
একনেকে ২৮৪০ কোটির প্রকল্প অনুমোদন
পাল্টে যাচ্ছে ঢাবির চেহারা
- আপলোড সময় : ২৮-০৭-২০২৫ ১১:১৮:৫৭ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৮-০৭-২০২৫ ১১:১৮:৫৭ পূর্বাহ্ন


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ বদলে দিতে দুই হাজার ৮৪০ কোটি ৩৯ লাখ টাকার একটি বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার। গতকাল রোববার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৮ হাজার ১৪৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ১২টি প্রকল্প অনুমোদন করে। এর মধ্যে অন্যতম ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প’।
২০২৫ সালের জুলাই থেকে ২০৩০ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। পরিকল্পনা কমিশনের উপস্থাপন অনুযায়ী, প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক ভবন, আবাসন, প্রশাসনিক কাঠামো ও ক্রীড়া অবকাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হবে। প্রস্তাবিত ৪১টি বহুতল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে পুরো ক্যাম্পাসে নতুন মাত্রা যোগ করবে এই প্রকল্প। বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি একাডেমিক ভবন নতুনভাবে নির্মিত হবে। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পশ্চিম ও উত্তর পাশে, আইএসআরটি ও ফার্মেসি বিভাগের মধ্যে, উদ্ভিদবিজ্ঞান ও চারুকলা অনুষদের নিজ নিজ স্থানে, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ও প্রেস বিল্ডিং এলাকায় একাধিক তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব ভবন একাডেমিক পরিবেশে প্রযুক্তি ও আধুনিকতা যুক্ত করবে। আবাসিক সংকট নিরসনে ছাত্রদের জন্য ১০টি এবং ছাত্রীদের জন্য ছয়টি নতুন হল নির্মাণ করা হবে। শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও ড. কুদরাত-ই-খুদা হোস্টেল এলাকায় নতুন সম্প্রসারণ ভবন নির্মাণ হবে। ছাত্রীদের জন্য শাহনেওয়াজ, শামসুন নাহার, কুয়েত মৈত্রী হলসহ আরও কয়েকটি স্থানে ১০ তলা থেকে ১৫ তলা পর্যন্ত বিশিষ্ট ভবন গড়ে তোলা হবে। এছাড়া প্রতিটি আবাসিক হলে শিক্ষকদের জন্য ১১ তলা বিশিষ্ট ফ্ল্যাট সমন্বিত শিক্ষক কোয়ার্টার নির্মাণ করা হবে। মাস্টার দ্য সূর্যসেন ও মুহসীন হলের প্রভোস্ট বাংলো ভেঙে দুই তলা বিশিষ্ট উপ-উপাচার্যের বাংলো তৈরি হবে। দক্ষিণ ফুলার রোডে শিক্ষকদের জন্য ১৫ তলা ভবনে ১১২টি ফ্ল্যাট থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামোতেও আসছে আধুনিকায়নের ছোঁয়া। পুরনো ডাকসু ভবন ভেঙে নির্মিত হবে ১২ তলা মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্স। প্রশাসনিক ভবনের একাংশ ভেঙে নির্মিত হবে ২০ তলা ও চারতলা দুটি আলাদা ভবন। বিদ্যমান জিমনেসিয়ামের প্রি-ইঞ্জিনিয়ারড ভবনের অসমাপ্ত কাজও শেষ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়াঙ্গনও উন্নয়নের আওতায় আসছে। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আধুনিক গ্যালারি, বাস পার্কিং, পরিচালকের অফিস ও খেলোয়াড়দের ডরমিটরি নির্মাণ করা হবে। মাঠের আয়তন ১০ হাজার ৯০০ বর্গমিটার, গ্যালারি ২ হাজার ৪০ বর্গমিটার, বাস পার্কিং ২ হাজার ৯০০ বর্গমিটার এবং পরিচালকের অফিস ও ডরমিটরি ৪ হাজার ৩২ বর্গমিটার আয়তনের হবে বলে জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার পরিবেশ ও স্থাপত্যেও থাকবে ব্যাপক পরিবর্তন। শিববাড়ী এলাকার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পুরনো ভবন ভেঙে সেখানে নির্মিত হবে ছয়তলা শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টার। মসজিদুল জামিয়া ভবন ভেঙে চারতলা বিশিষ্ট কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। পরিবেশ উন্নয়ন ও স্থায়ী অবকাঠামোর অংশ হিসেবে নির্মাণ করা হবে ২৪ হাজার ৮২০ মিটার দীর্ঘ ড্রেনেজ সিস্টেম, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিক সিস্টেম ও ওয়েস্ট বিন স্থাপন, রোড নেটওয়ার্ক ও সার্ভিস লাইন। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ও জগন্নাথ হলে বসানো হবে পাবলিক টয়লেট। জলাধার সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনেও থাকবে আলাদা বরাদ্দ।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ