপত্তা চান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- দাশুড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ সুলভ মালিথা, দাশুড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি নাজমুল হোসেন মুকুল, ঈশ্বরদী উপজেলা তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহম্মেদ পলাশ, দাশুড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন, দাশুড়িয়া ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, দাশুড়িয়া ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব বিপুল হোসেন মোল্লা, দাশুড়িয়া ইউনিয়ন স্বচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম লাকি, দাশুড়িয়া ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক দুলাল মন্ডল, দাশুড়িয়া ইউনিয়ন কৃষকদলের আহ্বায়ক মো. মহিদুল ইসলাম, দাশুড়িয়া ইউনিয়ন কৃষকদলের সদস্য সচিব মো. শহিদুল ইসলাম শহিদ মন্ডল, ঈশ্বরদী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হেদায়েতুল ইসলাম অনিক, ঈশ্বরদী পৌর যুবদল নেতা রতন হোসেন, পৌর ছাত্রদল নেতা রাফি হোসেন, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আশিক হোসেন, ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসির হোসেন, পাবনা জেলা ছাত্রদল সদস্য সম্রাট হোসেন, ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদল সদস্য খালেদ বিন পার্থিব প্রমুখ।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
