ঢাকা , শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫ , ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ তৈরি করব মানসম্মত সেবা দিতে পারছে না সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো বাংলাদেশের ওপর নিবিড় নজর রাখছি : জয়শঙ্কর ‘চূড়ান্ত কূটনৈতিক বিজয়’ বলছেন প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঐতিহাসিক চুক্তি সরকারের কূটনৈতিক বিজয় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ১৩৮ গাজীপুরে শাপলা তুলতে গিয়ে বিলের পানিতে ডুবে ২ যুবকের মৃত্যু পাবনায় বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগ চলতি বছর করোনায় আক্রান্ত ৭২০ জন মৃত্যু আরও এক ডোপ টেস্টে পজিটিভ হলে রাকসু নির্বাচনের প্রার্থিতা বাতিল গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় আরও একটি মামলা যশোরে বিএনপি কর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারি চাল ছিনতাইয়ের অভিযোগ হাজারীবাগে বৃদ্ধা নারীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা, থানায় স্বামীর আত্মসমর্পণ বরিশালে বাড়িতে হামলা করে যুবককে হত্যা কিছুদিনের মধ্যেই সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা লোকসানে বন্ধ হচ্ছে পোলট্রি খাতের হাজার হাজার প্রান্তিক ক্ষুদ্র খামার পোরশায় ধর্ষণ মামলার আসামি আবুল হাসান গ্রেফতার কোনো দলের প্রতি সেনাবাহিনীর আলাদা নজর নেই : সেনা সদর সর্দি-জ্বরে জর্জরিত দেশ
দূর হচ্ছে অনিশ্চয়তা

কিছুদিনের মধ্যেই সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

  • আপলোড সময় : ০২-০৮-২০২৫ ১১:৫১:৩১ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০২-০৮-২০২৫ ১১:৫১:৩১ পূর্বাহ্ন
কিছুদিনের মধ্যেই সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

বহুল প্রত্যাশিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠি নানা সন্দেহ-সংশয় প্রকাশ করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরীর মতে, জনগণের মনে এখনো প্রশ্ন নির্বাচন হবে কি না। কারও কারও ধারণা, এখনো নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই নাজুক। নির্বাচন করার ব্যাপারে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিচার বিভাগ কতটা সক্রিয়? পুলিশকে এখনো সেভাবে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে এখনো ৮ মাসের মতো সময় রয়েছে। নির্বাচনের দৃশ্যমান একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তা না হলে জনগণের মনে আশঙ্কা থেকেই যাবে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, কিছুদিনের মধ্যেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের যে সময়ের কথা বলেছেন, তার থেকে একটা দিনও দেরি হবে না।
এদিকে, বৃহস্পতিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা আলোচনা শেষ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচন নিয়ে সামনে আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। সংসদ নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটেছে বলেই তাদের ধারণা। ড. আসিফ নজরুল ও শফিকুল ইসলামের বক্তব্যের পর নির্বাচন যথারীতি ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এমনটাই মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন।
জানা গেছে, গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূতি উপলক্ষে আগামী ৫ আগস্ট জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা। যদি ৫ আগস্ট না দেন তাহলে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর উপলক্ষে তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। সেই ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা সংসদ নির্বাচন নিয়ে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখতে পারেন। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানাতে পারেন।
এর আগে গত ৯ জুলাই আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বরের মধ্যে সব সম্প্রতি শেষ করার নির্দেশনা দেন। এরও আগে গত ২৬ জুন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন ওয়ান টু ওয়ান বৈঠক করেন। এরপর গত ১ জুলাই সিইসি  বলেছিলেন, সংসদ নির্বাচনের তারিখ বা সম্ভাব্য সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিল-এ দুটি ‘টাইমফ্রেম’ বা সময়সীমা সামনে রেখে নির্বাচনের প্রস্থতি নিচ্ছে বলে ইসি থেকে জানা গিয়েছিল। ইসি বলেছিল, স্থানীয় সরকার নয়, সংসদ নির্বাচন ঘিরে তারা পুরোদমে প্রস্ততি নিচ্ছে। সবশেষ গত বুধবার ইসি ভোটের ভিত্তিতে ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের সুপারিশ জমা দিয়েছে বিশেষায়িত কারিগরি কমিটি।
যদিও সরকার গঠনের পর প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন করার কথা বলেছিলেন। সেখান থেকে সরে এসে জাপানে প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, ২০২৬ সালের এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন হবে। এরপর লন্ডন বৈঠকের পর বলেছেন, বিচার ও সংস্কারের অগ্রগতি হলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করা সম্ভব।
গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, কিছুদিনের মধ্যেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনের সময় তো, জাস্ট ওয়েট করেন।
তিনি জানান, জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য সব ধরনের প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে। সবাই ভোট দিতে পারবেন। ভোটাধিকারের কথা বলছেন, এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ক্লাসে যখন যেতাম। জিজ্ঞেস করতাম ছাত্রদের-তোমাদের মধ্যে কে কে ভোট দিয়েছ? তারা হাসাহাসি শুরু করত। কেউ কেউ বলত স্যার ভোট দিয়েছি, তবে দশ বারটা। যা হোক আমাদের সেই দুঃখ ঘুচবে। আমরা ১৮ বছর ধরে ভোট দিতে পারিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই-এর সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করি। ২০০৮-এর নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ আছে। আপনারা যারা সাংবাদিকরা আছেন এ নিয়ে কাজ করেন, অনেক ভয়াবহ তথ্য পাবেন ২০০৮-এর নির্বাচন নিয়ে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করেছে। বিশেষ করে আইনি সংস্কার, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও ডিজিটালাইজেশন। এ সরকারের সংস্কার কার্যক্রম পরবর্তী সরকার এসে অবশ্যই ধরে রাখবে বলে মনে করেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত সংলাপে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, আগামী চার পাঁচটা দিন বাংলাদেশের রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য একটি ক্রুশিয়াল সময়। জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে কাজ হচ্ছে, জুলাই সনদ নিয়ে কাজ হচ্ছে। ৫ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি। সেটা সামনে রেখে কাজ চলছে।
তিনি বলেন, আগামী পাঁচ ছয়টা দিনে বুঝব যে আমরা সামনে কোথায় যাচ্ছি। কিন্তু একটি বিষয় নিশ্চিত থাকবেন, নির্বাচন দেরি হবে না। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে যে সময়ে বলেছেন, তার থেকে একটা দিনও দেরি হবে না।
নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রেস সচিব আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রথমে বলেছিলেন এপ্রিলে হবে। পরে লন্ডনে বলা হয়েছে যদি অনেক সংস্কার হয়, কাজগুলো এগিয়ে যায় সেক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারিতে হবে। আমরা সেই জায়গায় এখনো আছি। এটা একটা দিনও দেরি হবে না। আমরা আশা করি এই নির্বাচন খুবই উৎসবমুখর পরিবেশে ভালো নির্বাচন হবে। আমাদের একেবারে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে ভায়োলেন্সকে একেবারে জিরোতে নামিয়ে আনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, মৌলিক বিষয়ে সংস্কার করে দ্রুতই নির্বাচনের পথে সরকার এগোবে। গত বৃহস্পতিবার প্রেসক্লাবের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস যে, এত সমস্যার পরেও ১২টা মৌলিক বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। বাকিগুলোতে ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা হচ্ছে। অনেক বিষয় আছে যেগুলো আমরাও ঠিক বুঝি না যে তারা কেন সেগুলো করতে চান। লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের বৈঠকের মধ্য দিয়ে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে নির্বাচনের ধারণা পাওয়া গেছে। আমার মনে হয় সেটা হলেই বোধহয় অনেক সমস্যা, অনেক দ্বিধা কাটিয়ে আমরা একটা জায়গায় পৌঁছাতে পারব।
নির্বাচন দিতে দেরি করা অধ্যাপক ইউনূসের সরকারের জন্য সঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির শুরুতে যে ডেডলাইন (সময়সীমা), এর পরে হলে আপনি যে সম্মান নিয়ে এসেছেন, সমগ্র বিশ্বে আপনার যে সম্মান, সেই সম্মান ক্ষুণ্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স