ঢাকা , শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫ , ১০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে ফ্রান্স, ইসরায়েলের তীব্র ক্ষোভ ভারতে স্কুল ভবন ধসে প্রাণ গেল ৭ শিশুর ইরানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফায় যুদ্ধের প্রস্তুতি ইসরায়েলের ভারতের কোচ হওয়ার স্বপ্ন ভাঙল জাভির সান্তোস ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেন নেইমার! বার্নাব্যু ছাড়তে নারাজ এনদ্রিক আট বছর পর টেস্টে ৫ উইকেট শিকার স্টোকসের আট বছর পর টেস্টে ৫ উইকেট শিকার স্টোকসের পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি দলে ফিরলেন শাহিন আফ্রিদি শেষ ম্যাচে জয় পাওয়ার পরেও উইকেটের উপর ক্ষোভ সালমানের সাইফউদ্দিনের পারফরম্যান্সে খুশি লিটন বিশ্বকাপই লিটনের মূল লক্ষ্য খায়রুল হকের হঠকারী রায়ে গুম, খুনের লাইসেন্স পেয়েছিল রাজনৈতিক মাফিয়ারা খায়রুল হককে গ্রেফতারে অন্তর্বর্তী সরকারকে সাধুবাদ জানালেন ফখরুল সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক গ্রেফতার অন্তর্বর্তী সরকারের শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে সন্দেহ রয়েছে-নুর দুই শর্তে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা যাবে-আসিফ নজরুল সারা বছর মৃত ভোটার বাদ দেওয়ার ক্ষমতা চান ইসি কর্মকর্তারা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ মাইলস্টোনে হেল্প ডেস্ক স্থাপন, নিখোঁজদের তথ্য সংগ্রহ চলছে

৭৫ শতাংশ অর্থ পাচার বাণিজ্যের আড়ালে

  • আপলোড সময় : ২৪-০৭-২০২৫ ০৫:০৪:২৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৪-০৭-২০২৫ ০৫:০৪:২৩ অপরাহ্ন
৭৫ শতাংশ অর্থ পাচার বাণিজ্যের আড়ালে
দেশ থেকে পাচার হওয়া মোট অর্থের প্রায় ৭৫ শতাংশই পাচার হয় বাণিজ্যর মাধ্যমে। আমদানি ও রপ্তানির সময় মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে এই বিপুল অর্থ দেশ থেকে পাচার হয়। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থাপিত গবেষণাপত্রে এসব তথ্য জানানো হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে হিসাবটি করা হয়। গবেষণাপত্রে আরো বলা হয়, ২০১৫ সালের অর্থপাচার প্রতিরোধ আইন সংশোধনের পর মোট ৯৫টি টাকা পাচারের ঘটনা নিয়ে কাজ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এর সবই করা হয়েছে বাণিজ্যের মাধ্যমে, যার আর্থিক পরিমাণ ছিল তিন হাজার ২০১ কোটি টাকা। বিআইবিএমের তিন শিক্ষক, বেসরকারি ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এক কর্মকর্তা মিলে ৩৭টি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের প্রশ্নোত্তরের তথ্য দিয়ে গবেষণাপত্রটি তৈরি করা হয়। গবেষণার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের শিক্ষক আহসান হাবিব। আহসান হাবিব বলেন, অর্থ পাচারে অপরাধীরা বাণিজ্য চ্যানেলটি ব্যবহার করে, তার পেছনে কয়েকটি বড় কারণ রয়েছে। প্রথমত, বাণিজ্যর মাধ্যমে বড় পরিমাণের অর্থ নেওয়া যায়। অন্য যেকোনো মাধ্যমের চেয়ে বাণিজ্যের মাধ্যমে অনেক বেশি পরিমাণ অর্থ লেনদেন করা সম্ভব হয়। ফলে এই মাধ্যমে বড় অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাঠানোর আগ্রহ বেশি থাকে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার বলেন, কম দাম দেখিয়ে আমদানি ও রপ্তানির মাধ্যমেও অর্থ পাচার হয়; এটাও বাণিজ্য অর্থায়নের মধ্যে পড়ে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাণিজ্য এমনভাবে করা হয় যে বাইরের দৃষ্টিতে সব ঠিকঠাক মনে হয়। তবে ভেতরে অন্য কিছু লুকানো থাকে। অনেক সময় চোখে ধুলা দেওয়ার মতো অবস্থা হয়। বলা হয় এক কথা, আসলে ভেতরে অন্য কিছু চলছে। তাই ভালোভাবে দেখা জরুরি। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় আহসান হাবিব বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমদানি ও রপ্তানির সময় মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৮.২৭ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে, যা দেশের জিডিপির প্রায় ২ শতাংশ। এ সময় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরের তথ্য-উপাত্তও এই গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে বলে তিনি জানান। গবেষণার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলা হয়, ২০২৪ সালে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) তথ্য মতে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বাণিজ্যের আড়ালে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে, যা জিডিপির ৩.৪ শতাংশ। এই অর্থপাচার মূলত বস্ত্র, ভোগ্যপণ্য ও জ্বালানি পণ্য আমদানিতে হয়। গবেষণায় প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়, দেশে বাণিজ্যভিত্তিক অর্থপাচার মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সুরক্ষাকাঠামোতে দুর্বলতা আছে। জরিপে অংশ নেওয়া শতভাগ ব্যাংক জানায়, নিষেধাজ্ঞা তালিকা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া, অর্থাৎ আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা যাচাইয়ের সক্ষমতা রয়েছে। ৯৫ শতাংশ ব্যাংকের রয়েছে সনাতনি তালিকা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া। ১০০ শতাংশ ব্যাংকের লেনদেনের নিজস্ব তথ্যভাণ্ডার রয়েছে। আমদানি-রপ্তানি মূল্য যাচাইয়ের তথ্যভাণ্ডারে সুবিধা নিতে পারে ৫০ শতাংশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার বলেন, যারা বিদেশে টাকা পাচার করেন, তারা কৌশলে কাজটি করেন। শুধু নিয়ম মেনে চললেই তাদের ধরা যাবে না। বুদ্ধি খাটাতে হয়। তাদের ধরতে খুব সতর্ক থাকতে হয়। গোলটেবিল বৈঠকে আরো বক্তব্য দেন বিআইবিএমের এ কে গঙ্গোপাধ্যায় চেয়ার অধ্যাপক ফারুক এম আহমেদ, বিআইবিএমের মহাপরিচালক আবদুল হাকিম, বিআইবিএমের শিক্ষক আলী হোসেইন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক এ কে এম রেজাউল করিম, বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইউ) পরিচালক মোস্তাকুর রহমান প্রমুখ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স